বিয়ের ১৬ বছর পর একসঙ্গে এইচএসসি পাস করলেন স্বামী-স্ত্রী

কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৩: ২০
আপডেট : ১৬ অক্টোবর ২০২৪, ১৪: ২৪

মো. বদিউল আলম নাঈমের বয়স ৪৩ বছর। তাঁর স্ত্রী শারমীন আক্তারের বয়স ৩৩ বছর। ২০০৮ সালে তাঁদের বিয়ে হয়। সংসারে আছে দুই মেয়ে ও এক ছেলেসন্তান। বদিউল আলম ঠিকাদারি করেন। গতকাল মঙ্গলবার প্রকাশিত এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফলে কৃতকার্য হয়েছেন তাঁরা। বদিউল আলম পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ২৯ এবং শারমীন আক্তার পেয়েছেন জিপিএ ৪ দশমিক ৫০। এই বয়সে ভালো ফলাফল করায় তাঁদের প্রশংসা করছেন স্থানীয়রা। 

বদিউল আলম ও শারমীন আক্তার দম্পতি চলতি বছর বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড ঢাকার অধীনে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার লক্ষ্মীপুর টেকনিক্যাল অ্যান্ড বিএম কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দেন। ২০২২ সালে নরসিংদী জেলার বেলাবো উপজেলার বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসা থেকে দাখিল পাস করেন এই দম্পতি। 

বিয়ের আগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিতে না পারলেও কয়েকবার পড়াশোনা চালিয়ে যেতে চেষ্টা করেছেন বদিউল আলম ও শারমীন আক্তার। কিন্তু ব্যবসা ও সাংসারিক চাপে তা করতে পারেননি তাঁরা। পরে নিজেদের চেষ্টায় ও স্বজনদের উৎসাহে পড়াশোনা করে সফলতা পেলেন এই দম্পতি। 

মো. বদিউল আলম নাঈম কুলিয়ারচর উপজেলার ছয়সূতী ইউনিয়নের দ্বাড়িয়াকান্দি গ্রামের মো. কনু মিয়া ও মোছা সাজেদা দম্পতির ছেলে। তিনি একজন ঠিকাদার। ১৯৯৭ সালে এসএসসি পরীক্ষায় তাঁর অংশগ্রহণ করার কথা থাকলেও আর পরীক্ষা দেওয়া হয়নি। 

পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা ছিল না বদিউল আলম ও শারমীন আক্তারের। ২০২০ সালে তৎকালীন কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা ও এই দম্পতির বড় মেয়ের উৎসাহে নতুন করে পড়াশোনা করার আগ্রহ জাগে তাঁদের। ওই বছর উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিন্নাবাইদ দারুল উলুম দাখিল মাদ্রাসায় ভর্তি হন দুজনে। 

গতকাল মঙ্গলবার এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে উত্তীর্ণ হওয়ার খবর পেয়ে বদিউল আলম ও শারমীন আক্তারের পরিবারে আনন্দের বন্যা বইছে। তাঁরা যেমন খুশি হয়েছেন, তেমনি তাঁদের ছেলে-মেয়েরাও আনন্দিত। 

শারমীন আক্তার কুমিল্লার হোমনা উপজেলার মঙ্গলকান্দি গ্রামের মো. ইসমাইল হোসেন ও মায়া বেগম দম্পতির মেয়ে। ২০০৮ সালে নবম শ্রেণিতে পড়ার সময় বদিউল আলমের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পর ২০১০ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু বড় মেয়ে বুশরা আক্তার বীথি গর্ভে আসায় আর পরীক্ষা দিতে পারেননি তিনি। তখন থেকেই লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায় শারমীন আক্তারের। 

বুশরা আক্তার বীথি এবার স্থানীয় ছয়সূতী ইউনিয়ন হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ১০ম শ্রেণির ছাত্রী। মেজো সন্তান একমাত্র ছেলে রেদোয়ান আলম সিয়াম একই স্কুলে ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী। ছোট মেয়ে তাসনীম (৫) এখনো স্কুলে ভর্তি হয়নি। 

স্থানীয়রা বলেন, এই বয়সে এসেও বদিউল আলম ও শারমীন আক্তার দম্পতির পড়াশোনার প্রতি যে আগ্রহ আছে তা প্রশংসনীয়। তাঁদের ভালো ফলাফলে সবাই খুশি। স্বামী-স্ত্রী উচ্চশিক্ষিত হোক এই কামনা করি।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত