এস এম নূর মোহাম্মদ, ঢাকা
স্ত্রী সালমা বেগমকে হত্যার মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার এনামুল হককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। তাঁকে পাঠানো হয়েছিল কনডেম সেলে। দীর্ঘ ছয় বছর সেখানে শুধু মৃত্যুর প্রহর গুনেছেন তিনি। অবশেষে হাইকোর্ট তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে দায়রা জজের সেই রায়কে গুরুতর বেআইনি কাজ বলেও পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, সেটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল না। পরিস্থিতির কারণে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে আসামি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। যা ৩০২ ধারায় নয়, ৩০৪ ধারার অপরাধ। ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা দায়রা জজের গুরুতর বেআইনি কাজ হয়েছে। এরই মধ্যে আসামির সাজা খাটা শেষ হওয়ায় অন্য কোনো অভিযোগ না থাকলে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এদিকে গত ২৩ নভেম্বর দেওয়া রায়ের কপি দুই বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে ১২ ডিসেম্বর ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়। এরপর সেখান থেকে ১৪ ডিসেম্বর পাঠানো হয় ডেসপাস শাখায়। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে তা পাঠানোর কথা বিচারিক আদালতে। এরপর তা যাবে সংশ্লিষ্ট কারাগারে। আর কারা কর্তৃপক্ষ রায়ের কাগজ পরীক্ষা করে আসামিকে মুক্তি দেবে। তবে ডেসপাস শাখায় রোববার (২৪ ডিসেম্বর) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এটি এখনো পাঠানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
রায় প্রকাশের এক মাস পরও তা কারাগারে না পৌঁছানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব আদেশ বা রায়ই পাঠানো হয়। এটিও শাখা থেকে পাঠানোর কথা। তবে না পাঠানো হলে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এদিকে ৩৯ পৃষ্ঠার ওই রায় রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্ত্রীকে খুনের কোনো পরিকল্পনা আসামির ছিল না। এটি আকস্মিকভাবে হয়ে গেছে। তাই হাইকোর্ট আসামিকে মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করেনি।’
এরই মধ্যে আসামির সাজা খাটার মেয়াদ পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে ছয় বছর তিনি থেকেছেন কনডেম সেলে। তাই অন্য কোনো অভিযোগ না থাকলে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রায়ের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, প্রসিকিউশন এমনকি আদালত কেউই এর দায় এড়াতে পারে না। সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে। যাতে কারও ভুল বা অসতর্কতার কারণ কাউকে হয়রানির শিকার হতে না হয়।’
রায় এখনো না যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যাতে আদালতের সিদ্ধান্ত আরও দ্রুত পাঠানো যায় সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের উচিত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। কেননা একদিনও অতিরিক্ত কারাবাস কাম্য নয়।’
মামলার নথি থেকে জানা যায়, এনামুল হক দিনমজুর ছিলেন। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। ২৪ বছরের সংসার জীবনে দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক তিনি।
২০১১ সালের ২০ এপ্রিল সস্ত্রীক বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। ওই দিন সন্ধ্যায় ফেরার পথে স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীর গলা চেপে ধরেন। এতে স্ত্রী মারা যান। পরে লাশ মাটিতে পুঁতে রেখে নিজের এলাকা দিনাজপুর পালিয়ে যান এনামুল।
সালমা বেগমের কোনো খোঁজ না পেয়ে ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল থানায় জিডি করা হয়। আর লাশ উদ্ধারের পর ২৫ এপ্রিল হত্যা মামলা করেন তাঁর ভাই সফির উদ্দিন। দুই মাস পর ২৮ জুন গ্রেপ্তার হন এনামুল। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে উদ্ধার করা হয় লাশ মাটিচাপা দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত কোদাল। পরদিন ঘটনার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন তিনি। এরপর তাঁকে পাঠানো হয় কারাগারে। ওই বছরের ৭ অক্টোবর চার্জশিট দেয় পুলিশ।
বিচার শেষে ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রায় দেন ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রায়ে এনামুলকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আর মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় তাঁকে পাঠানো হয় কনডেম সেলে। পরে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য রায়ের নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে।
এরপর কারাগার থেকে ‘জেল আপিল’ করেন এনামুল হক। বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের বেঞ্চে এই বিষয়ে শুনানি হয়। এনামুলের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন নার্গীস আক্তার। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
আদালতে স্বীকারোক্তিতে এনামুল বলেন, স্ত্রী সালমা এক–দুই বছর ধরে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে আসছিলেন। তিনি বলেন, ‘স্বামী হিসেবে আমার যে অধিকার সেটি দিত না। আমার খাবার–দাবারের ব্যাপারে খোঁজখবর নিত না। আমার সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলত না। সকালের খাবার দুপুরে, দুপুরের খাবার রাতে খেতে দিত। আমার সঙ্গে মাঝে–মধ্যেই ঝগড়াঝাঁটি করত।’
ঘটনার দিন এনামুল বড় মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘সন্ধ্যা রাতে অন্ধকারে দুজন হেঁটে বাড়ি যাচ্ছিলাম। এ সময় তাকে বলি, তুই এমন ব্যবহার করিস ক্যান? আমি তোর স্বামী হই, অথচ তুই আমার সঙ্গে মেলামেশা করিস না। আমাকে আমার অধিকার দেইস না। আমার সেবাযত্ন করিস না। খালি ঝগড়া করিস। এটা কি ঠিক কাম! তুই ভালো হবা (হতে) পাইস না? তখন আমার স্ত্রী আমাকে বলে যে, “তোর কত সাধ হইছে আইজকা (আজকে) বাড়িত যাও আগে তারপর তোর সাধ মিটাইম (মেটাব)। বাড়িত যায়া (গিয়ে) এলাকাবাসীকে দিয়া আইজকা তোর হাড্ডি ফাটাইম, তোক বাঁশ ডলা দেইম”।’
এনামুল বলেন, ‘আমার মাথায় রাগ উঠে যায়। আমি রেগে গিয়ে বলি, আইজকা তোক মারি ফেলাইম ডাঙ্গে (পিটিয়ে মেরে ফেলব)। তখন আমার স্ত্রী বলে, “ফেলাও মারি, আইজকা মুই (আমি) তোর হাততে মরিম (মরব), আর না হইলে বাড়িত যায়া তোর হাড্ডি ফাটাইম”। তখন আমার রাগ আরও বেড়ে যায় এবং আমি আমার স্ত্রীর গলা দুই হাত দিয়ে টিপে ধরি। এভাবে প্রায় দশ মিনিট গলা টিপে ধরে যেই ছেড়ে দিয়েছি অমনি সে মাটিতে পড়ে যায়। আমি তখন দেখি যে সালমা মরে গেছে।’
লাশ গোপনের বর্ণনা দিয়ে এনামুল বলেন, ‘ওই সময় ভুট্টা খেতে সালমার লাশ ফেলে রেখে বাড়িতে যাই। একটি কোদাল নিয়ে এসে কলাই খেতে গর্ত করে লাশ মাটিচাপা দেই। আর কোদালটি পাশে বনবাড়ী ভাটাপোড়া জঙ্গলে ছুড়ে ফেলে দেই। আমি হঠাৎ করে রাগে সালমার গলা টিপে ধরেছিলাম। আমি ভাবতেই পারিনি যে আমার স্ত্রী মারা যাবে। আমি জীবনে এই প্রথম ভুল করলাম। আমি অনুতপ্ত। আমি আমার স্ত্রী সালমাকে মেরে ফেলতে চাই নাই। আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবাসতাম। এত বছর সংসার করার পর আমার স্ত্রী এভাবে আমার হাতেই মারা যাবে, আমি ভাবতেই পারছি না। আমি ক্ষমা চাই। আমাকে যে শাস্তি দেওয়া হবে তা মেনে নেব।’
স্ত্রী সালমা বেগমকে হত্যার মামলায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার এনামুল হককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন বিচারিক আদালত। তাঁকে পাঠানো হয়েছিল কনডেম সেলে। দীর্ঘ ছয় বছর সেখানে শুধু মৃত্যুর প্রহর গুনেছেন তিনি। অবশেষে হাইকোর্ট তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন। সেই সঙ্গে দায়রা জজের সেই রায়কে গুরুতর বেআইনি কাজ বলেও পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন উচ্চ আদালত।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, সেটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড ছিল না। পরিস্থিতির কারণে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে আসামি এই ঘটনা ঘটিয়েছেন। যা ৩০২ ধারায় নয়, ৩০৪ ধারার অপরাধ। ৩০২ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা দায়রা জজের গুরুতর বেআইনি কাজ হয়েছে। এরই মধ্যে আসামির সাজা খাটা শেষ হওয়ায় অন্য কোনো অভিযোগ না থাকলে তাঁকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এদিকে গত ২৩ নভেম্বর দেওয়া রায়ের কপি দুই বিচারপতির স্বাক্ষর শেষে ১২ ডিসেম্বর ডেথ রেফারেন্স শাখায় পাঠানো হয়। এরপর সেখান থেকে ১৪ ডিসেম্বর পাঠানো হয় ডেসপাস শাখায়। সেখান থেকে প্রয়োজনীয় কাজ শেষে তা পাঠানোর কথা বিচারিক আদালতে। এরপর তা যাবে সংশ্লিষ্ট কারাগারে। আর কারা কর্তৃপক্ষ রায়ের কাগজ পরীক্ষা করে আসামিকে মুক্তি দেবে। তবে ডেসপাস শাখায় রোববার (২৪ ডিসেম্বর) খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এটি এখনো পাঠানোর প্রক্রিয়ায় রয়েছে।
রায় প্রকাশের এক মাস পরও তা কারাগারে না পৌঁছানোর বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘সব আদেশ বা রায়ই পাঠানো হয়। এটিও শাখা থেকে পাঠানোর কথা। তবে না পাঠানো হলে বিষয়টি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এদিকে ৩৯ পৃষ্ঠার ওই রায় রোববার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘স্ত্রীকে খুনের কোনো পরিকল্পনা আসামির ছিল না। এটি আকস্মিকভাবে হয়ে গেছে। তাই হাইকোর্ট আসামিকে মৃত্যুদণ্ড থেকে কমিয়ে ১০ বছরের সাজা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে কোনো আপিল করেনি।’
এরই মধ্যে আসামির সাজা খাটার মেয়াদ পার হয়ে গেছে। এর মধ্যে ছয় বছর তিনি থেকেছেন কনডেম সেলে। তাই অন্য কোনো অভিযোগ না থাকলে তাঁকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রায়ের বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইমতিয়াজ ফারুক আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, প্রসিকিউশন এমনকি আদালত কেউই এর দায় এড়াতে পারে না। সবাইকে আরও সতর্ক হতে হবে। যাতে কারও ভুল বা অসতর্কতার কারণ কাউকে হয়রানির শিকার হতে না হয়।’
রায় এখনো না যাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘যাতে আদালতের সিদ্ধান্ত আরও দ্রুত পাঠানো যায় সে বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের উচিত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া। কেননা একদিনও অতিরিক্ত কারাবাস কাম্য নয়।’
মামলার নথি থেকে জানা যায়, এনামুল হক দিনমজুর ছিলেন। বিয়ের পর শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। ২৪ বছরের সংসার জীবনে দুই মেয়ে ও এক ছেলের জনক তিনি।
২০১১ সালের ২০ এপ্রিল সস্ত্রীক বড় মেয়ের শ্বশুরবাড়ি গিয়েছিলেন। ওই দিন সন্ধ্যায় ফেরার পথে স্ত্রীর সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে স্ত্রীর গলা চেপে ধরেন। এতে স্ত্রী মারা যান। পরে লাশ মাটিতে পুঁতে রেখে নিজের এলাকা দিনাজপুর পালিয়ে যান এনামুল।
সালমা বেগমের কোনো খোঁজ না পেয়ে ২০১১ সালের ২৩ এপ্রিল থানায় জিডি করা হয়। আর লাশ উদ্ধারের পর ২৫ এপ্রিল হত্যা মামলা করেন তাঁর ভাই সফির উদ্দিন। দুই মাস পর ২৮ জুন গ্রেপ্তার হন এনামুল। তাঁর দেওয়া তথ্যমতে উদ্ধার করা হয় লাশ মাটিচাপা দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত কোদাল। পরদিন ঘটনার বিষয়ে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেন তিনি। এরপর তাঁকে পাঠানো হয় কারাগারে। ওই বছরের ৭ অক্টোবর চার্জশিট দেয় পুলিশ।
বিচার শেষে ২০১৭ সালের ২৪ আগস্ট রায় দেন ঠাকুরগাঁওয়ের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত। রায়ে এনামুলকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। আর মৃত্যুদণ্ড হওয়ায় তাঁকে পাঠানো হয় কনডেম সেলে। পরে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্য রায়ের নথি পাঠানো হয় হাইকোর্টে।
এরপর কারাগার থেকে ‘জেল আপিল’ করেন এনামুল হক। বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের বেঞ্চে এই বিষয়ে শুনানি হয়। এনামুলের পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন নার্গীস আক্তার। আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুজিত চ্যাটার্জি বাপ্পী।
আদালতে স্বীকারোক্তিতে এনামুল বলেন, স্ত্রী সালমা এক–দুই বছর ধরে তাঁর সঙ্গে খারাপ আচরণ করে আসছিলেন। তিনি বলেন, ‘স্বামী হিসেবে আমার যে অধিকার সেটি দিত না। আমার খাবার–দাবারের ব্যাপারে খোঁজখবর নিত না। আমার সঙ্গে ঠিকমতো কথা বলত না। সকালের খাবার দুপুরে, দুপুরের খাবার রাতে খেতে দিত। আমার সঙ্গে মাঝে–মধ্যেই ঝগড়াঝাঁটি করত।’
ঘটনার দিন এনামুল বড় মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘সন্ধ্যা রাতে অন্ধকারে দুজন হেঁটে বাড়ি যাচ্ছিলাম। এ সময় তাকে বলি, তুই এমন ব্যবহার করিস ক্যান? আমি তোর স্বামী হই, অথচ তুই আমার সঙ্গে মেলামেশা করিস না। আমাকে আমার অধিকার দেইস না। আমার সেবাযত্ন করিস না। খালি ঝগড়া করিস। এটা কি ঠিক কাম! তুই ভালো হবা (হতে) পাইস না? তখন আমার স্ত্রী আমাকে বলে যে, “তোর কত সাধ হইছে আইজকা (আজকে) বাড়িত যাও আগে তারপর তোর সাধ মিটাইম (মেটাব)। বাড়িত যায়া (গিয়ে) এলাকাবাসীকে দিয়া আইজকা তোর হাড্ডি ফাটাইম, তোক বাঁশ ডলা দেইম”।’
এনামুল বলেন, ‘আমার মাথায় রাগ উঠে যায়। আমি রেগে গিয়ে বলি, আইজকা তোক মারি ফেলাইম ডাঙ্গে (পিটিয়ে মেরে ফেলব)। তখন আমার স্ত্রী বলে, “ফেলাও মারি, আইজকা মুই (আমি) তোর হাততে মরিম (মরব), আর না হইলে বাড়িত যায়া তোর হাড্ডি ফাটাইম”। তখন আমার রাগ আরও বেড়ে যায় এবং আমি আমার স্ত্রীর গলা দুই হাত দিয়ে টিপে ধরি। এভাবে প্রায় দশ মিনিট গলা টিপে ধরে যেই ছেড়ে দিয়েছি অমনি সে মাটিতে পড়ে যায়। আমি তখন দেখি যে সালমা মরে গেছে।’
লাশ গোপনের বর্ণনা দিয়ে এনামুল বলেন, ‘ওই সময় ভুট্টা খেতে সালমার লাশ ফেলে রেখে বাড়িতে যাই। একটি কোদাল নিয়ে এসে কলাই খেতে গর্ত করে লাশ মাটিচাপা দেই। আর কোদালটি পাশে বনবাড়ী ভাটাপোড়া জঙ্গলে ছুড়ে ফেলে দেই। আমি হঠাৎ করে রাগে সালমার গলা টিপে ধরেছিলাম। আমি ভাবতেই পারিনি যে আমার স্ত্রী মারা যাবে। আমি জীবনে এই প্রথম ভুল করলাম। আমি অনুতপ্ত। আমি আমার স্ত্রী সালমাকে মেরে ফেলতে চাই নাই। আমি আমার স্ত্রীকে ভালোবাসতাম। এত বছর সংসার করার পর আমার স্ত্রী এভাবে আমার হাতেই মারা যাবে, আমি ভাবতেই পারছি না। আমি ক্ষমা চাই। আমাকে যে শাস্তি দেওয়া হবে তা মেনে নেব।’
মাদারীপুরে আড়িয়াল খাঁ নদ থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে বাধা দেওয়ায় স্থানীয়দের ওপর হাতবোমা নিক্ষেপের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় এক গৃহবধূসহ আহত হয়েছে ৩ জন। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাদারীপুর সদর উপজেলার পাচখোলা ইউনিয়নের তাল্লুক গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি)...
২ ঘণ্টা আগেখাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলায় ১০ হাজারের বেশি বিদ্যুৎ-সংযোগ রয়েছে আবাসিক গ্রাহকের বাসাবাড়িতে। কিন্তু অনেকের বাড়ি, এমনকি মূল লাইনেও বিদ্যুতের খুঁটি নেই। স্থায়ী খুঁটিতে সংযোগ টানার কথা বলে খুঁটিপ্রতি ১৭-১৮ হাজার টাকা নেওয়া হলেও সেটি হয়নি।
২ ঘণ্টা আগেআজ সোমবার ভোর ৫টার দিকে এ ঘটনার পর চার ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঢাকার কমলাপুর থেকে টঙ্গী পর্যন্ত রেল চলাচলে বিঘ্ন ঘটেছে বলে জানান কমলাপুরের স্টেশন মাস্টার মো. আনোয়ার হোসেন।
২ ঘণ্টা আগেহবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলায় মোস্তাকিন মিয়া (১৭) নামে এক কিশোরের গলাকাটা লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল রোববার রাত সাড়ে ১১টার দিকে কালিয়ারভাঙ্গা ইউনিয়নের পুরানগাঁও গ্রামের বসতঘর থেকে মোস্তাকিন মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
২ ঘণ্টা আগে