Ajker Patrika

আশুলিয়ায় বেশির ভাগ কারখানায় খুলেছে, কয়েকটিতে এখনো অসন্তোষ 

নিজস্ব প্রতিবেদক ও সাভার প্রতিনিধি (ঢাকা) 
আশুলিয়ায় বেশির ভাগ কারখানায় খুলেছে, কয়েকটিতে এখনো অসন্তোষ 

ঢাকার সাভারের আশুলিয়ায় শ্রমিক বিক্ষোভের কারণে ছুটি দেওয়া বেশির ভাগ কারখানাই আজ বৃহস্পতিবার চালু হয়েছে। তবে দুপুরের দিকে আশুলিয়ার আল মুসলিম গ্রুপের একটি কারখানার জিএমকে মারধর করেন শ্রমিকেরা। খবর পেয়ে শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার (এসপি) সারোয়ার আলম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। এ সময় বিক্ষুব্ধ শ্রমিকেরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে পুলিশ সুপার ও ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন। 

এদিকে যেসব কারখানায় হামলা ও ভাঙচুর করা হয় পরে ওই সব কারখানা ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

এদিকে সহিংসতা ঠেকাতে আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বিএনপি নেতাকর্মী ও শ্রমিকেরা আশুলিয়ার বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেন। তারা বহিরাগত বা বিক্ষুব্ধ শ্রমিকদের নিবৃত্ত করতে বিভিন্ন কারখানার সামনেও মহড়া দেন। 

শিল্প পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শ্রমিক অসন্তোষের মুখে আজ বৃহস্পতিবার মেডলার অ্যাপারেলস লিমিটেডে, টাউজার লাইন লিমিটেডসহ নাসা গ্রুপের কয়েকটি কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়। 

সহিংসতা ঠেকাতে বিএনপির নেতাকর্মী ও শ্রমিকেরা বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নেন। ছবি: আজকের পত্রিকাসকাল ১০টার দিকে বিক্ষুব্ধ কিছু শ্রমিক নরসিংহপুর এলাকার হা-মীম গ্রুপের কারখানার মূল ফটকে লাঠিসোঁটা দিয়ে ভাঙার চেষ্টা করেন। স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা তাঁদের ধাওয়া দেন। এ সময় উভয় পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। বিএনপির নেতা-কর্মীরা কয়েকজনকে ধরে পিটুনি দিয়ে ছেড়ে দেন। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী ও শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। একই এলাকার শারমিন গ্রুপের কারখানার সামনে থেকে কারখানায় হামলার অভিযোগে স্থানীয় লোকজন দুজনকে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। 

হামলার আতঙ্কে আশুলিয়ার কাঠগড়া এলাকার আগামী অ্যাপারেলস লি নামে একটি কারখানা ছুটি দিয়ে দেয়। এছাড়া জিরাব-বিশমাইল সড়কে এভারব্রাইট সোয়েটার্স কারখানার সামনে এবং দুর্গাপুর এলাকার ফ্যাশন ডট কম গার্মেন্টসের সামনে কারখানার শ্রমিক ও স্থানীয়দের লাঠি হাতে অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়। 

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সকাল থেকে পুলিশ কঠোর অবস্থানে ছিল। ছবি: আজকের পত্রিকাএর আগে সকাল ৮টার দিকে পলাশবাড়ী এলাকায় পার্ল গার্মেন্টস কোম্পানি লিমিটেডের শ্রমিকেরা টিফিন ভাতা, হাজিরা বোনাস ৮০০ টাকা করা, বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ও মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ নানা দাবিতে কারখানা–সংলগ্ন নবীনগর-চন্দ্রা সড়কের চন্দ্রাগামী লেন অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। 

এ সময় আশুলিয়ার নরসিংহপুর ও জিরাবোরসহ আবদুল্লাহপুর-বাইপাইল সড়কের পাশের বিভিন্ন কারখানার আশপাশে স্থানীয় বিএনপির নেতা–কর্মীদের অবস্থান নিয়ে থাকতে দেখা যায়। বিএনপি নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি কিছু শ্রমিকদেরও কয়েকটি কারখানার সামনে পাহারায় থাকতে দেখা যায়। 

বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলেন, পোশাক শিল্প দেশের সম্পদ। এই শিল্পের চাকা না ঘুরলে দেশের অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে যাবে। তাই পোশাক শিল্পকে রক্ষায় আমরা রাস্তায় নেমেছি। 

নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্থানে সেনাবাহিনী অবস্থানে ছিল। ছবি: আজকের পত্রিকাআশুলিয়ায় শিল্পাঞ্চল পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, আজ আশুলিয়ার প্রায় সব কারখানাই চালু ছিল। এসব কারখানায় নির্ধারিত সময় কাজ শুরু হয়। তবে তবে শ্রমিক অসন্তোষের কারণে আজ ৭–৮ কারখানা কারখানা ছুটি দেওয়া হয়। 
 
পুলিশ সুপার (এসপি) সারোয়ার আলম আরও বলেন, ‘আল মুসলিমের কারখানার জিএমকে শ্রমিকেরা পিটিয়ে মেরেই ফেলতে চেয়েছিলেন। আমরা গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করি। এ সময় আমার চোখে আঘাত পাই।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত