Ajker Patrika

ত্বকীর ঘাতকেরা শহরে দাবড়ে বেড়াচ্ছে: রফিউর রাব্বি

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
আপডেট : ০৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০৯: ৫৯
ত্বকীর ঘাতকেরা শহরে দাবড়ে বেড়াচ্ছে: রফিউর রাব্বি

‘নারায়ণগঞ্জ শহরে হকার উচ্ছেদকে কেন্দ্র করে মেয়র আইভীর ওপর সশস্ত্র হামলার ছবি আমরা দেখেছি। অস্ত্রসহ সেই ছবি সারা দেশের মানুষ দেখেছে। অথচ সেই মামলা থেকে অস্ত্রধারীদের খালাস দিয়ে অভিযোগপত্র দিয়েছে পুলিশ। এখানকার প্রশাসন ও পুলিশ ওসমান পরিবারের পক্ষ হয়ে জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। প্রকাশ্যে অস্ত্রসহ হামলা করলেও পুলিশ তা দেখে না।’ এমন মন্তব্য করেছেন সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি। 

আজ রোববার রাতে শহরের আলী আহাম্মদ চুনকা নগর পাঠাগার ও মিলনায়তনে ত্বকী হত্যা ও ১১৮ মাস উপলক্ষে আয়োজিত আলোক প্রজ্বালন অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেন রফিউর রাব্বি। 

রফিউর রাব্বি বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধ হয়েছিল দেশকে সব মানুষের দেশ বানানোর জন্য, কিন্তু অর্ধশতাব্দীতে কোনো সরকারই চায়নি দেশটা জনগণের হোক। তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে গডফাদার আর মাফিয়াদের হাতে দেশের মালিকানা তুলে দিয়েছে। জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখতে সরকার বিচারব্যবস্থা, নির্বাচনী ব্যবস্থা ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধ্বংস করেছে। দশ বছর হতে চলল অথচ ত্বকী হত্যার অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করা হয়নি। এটা বিচারহীনতার নজিরের পাশাপাশি সরকারের দেউলিয়াপনার উদাহরণ।’ 

রফিউর রাব্বী পুলিশের সমালোচনা করে বলেন, ‘সারা শহরের মানুষ দেখল অস্ত্র নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তারা দেখল না। তাদের ছাড়পত্র দিয়ে দেওয়া হলো। এই শাহ্ নিজামকে কমিউনিটি পুলিশের সদস্য বানিয়েছেন আপনারা। এই সমস্ত গডফাদার আপনাদেরই অংশ। পুলিশে থাকুন আর প্রশাসনে থাকুন, আপনাদের জবাব দিতে হবে। বর্তমান সরকার কেয়ামত পর্যন্ত আপনাদের পাহারা দেবে না। সময় এসেছে গডফাদাররা দেশ ছেড়ে পালাবে। আপনাদের রাস্তা আপনারা ঠিক করুন। জনগণের পক্ষে আসুন। ত্বকীর ঘাতকেরা শহরে দাবড়ে বেড়াচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। ওসমান পরিবার ত্বকী হত্যাসহ বহু অপকর্মের জন্মদাতা। সেই পরিবারকে সরকার বিভিন্ন সময় পুরস্কৃত করেছে। আমরা এই কর্মসূচি থেকে সাগর-রুনী, তনুসহ নারায়ণগঞ্জের সব হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবি জানাই।’ 

সংগঠনের সভাপতি ভবানী শংকর রায়ের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহিন মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক কমিটির সভাপতি এ বি সিদ্দিক, কবি ও সাংবাদিক হালিম আজাদ, প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মাহাবুবুর রহমান মাসুম, সিপিবি জেলা সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, বাসদের জেলা আহ্বায়ক নিখিল দাস, গণসংহতি আন্দোলনের জেলা সমন্বয়ক তরিকুর সুজন প্রমুখ। 

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৬ মার্চ নগরীর শায়েস্তা খাঁ সড়কের বাসা থেকে বের হওয়ার পর নিখোঁজ হয় তানভীর মুহাম্মদ ত্বকী। এর দুই দিন পর ৮ মার্চ শীতলক্ষ্যা নদীর কুমুদিনী খাল থেকে ত্বকীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের বছর ২০১৪ সালের ৫ মার্চ তদন্তকারী সংস্থা র‍্যাব সংবাদ সম্মেলন করে জানায়, নারায়ণগঞ্জের ওসমান পরিবারের নির্দেশে টর্চার সেলে ১১ জন মিলে ত্বকীকে হত্যা করেছে। অচিরেই তাঁরা অভিযোগপত্র আদালতে পেশ করবে। কিন্তু সেই অভিযোগপত্র আজও আদালতে পেশ করা হয় নাই।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত