পাগলা মসজিদের দানবাক্সে পাঁচ মাসেই জমেছে ২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা

প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ জুন ২০২১, ২০: ০৩
Thumbnail image

কিশোরগঞ্জ: ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দান বাক্সে ৪ মাস ২৬ দিনে মিলেছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকা। এ ছাড়া পাওয়া গেছে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বিদেশি মুদ্রা। এর আগে চলতি বছরের ২৩ জানুয়ারি দানবাক্স খুলে পাওয়া গিয়েছিল ২ কোটি ৩৮ লাখ ৫৫ হাজার ৫৪৫ টাকা। মূলত তিন মাস পরপর দানবাক্স খোলা হয়। তবে করোনার কারণে এবার একটু দেরিতে খোলা হলো। 

ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৪ মাস ২৬ দিনে মিলেছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকাআজ শনিবার সকালে দানবাক্সগুলো খোলা হয়। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, মসজিদের আটটি লোহার দানবাক্স খুলে বের করা হয়েছে ১২ বস্তা টাকা। সেসব টাকা মসজিদের মেঝেতে বসে গুনছে কয়েকশ মাদ্রাসা ছাত্র। শুধু টাকা না সঙ্গে বিপুল পরিমাণ স্বর্ণালংকার ও বিদেশি মুদ্রাও পাওয়া গেছে। 

দান করতে আসা কয়েকজন বলেন, এ মসজিদে সঠিক নিয়তে মানত করলে রোগবালাই দূর হওয়াসহ মনোবাসনা পূর্ণ হয়। এমন বিশ্বাস থেকেই আমরা এসেছি। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে সব ধর্মের মানুষ এখানে মানত করতে আসেন এবং নগদ অর্থ, স্বর্ণালংকার, বৈদেশিক মুদ্রা, ছাগল, হাঁস-মুরগিসহ বিভিন্ন সামগ্রী দান করে থাকেন। আমরাও এসেছি, মানতের জিনিস দিলাম। নামাজও পড়েছি। এখন অনেক শান্তি লাগছে।

ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৪ মাস ২৬ দিনে মিলেছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকাপাগলা মসজিদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা শওকত আলী আজকের পত্রিকাকে জানান, দানের টাকা এবং স্বর্ণালংকার বাক্সে রাখেন দানকারীরা। এ ছাড়া দানের অন্যান্য সামগ্রী গ্রহণ করার জন্য আমাদের নির্ধারিত ঘর আছে। এ সব সামগ্রী প্রতিদিন নিলামে বিক্রি করে টাকা রূপালী ব্যাংকে থাকা মসজিদের অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়।

কিশোরগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও পাগলা মসজিদের টাকা গণনা কমিটির আহ্বায়ক ফরিদা ইয়াসমিন আজকের পত্রিকাকে জানান, দানের এসব টাকা পাগলা মসজিদসহ জেলা বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা ও এতিমখানাসহ গরিব ছাত্রদের জন্য ব্যয় করা হয়। তবে মসজিদের অ্যাকাউন্টে বর্তমানে কত টাকা জমা আছে, তা জানাতে পারেননি তিনি।

ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৪ মাস ২৬ দিনে মিলেছে ২ কোটি ৩৩ লাখ ৯৩ হাজার ৭৭৯ টাকাউল্লেখ্য, প্রায় আড়াই শ বছর আগে পাগলপ্রায় এক আধ্যাত্মিক পুরুষ খরস্রোতা নরসুন্দা নদীর মধ্যস্থলে মাদুর পেতে ভেসে এসে এই মসজিদ এলাকায় থামেন বলে কিংবদন্তি রয়েছে। তাঁকে ঘিরে সেখানে অনেক ভক্ত সমবেত হতেন। ওই পাগলের মৃত্যুর পর সমাধির পাশে মসজিদ গড়ে ওঠে। কালক্রমে এটি পরিচিতি পায় পাগলা মসজিদ নামে। মসজিদটি মুসলমানদের পাশাপাশি অন্য ধর্মাবলম্বীদের কাছেও পবিত্র ধর্মীয় স্থান হিসেবে সমাদৃত। প্রথমে জেলা শহরের হয়বতনগর দেওয়ানবাড়ির ওয়াকফকৃত মসজিদের ভূমির পরিমাণ ছিল ১০ শতাংশ। বর্তমানে এর পরিমাণ ৩ একর ৮৮ শতাংশ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত