Ajker Patrika

গাজীপুরের ২ মহাসড়কে বেড়েছে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ

গাজীপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৪ জুন ২০২৪, ১৫: ৪৬
গাজীপুরের ২ মহাসড়কে বেড়েছে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ

ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র দুই দিন। ইতিমধ্যে সড়কে রাজধানী ছেড়ে ঘরমুখী মানুষের ভিড় বেড়েছে। তারই প্রভাব পড়েছে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল এবং ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে। এই সড়ক দুটিতে আজ শুক্রবার সকাল থেকে গাড়ি চলছে ধীরগতিতে। তবে সড়কে যানজটের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি।

সরেজমিন বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আজ সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় সড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। নির্দিষ্ট বাস টার্মিনাল না থাকায় মহাসড়কের ওপর যাত্রী ওঠানামা করায় চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় যানবাহন চলছে ধীরগতিতে। এ ছাড়া গাড়ির চাপ বেড়ে যাওয়ায় গাজীপুর মহানগরীর ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের টঙ্গী থেকে মিলগেট এলাকা ও ভোগরা বাইপাস থেকে চান্দনা চৌরাস্তা অংশে যানবাহনের দীর্ঘ সারি দেখা গেছে। তবে মহাসড়কের অন্যান্য স্থানে গাড়ি প্রায় স্বাভাবিক গতিতেই চলছে।

ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে কালিয়াকৈরের চন্দ্রা ত্রিমোড় এলাকায় গাড়ির চাপ বেশি থাকায় চন্দ্রাকেন্দ্রিক যানবাহনের জটলা রয়েছে। গাড়ির অপেক্ষায় অবস্থান করতে দেখা গেছে উত্তরবঙ্গের শত শত যাত্রীকে। অনেকে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করেও যানবাহন না পেয়ে ট্রাক, পিকআপসহ খোলা গাড়িতে চড়ে গন্তব্যে পাড়ি দিচ্ছেন।

স্ত্রী-সন্তান নিয়ে অপেক্ষমাণ সিরাজগঞ্জের আলম মিয়া বলেন, সকাল থেকেই মহাসড়কে গাড়ির চাপ। তবে ঘরমুখী মানুষের ঢল নামায় গাড়ির সংকট দেখা দিয়েছে। অনেক সময় দাঁড়িয়ে থেকেও গাড়ি পাওয়া যাচ্ছে না।

ট্রাকে চড়ে বাড়ি যাচ্ছেন খোরশেদ আলম। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে যেসব গাড়ি আসছে, সেগুলোতে কোনো সিট খালি নেই। ভেতরে দাঁড়ানোর জায়গাও নেই। ফলে বাধ্য হয়ে ট্রাকে চড়ে বাড়ি যেতে হচ্ছে।

অপর যাত্রী হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘বাসে ভাড়া বেশি, সিট নাই। ট্রাকে ভাড়া কম। আমার মতো অনেকেই বাস স্ট্যান্ডে দীর্ঘ সময় গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে।’

গাড়িচালকেরা জানিয়েছেন, অতিরিক্ত গাড়ির কারণে ঢাকা থেকে চান্দনা চৌরাস্তায় পৌঁছাতে উত্তরার জসীমউদ্‌দীন রোড, টঙ্গী বাজার থেকে মিলগেটসহ বেশ কয়েকটি স্থানে যানজটে পড়তে হয়েছে। তবে সড়কের অন্য অংশে স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চলাচল করছে।

আলম এশিয়া পরিবহনের চালক বলেন, রাস্তায় ইজিবাইক, অটোরিকশা বেশি। এগুলোর কারণে স্বাভাবিক গতিতে গাড়ি চালানো যাচ্ছে না। অনেক স্থানে সড়কে পানি জমে সমস্যা তৈরি করছে। 

গাজীপুরের দুই মহাসড়কে বেড়েছে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ। ছবি: আজকের পত্রিকাসংশ্লিষ্টরা জানান, চান্দনা চৌরাস্তায় উড়ালসেতু দিয়ে গাড়ি চলাচল করলেও সেতুতে ওঠানামার সময় গাড়ির ধীরগতি রয়েছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহমুখী গাড়ি চলাচল দ্রুত করতে টাঙ্গাইলমুখী লেন পুলিশ সিগন্যাল দিয়ে আটকে রাখায় চান্দনা চৌরাস্তা থেকে ইটাহাটা পর্যন্ত গাড়ির লম্বা সারি দেখা দিয়েছে। এ অংশে নজরদারি কম থাকায় এলোমেলোভাবে গাড়ি চলাচল করছে। এ ছাড়া দুপুরের পর অনেক পোশাক কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হবে। এ সময় শ্রমিকদের বাড়তি চাপ পড়বে সড়ক-মহাসড়কে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশ-২–এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহম্মেদ বলেন, কিছু কারখানা গতকাল বৃহস্পতিবার ছুটি হয়েছে। আজও কিছু কারখানা ছুটি হওয়ার কথা রয়েছে। আগামীকাল দুই সহস্রাধিক কারখানা ছুটি হবে। তারপরের দিন দুই শতাধিক কারখানা ছুটি হবে। ফলে এসব শ্রমিক সড়কে নামলে চাপ কিছুটা বাড়তে পারে। 

নাওজোর হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘রাতভর ঘরমুখী মানুষের ঢল ও পশুবাহী গাড়ির চাপ ছিল মহাসড়কে। এখনো ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে গাড়ির চাপ ও মানুষের উপস্থিতি রয়েছে। যাতে কোথাও গাড়ি থেমে না থাকে, সেই লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গাজীপুর মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (ট্রাফিক) আলমগীর হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, সকাল থেকে যানবাহন ও যাত্রীর চাপ ছিল। এখন কিছুটা স্বাভাবিক। বিকেলে আবারও চাপ বাড়তে পারে। তিনি বলেন, যানজট নিরসনে বিভিন্ন স্থানে মহানগর, ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে। মোতায়েন করা হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বাড়তি সদস্য। এ ছাড়া সিসিটিভি, ড্রোনের মাধ্যমে সড়ক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। গাড়ি বিকল হলে দ্রুততম সময়ে সেটি সরিয়ে ফেলতে বিভিন্ন স্থানে রেকার রাখা হয়েছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত