Ajker Patrika

আন্দোলনের সময় ঢামেকের মর্গে রাখা বেওয়ারিশ এক লাশের পরিচয় মিলল

ঢামেক প্রতিবেদক
আপডেট : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১: ৪৫
নিহত যুবক হাসান। ছবি: সংগৃহীত
নিহত যুবক হাসান। ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে পুলিশের গুলিতে নিহত এক যুবকের মরদেহ ছয় মাস ধরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পড়ে ছিল। ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁর পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে। নিহত যুবকের নাম হাসান (২০)। তাঁর বাড়ি ভোলায়।

আজ বৃহস্পতিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাসানের মরদেহ পরিবারের কাছে লিখিতভাবে হস্তান্তর করা হয়। তবে মরদেহ আগামীকাল শুক্রবার পর্যন্ত মর্গেই থাকবে। এরপর জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে গণহত্যার বিচারের দাবিতে কফিন মিছিল হবে।

নিহত হাসানের বাবা মনির হোসেন জানান, গত ১২ জানুয়ারি তাঁর ভাই ও হাসানের খালা ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে হাসানের মরদেহ শনাক্তের কথা বলেন। এরপর ১৩ জানুয়ারি যাত্রাবাড়ী থানার মাধ্যমে আদালতের নির্দেশে তিনি ও হাসানের মা গোলেনুর বেগম মালিবাগ সিআইডি অফিসে গিয়ে ডিএনএ নমুনা দেন।

১২ ফেব্রুয়ারি বুধবার তাঁদের জানানো হয় যে হাসানের ডিএনএ পরিবারের ডিএনএর সঙ্গে মিলেছে। পরে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পরিবারের কাছে মরদেহ আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করা হয়।

হাসানের বাবা মনির হোসেন জানান, তাঁদের বাড়ি ভোলা সদর উপজেলার কাছিয়া সাহা মাদার গ্রামে। হাসান যাত্রাবাড়ী সুতিখালপাড় বালুর মাঠ এলাকায় থাকতেন এবং গুলিস্তান এরশাদ মার্কেটে একটি ইলেকট্রিক দোকানে কাজ করতেন।

মনির হোসেন বলেন, হাসান দুই ভাই ও দুই বোনের মধ্যে বড় ছিল। গত ৫ আগস্ট বিকেলে বাসা থেকে বের হওয়ার পর আর ফিরে আসেননি। অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তাঁর সন্ধান মেলেনি। এর মধ্যে যাত্রাবাড়ী রাস্তায় পড়ে থাকা এক যুবকের পায়ে তার পেঁচানো ছবি ভাইরাল হয়। হাসানের স্বজনেরা ছবিটি দেখে তাঁকে শনাক্ত করলেও তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে তাঁর চাচা ও খালা ঢামেক মর্গে এসে মরদেহ শনাক্ত করেন।

ঢামেক মর্গের ইনচার্জ রামু চন্দ্র দাস জানান, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় নিহত এক যুবকের মরদেহ ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত হয়েছে। তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতেই পরিবারের কাছে মরদেহ লিখিতভাবে হস্তান্তর করা হয়েছে। তবে পরিবার শুক্রবার মরদেহ নিয়ে যাবে বলে জানিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এক নারীসহ ছয়জনের মরদেহ মর্গে সংরক্ষিত রয়েছে। তাঁদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে এবং ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। কিন্তু অনেকেই মরদেহ শনাক্তের জন্য এলেও নিশ্চিত করতে পারেননি।

যাত্রাবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. মোরশেদ আলম বলেন, গত ১৩ জানুয়ারি হাসানের পরিবারের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়। ১২ ফেব্রুয়ারি ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ শনাক্ত হলে বৃহস্পতিবার রাতে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

পরিবার ও সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে হাসানের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর গণহত্যার বিচারের দাবিতে কফিন মিছিল বের করা হবে। পরে হাসানের মরদেহ গ্রামের বাড়ি ভোলায় নিয়ে দাফন করা হবে।

উল্লেখ্য, ঢামেক হাসপাতালের মর্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন মারা যাওয়া ছয় লাশের খোঁজ পাওয়া গেলেও পরবর্তীকালে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, সেখানে ছয় নয়, সাতটি লাশ রয়েছে। এর মধ্যে একজন নারী, বাকি ছয়জন পুরুষের লাশ। সেই সাতজনের মধ্য আজ একজনের পরিচয় পাওয়া গেল।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

বাংলাদেশকে ভেঙে ফেলার আহ্বান ত্রিপুরার রাজপরিবার প্রধানের

পরিবারের সামনে পুলিশ কর্মকর্তা লাঞ্ছিত, স্বেচ্ছাসেবক দলের ৩ নেতা-কর্মী আটক

নয়াদিল্লি হাসিনা আমলের দৃষ্টিভঙ্গিই ধরে রেখেছে: ভারতীয় গণমাধ্যমকে দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য

বিমসটেক সম্মেলনে ড. ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি বৈঠক হচ্ছে

গ্রেপ্তার আসামিকে ছিনিয়ে নিতে পুলিশের ওপর হামলা, বিএনপির ১৭ নেতা-কর্মী আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত