Ajker Patrika

স্বামীর বিরুদ্ধে সন্তান বিক্রির অভিযোগ, আদালতে মামলা

পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ আগস্ট ২০২২, ১৬: ৪৭
স্বামীর বিরুদ্ধে সন্তান বিক্রির অভিযোগ, আদালতে মামলা

রাজবাড়ীর পাংশায় বাবা আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে নেশার টাকা ও বেশি অর্থের বিনিময়ে তিন বছরের শিশুকে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। গতকাল বুধবার শিশুটির মা মোছা শুকজান খাতুন বাদী হয়ে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইন, ২০১২-এর ৬ (১) (২) / ৭ ধারায় রাজবাড়ীর বিজ্ঞ মানব পাচার বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে মামলা দায়ের করেন। 

অভিযুক্ত আব্দুল কাদের খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের জাগলবা গ্রামের মৃত গফুর আলীর ছেলে।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আব্দুল কাদের কোনো কাজকর্ম করতেন না। তিনি নেশাগ্রস্ত ছিলেন। সাংসারিক সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনতে ওমানে যান আব্দুল কাদেরের স্ত্রী মোছা শুকজান খাতুন। ওমানে যাওয়ার সময় তাঁর বড় মেয়ে ফাতেমা (১৮), ছেলে মোবাহান (১৪) ও সুমাইয়াকে (৩) নানি রহিমার কাছে রেখে যান তিনি। বিদেশ যাওয়ার দুই-তিন মাস পর কাদের শাশুড়ির কাছ থেকে সুমাইয়াকে নিয়ে যান। সুমাইয়াকে নিয়ে যাওয়ার তিন-চার মাস পর আব্দুল কাদের শুকজানকে জানান সুমাইয়া হারিয়ে গেছে।

পরে দুই বছর প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে এসে মেয়ে সুমাইয়ার সন্ধান পান শুকজান। এ সময় তিনি জানতে পারেন, তাঁর স্বামী নেশার টাকা জোগাতে এবং বেশি অর্থের লোভে নারী পাচারকারীদের কাছে বিক্রির জন্য কুমারখালী উপজেলার মমিন মণ্ডলের কাছে তাঁর মেয়ে সুমাইয়াকে রেখেছেন। এ ঘটনায় গতকাল শুকজান খাতুন বাদী হয়ে উপজেলার ১ নম্বর কয়া ইউনিয়নের গট্টিয়া গ্রামের মৃত মকছেদ মণ্ডলের ছেলে আব্দুল মমিন মণ্ডলকে প্রধান আসামিসহ স্বামী আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ দমন আইন, ২০১২-এর ৬ (১) (২) / ৭ ধারায় রাজবাড়ীর বিজ্ঞ মানব পাচার বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা দায়ের করেন। 

মামলার বাদী শুকজান খাতুন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি অনেক চেষ্টা করেও মেয়েকে ফিরিয়ে আনতে পারছি না। আমি আমার মেয়ে সুমাইয়াকে মমিন মণ্ডলের বাড়িতে আনতে গেলে আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন।’

এ বিষয়ে অভিযুক্ত আব্দুল কাদের মোবাইল ফোনে বলেন, ‘আমার স্ত্রী যেসব অভিযোগ এনেছেন, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা।’ তিনি স্ত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমাদের অভাব-অনটনের সংসার। আমার স্ত্রী এই সংসারে থাকবেন না বলে তিন-চার বছর আগে তিন সন্তানকে রেখে বাড়ি থেকে চলে যায়। আমার ছোট মেয়ে সুমাইয়ার বয়স তখন ৩ বছর। তখন আমি আমার মেয়ে সুমাইয়াকে লালন-পালন না করতে পারায় এতিমখানায় দিয়ে দেব বলে সিদ্ধান্ত নেই। এ সময় আমার প্রতিবেশী মর্জিনা বেগমের ভাই মমিন মণ্ডল আমার মেয়েকে লালন-পালন করার দায়িত্ব নিতে ইচ্ছা পোষণ করে। পরে নিজের মেয়ে হিসেবে লালন-পালন করার জন্য বুঝে নেয়।’ 

অপর অভিযুক্ত মমিন মণ্ডল বলেন, ‘আমার তিন ছেলেসন্তান রয়েছে। মেয়েসন্তান না থাকায় সুমাইয়াকে নিজের মেয়ে হিসেবে লালন-পালন করার জন্য এনেছি। এখন পর্যন্ত সুমাইয়া আমার মেয়ে হিসেবেই বাড়িতে রয়েছে। তবে স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ করলেও তাঁদের এখনো বিবাহবিচ্ছেদ হয়নি বলে জেনেছি।’ 

মামলার বাদীপক্ষে জেলা জজকোর্টের অ্যাডভোকেট রেশমা নাহার মাহমুদা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

পরমাণু শক্তিধর হতে চেয়েছিল তাইওয়ান, সিআইএ এজেন্টের বিশ্বাসঘাতকতায় স্বপ্নভঙ্গ

এলপি গ্যাস, তেল, আটাসহ বেশ কিছু পণ্যে ভ্যাট তুলে দিল এনবিআর

চ্যাম্পিয়নস ট্রফি: রিজার্ভ-ডেতেও সেমিফাইনাল না হলে হৃদয়বিদারক সমীকরণ

বগুড়ায় ইফতারের পর ডেকে নিয়ে যুবককে হত্যা

অমর্ত্য সেনের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় যা বললেন জামায়াতের আমির

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত