মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য ত্বকীকে হত্যা: আনু মুহাম্মদ

নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
Thumbnail image

অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ত্বকীকে যারা হত্যা করেছে তাদের পরিচয় সারা দেশের মানুষ জানে। ত্বকীকে খুন করা হয়েছিল মানুষকে ভীত সন্ত্রস্ত করার জন্য। খুনিরা ভেবেছিল ত্বকীকে খুন করলে ত্বকীর বাবা ও তার সঙ্গের যেসব মানুষেরা আছে তারা ভয় পেয়ে চুপ হয়ে যাবে। খুবই পরিকল্পিত ও হিংস্র বর্বর কায়দায় তারা ত্বকীকে খুন করে দেখাতে চেয়েছিল তারা কতটা বর্বর। তাদের কাছে কোনো মানুষের মূল্য নেই। নারায়ণগঞ্জবাসী তাদের প্রতিবাদ জারি রেখে তাদের ধারণা মিথ্যা প্রমাণিত করেছে।

আজ শুক্রবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জ শহরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত প্রতিবাদ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ত্বকী হত্যার ৯ বছর উপলক্ষে এই সমাবেশ আয়োজন করে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চ। 

তিনি আরও বলেন, ত্বকীর হত্যাকারীদের নাম তদন্তে উঠে এসেছে, সংবাদ সম্মেলন হয়েছে, কাগজপত্রেও কোনো সমস্যা নেই। তারপরেও এই হত্যার বিচার হচ্ছে না। বিচার না হওয়ার কারণ সরকার তাদের পৃষ্ঠপোষকতা বা পক্ষে দাঁড়ানোর কারণে। তারা চায় জনগণ খুনিদের অপরাধ ভুলে যাক। তারা চায় উন্নয়নের ঢাকঢোলে জনগণ বুঁদ হয়ে থাকুক। তার বিপরীতে এই প্রতিবাদ সমাবেশ। যত দিন খুনির বিচার না হবে তত দিন এই প্রতিবাদ অব্যাহত রেখে যেতে হবে। এর মধ্য দিয়েই দুর্বৃত্তদের হাত থেকে এই দেশকে মুক্ত করতে পারব। 

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মানবাধিকার কর্মী খুশি কবীর বলেন, ত্বকী হত্যা নিয়ে সারাদেশে আলোচনা, প্রশ্ন তোলা, কারণ খোঁজা ও জবাব পাওয়ার চেষ্টা করা হয়। আমরা জানি না কত বছর এভাবে আমাদের দাঁড়াতে হবে? এই বিচারহীনতা সারা দেশের জন্য কলঙ্ক। বিচারহীনতার সংস্কৃতি এখন জায়েজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ত্বকী এর জলজ্যান্ত উদাহরণ। আমরা ত্বকীদের মতো  আর কোনো ছেলে মেয়েদের হারাতে চাই না। 

সভাপতির বক্তব্যে সন্ত্রাস নির্মূল ত্বকী মঞ্চের আহ্বায়ক  রফিউর রাব্বী বলেন, আজমেরী ওসমানের টর্চার সেলে ত্বকীকে হত্যা করা হয়েছে। তার সঙ্গে তো আমার কোনো  সম্পর্কই নেই। তাকে কখনো দেখিই নাই আমি। সে কার নির্দেশে ত্বকীকে হত্যা করেছে সেটি হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ। এই শামীম ওসমানরা নারায়ণগঞ্জে যে সমস্ত তৎপরতা চালিয়ে বেড়ায়, এগুলোর বিরুদ্ধে যারা কথা বলে তাদের দমনের জন্য হত্যা নির্যাতন পরিচালনা করে। শীতলক্ষ্যায় লাশ ফেলে এবং ৪ /৫টি টর্চার সেল এই শহরে পরিচালনা করেছে। আমাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এই টর্চার সেল বন্ধ করেছে। এমন কোনো  কর্ম নেই যা ওসমানরা করে না।

তিনি আরও বলেন, ওসমানরা নারায়ণগঞ্জবাসীকে ভয় পায়। তারা রাতে নারায়ণগঞ্জে থাকতে সাহস পায় না। দিনে এই শহরে এলেও তাদের অস্ত্র সহ বাহিনী দিয়ে পাহারা দেওয়া লাগে। তারা আসে টাকা কামানো, লুটপাট করার জন্য। শামীম ওসমান বলে সে তুড়ি দিলে নাকি ৩ / ৪ লাখ মানুষ জড়ো হয়ে যায়। ভোটের সময় ৭০ হাজার ভোট পান। ১ লাখ ভোটের ব্যবধানে ফেল করেছেন। সুতরাং কথা বলার সময় বুঝে শুনে কথা বলবেন। ডিসি এসপি আসলে তাদের ভয় দেখানোর জন্য বলেন লাখ লাখ লোক চলে আসবে। নারায়ণগঞ্জের মানুষ সাহসী। তারা চাঁদাবাজি, লুটপাটের বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। যত বড় গডফাদার থাকুক তাদের বিরুদ্ধে নারায়ণগঞ্জের মানুষ দাঁড়াবে। সুতরাং ভয় দেখিয়ে লাভ হবে না।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত