সর্বোচ্চ ২৭ টনের যানবাহন চলবে, বসছে ওয়েস্কেল

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮: ১৯
Thumbnail image

সর্বোচ্চ ২৭ টন ওজন নিয়ে পদ্মা সেতুতে উঠতে পারবে যানবাহন। অথচ উদ্বোধনের পর থেকে হয়তো আরও অধিক ওজন নিয়ে চলাচল করছে পণ্যবাহী যানবাহন। বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে সেতুর মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে বসানো হচ্ছে ডিজিটাল ওয়েস্কেল। কাজ এগিয়ে চলেছে দ্রুত। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে কাজ শেষে ওয়েস্কেলে ওজন পরিমাপ করে পদ্মা সেতুতে যানবাহন চলাচলের কথা জানিয়েছে সেতু কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সেতু পারাপার হওয়া যানবাহনের ওজন পরিমাপে উভয় প্রান্তে বসানো হচ্ছে ওজন পরিমাপের যন্ত্র ডিজিটাল ওয়েস্কেল। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্তে ৩টি করে মোট ৬টি ওয়েস্কেল বসানো হবে। এ ছাড়া নির্মাণ করা হচ্ছে ২টি স্টক ইয়ার্ড, ২টি ড্রাইভার শেড ও ৮টি গার্ড পোস্ট। সেতু পার হতে আসা যানবাহনকে ওজন পরিমাপের জন্য ওয়েস্কেলের ওপর দাঁড়াতে হবে না। চলতি পথেই ইলেকট্রনিক সেন্সরের সাহায্যে তথ্য সংগ্রহ করে পাঠিয়ে দেওয়া হবে মূল সার্ভারে। ওজন ২৭ টনের নিচে হলে সবুজ সংকেত জ্বলে উঠবে এবং সেতুতে যাতায়াতের পথের ব্যারিয়ার বার খুলে যাবে। আর ওজন ২৭ টনের ওপরে হলে লাল সংকেত জ্বলে উঠবে এবং খুলবে না সেতুতে যাতায়াতে পথ। সে ক্ষেত্রে বিকল্প গার্ড পোস্ট ব্যবহার করে ওই যানটিকে নিয়ে যাওয়া হবে স্টক ইয়ার্ডে। সেখানে অতিরিক্ত ওজনের পণ্য নামিয়ে পুনরায় স্কেল করে পদ্মা সেতু পার হবে যানবাহন। স্টক ইয়ার্ডে থাকা পণ্য সংগ্রহ করতে হবে ৭ দিনের মধ্যে।

গতকাল বৃহস্পতিবার পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তে গিয়ে দেখা যায়, ওয়েস্কেল বসানোর জন্য আরসিসি ঢালাইয়ের জন্য রড বাইন্ডিং কাজ শেষ করেছেন শ্রমিক ও প্রকৌশলীরা।

সকাল থেকে শুরু হয়েছে ঢালাইয়ের সাটারিংয়ের কাজ। সাটারিং শেষে ঢালাইয়ের সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। ঢালাইয়ের আগে শেষ করা হয়েছে ইলেকট্রনিক সেন্সর ও কম্পিউটার সংযোজনের জন্য ইলেকট্রিক ওয়্যারিংয়ের পাইপ বসানোর কাজ। টোল প্লাজার পেছনের অংশে প্রস্তুত করা হয়েছে ১টি স্টক ইয়ার্ড, ১টি ড্রাইভার শেড ও ৩টি গার্ড পোস্ট।

এরপর বাসে চেপে পদ্মা সেতু পার হয়ে মাওয়া প্রান্তে গিয়ে দেখা যায়, সেখানকার আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ শেষ। পানিভর্তি ট্যাংক লরির মাধ্যমে কিউরিংয়ের কাজ করছেন শ্রমিকেরা। ৩টি ওয়েস্কেল বসানোর জন্য সেখানে প্রস্তুত করা হয়েছে ৩টি আলাদা চেম্বার। মাওয়া অংশেও প্রস্তুত করা হয়েছে ১টি স্টক ইয়ার্ড, ১টি ড্রাইভার শেড ও ৫টি গার্ড পোস্ট। শ্রমিকদের এসব কাজ তদারকি করছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রকৌশলী সৈয়দ রওনক আলী।

রওনক আলী জানান, ৫৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ওয়েস্কেলের অবকাঠামো নির্মাণকাজটি করছে প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড। মাওয়া অংশের কাজ প্রায় শেষ, আগামী ৫ থেকে ৬ দিনের মধ্যে শেষ করা হবে জাজিরা অংশের অবকাঠামো নির্মাণকাজ। এরপর ৫ সেপ্টেম্বর নির্মিত এসব অবকাঠামো বুঝিয়ে দেওয়া হবে সেতু বিভাগকে। পরবর্তী সময়ে এই অবকাঠামোর চেম্বারে তিনটি করে মোট ৬টি ওয়েস্কেল বসানোর কাজ শুরু করবে কোরিয়ান এক্সপ্রেস নামে অন্য একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

নির্মাণসামগ্রী নিয়ে ঢাকা থেকে বরিশাল যাওয়ার পথে পদ্মা সেতু পার হয়ে জাজিরার জমাদ্দার স্ট্যান্ডে বিশ্রামে থাকা ট্রাকচালক শরিফুলের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ট্রাকে থাকা পণ্যসামগ্রী ভারী হলেও ওজন জানা নেই তার। সেতুতে কোনো ওজন পরিমাপের যন্ত্র না থাকায় বিনা বাধায় তিনি সেতু পার হয়ে চলে এসেছেন। কত টন বহন করছেন এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘ওজন পরিমাপ করা হলে ট্রাকে কত টন ওজন বহন করা হচ্ছে, তা বোঝা যেত।’

পদ্মা সেতু প্রকল্পের সংযোগ সড়কের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ রজব আলী বলেন, পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের কাজে নিয়োজিত কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে ওয়েস্কেল বসানোর কাজটি করছে। ওয়েস্কেল কোরিয়া থেকে আনা হবে। আশা করি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে ওয়েস্কেল বসানোর কাজ শেষে যানবাহনের ওজন পরিমাপের কাজ শুরু করা যাবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত