জটে গাড়ি চলে না, পথে সারতে হয় ইফতার

রমজান মাসের শেষ দিকে রাজধানীর যানজট আরও প্রকট হয়েছে; বিশেষ করে অফিস ছুটির পর। ব্যস্ত সড়কগুলোতে যানবাহন এক মিনিট চললে ১৫ মিনিট নিশ্চল থাকছে। ১০ মিনিটের পথ যেতে পার হচ্ছে ঘণ্টা। যানজটে আটকে অফিসফেরত দূরের যাত্রীদের অনেককে বাসার পরিবর্তে পথেই যানবাহনে ইফতার সারতে হচ্ছে। দিনে দিনে জট বাড়ছে।

পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ বলছে, রমজানে সব অফিস একই সময়ে ছুটি হওয়ায় একসঙ্গে অনেক মানুষ ও যানবাহন সড়কে নামছে। ফলে ইফতারের আগে যানজট হচ্ছে।

এদিকে ইফতারের পর নগরের অনেক সড়ক কিছুটা ফাঁকা হয়ে গেলেও গুলিস্তানসহ বিপণিবিতানমুখী সড়কগুলোর জট থাকছে রাতেও।

গতকাল সোমবার অফিস ছুটির পর সায়েন্স ল্যাব মোড়, নিউ এলিফ্যান্ট রোড, কাঁটাবন, শাহবাগ, বাংলামোটর, কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেট এবং হানিফ উড়ালসড়কে যানজট দেখা গেছে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে যানজটও বেড়েছে। এই প্রতিবেদক বিকেল ৪টায় সায়েন্স ল্যাব মোড় থেকে বাসে রওনা হয়ে বাংলামোটরে পৌঁছান বিকেল ৫টায়। গুগল ম্যাপ অনুযায়ী, এই পথের দূরত্ব প্রায় দুই কিলোমিটার। অর্থাৎ দুই কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে বাসের লেগেছে ১ ঘণ্টা। অথচ বাস স্বল্প গতিতে চললেও এই পথ যেতে বড়জোর ১০ মিনিট লাগার কথা।

বিভিন্ন সড়ক ঘুরে দেখা যায়, বাস, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মোটরসাইকেল, ব্যাটারির অটোরিকশা ও রিকশা যে যেভাবে পারছে, আগে যাওয়ার চেষ্টা করছে। কোনো শৃঙ্খলা নেই। এতেও জট বাড়ছে। মূল সড়কের জট এড়াতে ছোট গাড়ি গলিতে ঢুকে গলিও স্থবির হচ্ছে। এতে মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে।

ইসমাইল হোসেন নামের এক বাসযাত্রী আজকের পত্রিকাকে বলেন, সাড়ে তিনটায় অফিস ছুটির পর আজিমপুর থেকে তেজগাঁও যেতে যানজটের কারণে দুই ঘণ্টা লেগে যায়। অনেক দিন বাসায় গেছেন ইফতারের পর। তিনি বলেন, ‘আজ ইফতারের আগে পৌঁছাতে পারব কি না, জানি না।’

বাংলামোটর মোড়ে জটে আটকে থাকা সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক শাহাজান আলী বললেন, পল্টন থেকে মোহাম্মদপুরের দুজন যাত্রী নিয়ে বাংলামোটর আসতেই ১ ঘণ্টা ২০ মিনিট চলে গেছে‌। প্রতিদিন ইফতারের আগে এমন যানজট হচ্ছে।

কারওয়ান বাজার ও ফার্মগেটে জটে আটকে পড়া যানবাহন থেকে অনেককে নেমে হেঁটে গন্তব্যের দিকে যেতে দেখা গেছে। সবাই ইফতারের আগে বাসায় পৌঁছাতে চান।

জানতে চাইলে ট্রাফিক পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার মো. শফিকুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘ইফতারের আগে সব মানুষ একসঙ্গে বের হওয়ায় মূলত সড়কে যানজট তৈরি হচ্ছে। কারণ, আমাদের সড়কের একসঙ্গে এত গাড়ির

চাপ নেওয়ার মতো সক্ষমতা নেই। হেয়ার রোডে দুই ঘণ্টা রাস্তা বন্ধ ছিল। এ কারণে মৎস্য ভবন দিয়ে ডাইভারশন দিতে হয়েছে। আমরা চেষ্টা করছি, সবাই যেন বাসায় গিয়ে ইফতার করতে পারেন।’