জুয়ায় আসক্ত ২ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী: মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

দেশে অনলাইন জুয়া খেলা বাড়ছে, বাড়ছে সাইবার অপরাধ। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় দুই কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জুয়ায় আসক্ত। সেই সঙ্গে তরুণ প্রজন্ম পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত হয়ে পড়ছে। ইন্টারনেটের অপব্যবহার বা ইন্টারনেট আসক্তি, পর্নোগ্রাফি আসক্তির মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে বাড়ছে বিষণ্নতা, মানসিক চাপ ও উদ্বেগ।

আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা জানায় বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। তারা পর্নোগ্রাফি ও জুয়ার সকল সাইট এবং লিংক বন্ধের দাবি জানিয়েছে।

বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘২০২২ সালের অক্টোবর থেকে গত বছর ২০২৩ সালের জুন পর্যন্ত বিটিআরসি ১২ হাজার ৩টি অনলাইন ব্যাটিং সাইট বন্ধ করেছিল। এমনকি পর্নোগ্রাফির বহু সংখ্যক সাইট বন্ধ করেছিল। কিন্তু সামগ্রিকভাবে বন্ধ করা যায়নি। সেই কার্যক্রম চলমান রাখতে পারেনি নিয়ন্ত্রক কমিশন এমনকি টেলিকমিউনিকেশন নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত এনটিএমসি। যার ফলে সাম্প্রতিক সময়ে এক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে কিশোর-কিশোরীদের ৬৩ শতাংশ ইন্টারনেটে আসক্ত। বিষণ্নতায় ভুগছে ৭৬ দশমিক ৬ শতাংশ। গবেষণাটিতে সবচেয়ে ভয়াবহ তথ্য হচ্ছে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে ৬২ দশমিক ৯ শতাংশ পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত।

বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের নিজস্ব পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে, দেশে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় দুই কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জুয়ায় আসক্ত। পাড়া মহল্লায় একটি ডিভাইস ব্যবহার করে দুই বা চারজন এমনকি দর্শক হিসেবে আরও ৪-৫ জন মিলে জুয়া খেলায় লিপ্ত হচ্ছে। এ সকল জুয়া খেলায় প্রথমে কিছু অর্থ প্রাপ্তি হলেও ৯৯ শতাংশ ক্ষেত্রেই প্রতারিত হয়।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন বলছে, অনলাইনে হাজার হাজার জুয়ার বিজ্ঞাপন ও লিংক রয়েছে। পর্নোগ্রাফি সাইটে ঢুকলেই জুয়ার বিজ্ঞাপন আসে। এমনকি সকল জুয়ার বিজ্ঞাপনে দেশি-বিদেশি নামকরা সেলিব্রেটি অংশ নিচ্ছে। ফায়ারফক্স, মজিলা, অপেরা মিনি, ব্যাটা, এমনকি ক্রোম ব্রাউজারে অবাধে সার্চ দিলেই মিলছে পর্নোগ্রাফির লিংক। এর পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজ খুলে যৌন ব্যবসায়ের বিজ্ঞাপন দেওয়া হচ্ছে। যে বিজ্ঞাপনে স্পর্শ করার সঙ্গে সঙ্গে গ্রাহকের হোয়াটসঅ্যাপে সংযুক্ত হয়ে যাচ্ছে। গ্রাহকের তথ্য হাতিয়ে নিচ্ছে ওই সকল অপরাধী যৌন ব্যবসায়ী। পর্নোগ্রাফি এবং জুয়া এ দুটি ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। যারা ইন্টারনেটে আসক্ত হয়ে পড়ছেন বিশেষ করে যাদের জুয়া এবং পর্নোগ্রাফিতে আসক্তি বেশি, তাঁরাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।

মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, জুয়া বা পর্নোগ্রাফি সাইট লিংক এমনকি অ্যাপগুলো বন্ধ করা না গেলে আগামী প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে নানা শ্রেণির বয়সের লোকজন।

মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন মনে করে, কেবলমাত্র নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারই দেশের সমৃদ্ধি বয়ে আনতে পারে। এ জন্য সরকারের এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে গণমাধ্যম, অপারেটর, নিয়ন্ত্রক সংস্থা, সরকার এবং বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনলাইন নিরাপত্তায় জনসচেতনতা তৈরি করতে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত