‘দেশে নারীবান্ধব আইন থাকলেও প্রয়োগ নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image
মতবিনিময় সভায় বক্তারা। ছবি: আজকের পত্রিকা

দেশে নারীবান্ধব অনেক আইন থাকলেও সেগুলোর যথাযথ প্রয়োগ নেই। ফলে নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটেই চলেছে। এই সহিংসতা প্রতিরোধে পুরুষদের মাঝে বড় পরিসরে প্রচারাভিযান প্রয়োজন।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধ ও প্রতিকার বিষয়ে মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম। তিনি বলেন, নারী নির্যাতন অপরাধ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে ৮০ দশকের পর। তবে এর সামাজিক অভিঘাত ও নিষ্ঠুরতা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধির কারণে উন্নয়নের সুফল কেউ পাচ্ছে না। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে দায়িত্ববোধ ও কর্তব্যবোধের জায়গায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে বৈষম্যমূলক পারিবারিক আইন ও উত্তরাধিকার আইনে সমতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সাংগঠনিক কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে।

স্বাগত বক্তব্যে সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু বলেন, নারী ও কন্যারা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে বিশ্বের কোথাও নিরাপদ নয়, ফলে নারী নির্যাতন প্রতিরোধের আন্দোলন সমগ্র বিশ্বজুড়ে চলমান। পরিসংখ্যান অনুসারে নারী হত্যা বাড়ছে। বৈশ্বিক অর্থনীতি ও প্রযুক্তিকে অগ্রসর করতে নারী অবদান রাখছে কিন্তু অংশীদার হতে পারছে না।

মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপসচিব সাবিনা ফেরদৌস বলেন, অনেক আইন থাকলেও নারীর প্রতি সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। নারী নির্যাতন প্রতিরোধে পুরুষদের মাঝে বড় পরিসরে প্রচারাভিযান কর্মসূচি পরিচালনা করার পাশাপাশি সম্পদ-সম্পত্তিতে সমানাধিকার ইস্যুতে সচেতনতা তৈরি করা যেতে পারে।

জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার সহকারী পরিচালক (সিনিয়র সহকারী জজ) ফারিন ফারজানা বলেন, বর্তমানে নারী ও কন্যার প্রতি সহিংসতার ঘটনা প্রকাশের সংখ্যা খুবই নগণ্য। সামাজিক অবক্ষয়ের কারণেও ঘটছে বিভিন্ন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। পারিবারিক সহিংসতার ঘটনার উপস্থিতি জনপরিসরে ও মিডিয়াতে কম। জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা প্রতিটি জেলাতে আইনগত সহায়তা দিয়ে চলছে।

বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী এস এম এ সবুর বলেন, ‘আমাদের দেশে অনেক নারীবান্ধব আইন আছে কিন্তু প্রয়োগ নেই। সম্পত্তিতে, শিক্ষায়, কাজে সকল ক্ষেত্রে নারীদের সমান অধিকার প্রয়োজন।’

নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে জেলা পর্যায়ে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারের কার্যক্রম বিস্তৃত করার পরামর্শ দেন উপপুলিশ কমিশনার সালমা সৈয়দ পলি। তিনি বলেন, যৌতুক ও পরকীয়া, সাইবার অপরাধসহ বিভিন্ন নতুন ধরনের সহিংসতার ঘটনার সুষ্ঠু বিচারে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে নতুন ধারা সংযুক্ত করা যেতে পারে। তৃণমূলে আইনি সহায়তা প্রদানকারী সংস্থাসহ সবাইকে ব্যাপক প্রচার চালাতে হবে।

সভায় বক্তারা আইনের যথাযথ প্রয়োগ এবং বিচারলয়ে সাধারণের প্রবেশগম্যতা সহজ করার আহ্বান জানান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত