Ajker Patrika

চলন্ত বাসে ডাকাতি: গ্রেপ্তার দুই আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি দেবেন, জানাল পুলিশ

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি 
গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে দুইজন আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। ছবি: পুলিশ
গ্রেপ্তার তিনজনের মধ্যে দুইজন আদালতে জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। ছবি: পুলিশ

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে চলন্ত বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় মামলা নেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে টাঙ্গাইল গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে সাভার মডেল থানার গেন্ডা এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। গোয়েন্দা তথ্য ও তথ্য–প্রযুক্তির সহায়তায় তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে তিনটি মোবাইল ফোন সেট, নগদ ২৯ হাজার ৩৭০ টাকা ও ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি ছুরি উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁরা আন্তজেলা ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে পুলিশ।

আজ শনিবার সকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিং–এ টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমান এসব তথ্য জানান। গ্রেপ্তার আসামিদের মধ্যে দুই জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন বলে জানান এসপি।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন, মানিকগঞ্জ জেলার দৌলতপুর উপজেলার লাউতারা গ্রামের মো. বদর উদ্দিন শেখের ছেলে মো. শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিদ (২৯), শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানার রামকৃষ্ণপুর গ্রামের ইসমাইল মোল্লার ছেলে মো. সবুজ (৩০) ও ঢাকা জেলার সাভার থানার ৯ নং ওয়ার্ড টান গেন্ডা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে শরীফুজ্জামান ওরফে শরীফ (২৮)।

গ্রেপ্তার শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিত (২৯)–এর বিরুদ্ধে সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়া থানায় একটি, ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানায় একটি বাস ডাকাতি মামলাসহ মোট ৫টি মামলা রয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ডাকাত দলের অন্য সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন এসপি।

টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আহসান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে সবুজ ও শরীফ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে রাজি হয়েছেন। অপর আসামি শহিদুল ইসলাম ওরফে মহিদুল ওরফে মুহিদকে আরও জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন থাকায় তাঁকে ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করে আদালতে পাঠানো হবে।

গত ১৮ ফেব্রয়ারি রাত অনুমান ১টা ৪৫ মিনিট থেকে ভোর ৪টা পর্যন্ত ঢাকা–রাজশাহী মহাসড়কে ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের একটি বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানীর ঘটনা ঘটে। ঘটনার তিন দিন পর গতকাল শুক্রবার ভোরে মির্জাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা হয়। ডাকাতদের কবলে পড়া ওমর আলী নামের এক যাত্রী বাদী হয়ে মির্জাপুর থানায় মামলা করেন।

ওমর আলীর বর্ণনামতে, গত সোমবার (১৭ ফেব্রয়ারি) রাত ১১টার দিকে ঢাকার গাবতলী থেকে ইউনিক রোড রয়েলস পরিবহনের বাসটি ছেড়ে যায়। সাড়ে ১২টার দিকে ডাকাতেরা অস্ত্রের মুখে যাত্রীদের জিম্মি করে। কয়েকজনকে জখমও করে। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে বাসটি বিভিন্ন স্থানে ঘুরিয়ে ডাকাতি ও নারী যাত্রীদের শ্লীলতাহানি শেষে বাস থামিয়ে তারা নেমে যায়। ডাকাতেরা বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর চালক বাসটি নিয়ে গন্তব্যে যেতে অস্বীকৃতি জানান। পরে যাত্রীদের চাপের মুখে যাত্রা শুরু করেন চালক। পর দিন মঙ্গলবার বেলা ১১টার পরে যাত্রীরা বাসটি নাটোরের বড়াইগ্রাম থানায় নিয়ে যান। বেলা সাড়ে ১১টার পরে বাসটি বড়াইগ্রাম থানায় ঢোকানো হয়।

বাসের চালক বাবলু আলী (৩০), সুপারভাইজার সুমন ইসলাম (৩৩) ও তাঁর সহকারী মাহবুব আলমকে (২৮) আটক করে ৫৪ ধারায় মামলা দিয়ে আদালতে পাঠায় বড়াইগ্রাম থানা-পুলিশ। পরে তাঁরা আদালতের মাধ্যমে জামিনে ছাড়া পান। এ বিষয়ে আজকের পত্রিকাসহ বেশ কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। অবশেষে ঘটনার তিন দিন পর মির্জাপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা হয়। এর পরপরই তিনজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত