Ajker Patrika

‘আইজকাই শ্যাষ, খায়া যান’

নাজমুল হাসান সাগর, শিবচর(মাদারীপুর) থেকে 
আপডেট : ২৪ জুন ২০২২, ১৩: ৫৭
‘আইজকাই শ্যাষ, খায়া যান’

পদ্মার দুই পাড়েই ঘাটে যাত্রী আর লঞ্চ, ফেরি ও স্পিডবোটসংশ্লিষ্টদের মধ্যে অন্য রকম এক উন্মাদনা বিরাজ করছে। অন্য দশ দিনের নিয়মিত হাঁকডাক, কোলাহল আর কর্মচাঞ্চল্যের সঙ্গে আজকের দিনের কর্মচাঞ্চল্যের কিছুটা পার্থক্য আছে। এটা বোঝা গেল লঞ্চে ক্রেতা আকর্ষণের জন্য বিভিন্ন হকারের ছাড়া হাকে। ভ্রাম্যমাণ এসব ডিম, চানাচুর, ঝালমুড়ি, শরবত কিংবা লঞ্চের ক্যানটিন বয়রা গলা ছেড়ে সুর করে ডাকছে, ‘আইজকাই শ্যাষ, খায়া যান। কাইলকা থাইকা আর পাইবেন না।’ 

শনিবার উদ্বোধন হতে যাচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত পদ্মা সেতুর। সেতু দিয়ে চলাচল শুরু হলে যুগ যুগ ধরে পদ্মার বুকে দাপিয়ে বেড়ানো এসব লঞ্চ আর চলাচল করবে না। বন্ধ হয়ে যাবে লঞ্চকেন্দ্রিক নানা ক্ষুদ্র ব্যবসাও। তাই হকারেরা লঞ্চযাত্রীদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন ‘আজকেই শেষ দিন’। লঞ্চ ছাড়ার পরেই ক্যানটিন থেকে এসে যাত্রীদের উদ্দেশ্যে একজন বলে গেল ‘ইলিশ ভাজা, ডাইল ভুনা আর গরম-গরম ভাত। আইজকাই শ্যাষ দিন, খাইতে চাইলে আইসা পড়েন নিচের ক্যানটিনে। এই খাওন আর পাইবেন না।’ 

জীবনে একবার যারা এই পথে লঞ্চ ভ্রমণ করেছেন, তাঁরা অবশ্যই জানবেন, পদ্মার বুকে লঞ্চযাত্রার সঙ্গে সব থেকে পরিচিত যে বিষয়টি জড়িত। তা হলো ভাজা ইলিশ, ইলিশভাজা তেল আর ভাজা শুকনো মরিচ দিয়ে গরম-গরম কয়েক থালা ভাত খাওয়া। ক্ষুধার্ত যাত্রী তো বটেই,  ইলিশ ভাজার ঘ্রাণে অনেক ভরপেটা মানুষও লোভ সামলাতে না পেরে খেতে বসে যান অনায়াসেই। আজও তার ব্যতিক্রম হয়নি। 

লঞ্চের নিচতলার ক্যানটিনে গিয়ে দেখা গেল, হলুদ-লবণ মাখানো ইলিশ সাজিয়ে রাখা হয়েছে। খেতে আসা যাত্রীরা নিজের পছন্দমতো মাছের টুকরো নির্বাচন করে দিচ্ছেন। সেটি তাৎক্ষণিক ভেজে তুলে দেওয়া হচ্ছে পাতে। গরম গরম ভাজা মাছ, তেল আর ভাতের সঙ্গে মসুর ডালের ভুনা। পদ্মার বুকে ভাসতে ভাসতে এমন খাওয়ার যে স্বর্গীয় সুখ, তা শনিবার থেকে আর পাওয়া যাবে না। সেতু দিয়ে পদ্মা পাড়ি দেওয়ার আনন্দের সঙ্গে যুগের পর যুগ চলে আসা লঞ্চের এই খাবার না খেতে পারার কষ্টটা একধরনের অম্লমধুর অনুভূতির সৃষ্টি করেছে নিয়মিত পদ্মা পাড়ি দেওয়া মানুষগুলোর মনে। এমন একজন ইখলাস মাতবর। তিনি বলেন, ‘কালকের পর থেকে সেতুর ওপর দিয়ে সহজেই পদ্মা পাড়ি দিতে পারব। এটা খুব আনন্দের বিষয়। জন্মের পর থেকে লঞ্চ বা ফেরিতে করে আমরা যেভাবে পদ্মা পাড়ি দিয়েছি, তার অনেক অনুষঙ্গই আমাদের যাপিত জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। দীর্ঘদিনের এসব অনুষঙ্গ আমাদের জীবনে একধরনের অভ্যস্ততা তৈরি করেছে। কাল বা পরশু থেকে এসব থাকবে না ভাবতেই কেমন জানি লাগছে। এ এক মিশ্র অনুভূতি, যা বলে বোঝানো সম্ভব না।’

শেষ দিন লঞ্চের ক্যানটিনে যাত্রীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতনসাত বছর বয়সে ভাইয়ের সঙ্গে বাগেরহাট থেকে ঘুরতে এসে লঞ্চের ক্যানটিনে কাজ শুরু করেন মো. জহিরুল ইসলাম। একপর্যায়ে পুরো ক্যানটিনের দায়িত্ব নেন তিনি। সব মিলিয়ে পেশা হিসেবে লঞ্চের ক্যানটিনে ইলিশ ভাত বিক্রি করছেন ১৭ বছর। শনিবার থেকে সব বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, ব্যবসাও কী বন্ধ হবে? এমন প্রশ্নের জবাবে জহিরুল বলেন, ‘এই ট্রিপের পরেই ব্যবসা বন্ধ। সেতু হওয়ায় অনেক মানুষের উপকার হইছে। যাতায়াতের কষ্ট দূর হইব। আমরাও খুশি। লঞ্চ চলাচল বন্ধ হইলে আমাগো ব্যবসার জায়গাও তো বন্ধ হইব। এইটা নিয়া দুঃখ নাই।’ এমনটা জানিয়ে একটু মুচকি হাসি দিলেন তিনি।

দুঃখ নেই বলে মুচকি হাসি দেওয়ার পেছনে লুকিয়ে থাকা কিছু অনিশ্চয়তা ঢাকার চেষ্টা করলেও সেটা আর পারলেন না জহিরুল। জিজ্ঞেস করা হয়েছিল এই ব্যবসা বন্ধ হলে কী করবেন? জবাবে তিনি বললেন, ‘বাগেরহাটে চইলা যামু। আপাতত কী করমু না করমু ভাবি নাই। বিকল্প কোনো কাজও নাই। হয়তো কোনো গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে চাকরি করতে হইব।’

কানে ভেসে এলো যাত্রীদের উদ্দেশে বলা শরবত বিক্রেতার কথা। তিনি বলছেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর লঞ্চে লঞ্চে শরবত বিক্রি করি। কাল থেকে আর এই লঞ্চও থাকবে না, আপনারা শরবতও পাইবেন না। আইজকাই শ্যাষ সুযোগ, চাইলে খায়া দেখতে পারেন। আইজ পর্যন্ত এই শরবত খায়া কেউ দুর্নাম করতে পারে নাই। ভালো না লাগলে টাকা ফেরত।’ শরবত বিক্রেতার কাছে প্রশ্ন ছিল, কাল থেকে কী করবেন? এক কথায় উত্তর দিলেন, ‘জানি নাহ্‌।’ 

লঞ্চের বারান্দায় দাঁড়িয়ে অনেকেই পদ্মা সেতু দেখছিলেন। কেউ কেউ সেতু নিয়ে তাঁদের বিস্ময় প্রকাশ করছিলেন। লঞ্চ কিংবা ফেরিতে আরও একটি জনপ্রিয় খাবার—মিষ্টি পাউরুটি। কয়েকজন যাত্রী আবার হকারের থেকে বেশ কয়েক প্যাকেট পাউরুটি কিনে নির্দিষ্ট দামের থেকে বেশিই টাকা দিচ্ছিলেন। সহাস্যে পাউরুটি বিক্রেতা বললেন, ‘টাকা বেশি দিলেই কী মামা। আমরা তো জীবিকা হারাইলাম। আপনেগো তো সুবিধা হইল।’

এবার কথা হলো লঞ্চের মাস্টার ইমরান মোল্লার সঙ্গে। এই পথে এই লঞ্চে এটাই তার শেষ যাত্রা। এই লঞ্চ ঘাটে ভিড়িয়ে চলে যাবেন গ্রামের বাড়ি ফরিদপুরে। তাঁর কাছে সেতু নিয়ে জানতে চাইলে বলেন, ‘সেতুটা দরকার। কত মানুষের জীবন যে সহজ, সুন্দর হইব এটা কাইল থাইকা বোঝা যাইব। কর্ম হারানির কষ্ট নাই। কোথাও না কোথাও কাজ কইরা খাইতে পারমু। কিন্তু এত দিন এই ঘাটে, লঞ্চে যাগো সঙ্গে চলাচল, উঠাবসা করছি, তারা কে কই যাইব, কেউ জানে না। একটা পরিবারের মতো ছিলাম আমরা। এই পরিবারের জন্য মায়া লাগতেছে।’

অন্য সবকিছুর মতোই এই লঞ্চেরও আজ শেষ যাত্রা এই ঘাটে। লঞ্চের সঙ্গে শেষ হচ্ছে যুগের পর যুগ ধরে চলে আসা দুই পারের মানুষের দুর্ভোগ, ক্লান্তি, অসহায়ত্ব আর দীর্ঘদিনের যাতায়াতের লড়াই। এসব শেষ দিয়েই শুরু হচ্ছে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের নতুন জীবন-জীবিকা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

মোটরসাইকেলের ধাক্কায় প্রাণ গেল বৃদ্ধের

শরণখোলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি 
প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

বাগেরহাটের শরণখোলায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বাদল মুন্সী (৬০) নামের এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন জান্নাত আকন (২৫) নামের ওই মোটরসাইকেলের চালকও। আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে উপজেলার তাফালবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সরকারি প্রাথমিক স্কুলের সামনে আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত বাদল মুন্সীর বাড়ি রায়েন্দা ইউনিয়নের লাকুড়তলা-চালিতাবুনিয়া গ্রামে। আহত চালক জান্নাত আকনের বাড়ি উপজেলা সাউথখালী ইউনিয়নের সোনাতলা গ্রামে বলে জানা গেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাদল মুন্সী জুমার নামাজ পড়তে বেলা সোয়া ১টার দিকে বাড়ি থেকে বের হন। স্কুলের সামনে রাস্তা পার হতে গেলে মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগে তাঁর। এতে চালক ও বাদল মুন্সী দুজনে আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের শরণখোলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক বাদল মুন্সীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ছাড়া আহত চালককে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

শরণখোলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আরিফ মোহাম্মদ জানান, বাদল মুন্সীকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। চালকের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তাঁকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে খুলনা মেডিকেলে রেফার্ড করা হয়েছে।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামিনুল হক জানান, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ করা হয়নি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাতিয়ায় এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ

­হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি
হাতিয়ায় এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা
হাতিয়ায় এনসিপি নেতা হান্নান মাসউদকে হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ। ছবি: আজকের পত্রিকা

নোয়াখালীর হাতিয়ায় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যা ও জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সিনিয়র যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসউদকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রাণনাশের হুমকির প্রতিবাদে বিক্ষোভ হয়েছে।

আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় হাতিয়া থানার গেটে এই বিক্ষোভ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

বিক্ষোভকারীরা থানা গেটে অবস্থান নিয়ে ওসমান হাদি হত্যার সঙ্গে জড়িত খুনিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ অতিরিক্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করতে দেখা যায়।

উপজেলা এনসিপির প্রধান সমন্বয়কারী শামছল তিব্রিজের সভাপতিত্বে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন, সদস্যসচিব মো. আলা উদ্দিন, জাতীয় যুবশক্তির জেলা আহ্বায়ক নুরুল আমিন রিপন, উপজেলা আহ্বায়ক ইউসুফ রেজা, সদস্যসচিব সাইফুল ইসলাম রাকিব, কেন্দ্রীয় উপপ্রকাশনা ও গ্রন্থনা সম্পাদক হাফিজুর রহমান প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, হাতিয়ায় সন্ত্রাসীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, আর এখন প্রকাশ্যে এনসিপি প্রার্থী হান্নান মাসউদকে হত্যার হুমকি দেওয়া হচ্ছে।

তাঁরা হাদি হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারীসহ সব খুনিকে অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার, হান্নান মাসউদকে দেওয়া হুমকির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা এবং সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশি টহল জোরদারের দাবি জানান।

বক্তারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপরাধীদের গ্রেপ্তার করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। তাঁরা আশ্বস্ত করেন যে ওসমান হাদি হত্যা মামলার তদন্ত দ্রুত গতিতে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং হান্নান মাসউদকে হুমকির বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। দ্রুতই দোষীদের আইনের আওতায় আনা হবে বলে তারা প্রতিশ্রুতি দেন।

প্রশাসনের পক্ষ থেকে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাসের পর বিক্ষোভকারীরা সাময়িকভাবে কর্মসূচি স্থগিত করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। তবে এলাকায় এখনো থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

হাদির জানাজা ঘিরে যান চলাচল নিয়ে ডিএমপির নির্দেশনা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৮
শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: সংগৃহীত
শরিফ ওসমান হাদির জানাজা অনুষ্ঠিত হবে আগামীকাল জোহর নামাজের পর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: সংগৃহীত

ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শহীদ শরিফ ওসমান বিন হাদির জানাজার দিন রাজধানীতে বিশেষ ট্রাফিক নির্দেশনা জারি করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। আগামীকাল শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বাদ জোহর জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগমের সম্ভাবনা থাকায় ওই সময় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ ও আশপাশের এলাকায় যান চলাচল সীমিত থাকবে।

আজ শুক্রবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান (পিপিএম) স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জানাজা অনুষ্ঠানের সুবিধার্থে খেজুরবাগান ক্রসিং থেকে মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ পর্যন্ত সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে। ফলে শনিবার সকাল থেকে জানাজা ও দাফন সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত নগরবাসীকে বিকল্প সড়ক ব্যবহার করার জন্য বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বিকল্প সড়কসমূহ

১. মিরপুর রোড টু ফার্মগেট ভায়া মানিক মিয়া অ্যাভিনিউগামী যানবাহন মিরপুর রোড হয়ে উত্তর দিক থেকে আগত ফার্মগেট/সোনারগাঁও অভিমুখী যানবাহন গণভবন ক্রসিং-লেক রোড-উড়োজাহাজ ক্রসিং-বিজয় সরণি ক্রসিংয়ে ডানে মোড় নিয়ে ফার্মগেটের দিকে গমন করবে।

২. ফার্মগেট টু মানিক মিয়া অ্যাভিনিউগামী ভায়া ইন্দিরা রোডগামী যানবাহন ফার্মগেট হতে খেজুরবাগান ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং-বাঁয়ে মোড় নিয়ে লেক রোড-গণভবন ক্রসিংয়ের দিকে গমন করবে।

৩. ধানমন্ডি থেকে ফার্মগেটগামী যানবাহন ধানমন্ডি ২৭ থেকে আগত যানবাহন আসাদগেট-গণভবন ক্রসিং ডানে ইউটার্ন করে লেকরোড-উড়োজাহাজ ক্রসিং-বিজয় সরণি ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে ফার্মগেট ক্রসিংয়ের দিকে গমনাগমন করবে।

৪. আসাদগেট থেকে ফার্মগেট ক্রসিংগামী যানবাহন আসাদগেট-বাঁয়ে মোড় নিয়ে গণভবন ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে লেক রোড-উড়োজাহাজ ক্রসিং-বিজয় সরণি ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে ফার্মগেট ক্রসিংয়ের দিকে গমন করবে।

৫. এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে/ইন্দিরা রোড থেকে ধানমন্ডিগামী যানবাহন এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে/ইন্দিরা রোড থেকে আগত যানবাহন খেজুরবাগান ক্রসিং-ডানে মোড় নিয়ে উড়োজাহাজ ক্রসিং-বাঁয়ে মোড় নিয়ে লেক রোড-বায়ে মোড় নিয়ে আসাদগেট-সোজা পথে ধানমন্ডির দিকে গমন করবে।

৬. মিরপুর রোড থেকে ধানমন্ডি ২৭ গামী যানবাহন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউ থেকে ব্লকেড সরিয়ে ফেলা হবে বিধায় মিরপুর রোড থেকে দক্ষিণ অভিমুখী যানবাহন শ্যামলী-শিশুমেলা-গণভবন-আসাদগেট থেকে সোজা ধানমন্ডি ২৭-এর দিকে গমনাগমন করবে।

৭. এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েগামী যানবাহনসমূহকে জানাজা চলাকালীন ফার্মগেট এক্সিট র‍্যাম্প ব্যবহারের পরিবর্তে এফডিসি (হাতিরঝিল) র‍্যাম্প ব্যবহারের জন্য অনুরোধ করা হলো।

নিরাপত্তার স্বার্থে জানাজায় অংশগ্রহণকারীদের কোনো প্রকার ব্যাগ বা ভারী সামগ্রী বহন না করার আহ্বান জানানো হয়েছে। সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ও জননিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ নগরবাসীর সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করেছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সিলেট সীমান্তে খাসিয়াদের গুলিতে ২ জন নিহত

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট  
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১: ২৬
ফাইল ছবি
ফাইল ছবি

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ সীমান্তে পৃথক স্থানে ভারতীয় খাসিয়াদের গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার উপজেলায় সীমান্তের দুটি স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উত্তর রনিখাই ইউনিয়নের পূর্ব তুরুং গ্রামের মো. বোরহান উদ্দিনের ছেলে মো. আশিকুর রহমান এবং একই এলাকার বরম সিদ্দিপুরের আজমন আলীর ছেলে মো. ইয়াকুব আলী।

বিষয়টি নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম খান আজকের পত্রিকাকে বলেন, অবৈধভাবে ভারতের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে খাসিয়াদের সুপারিপুঞ্জিতে ঢুকলে তাঁরা গুলি ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন মারা যান। লাশ দুটি পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার দমদমিয়া সীমান্ত পিলার নম্বর ১২৬০/৪-এসের পাশ দিয়ে বাংলাদেশি কয়েক ব্যক্তি আনুমানিক এক থেকে দেড় কিলোমিটার ভারতের অভ্যন্তরে রাজন টিলার সুপারিবাগানে ঢোকে।

এ সময় সেখানে অবস্থানরত ভারতীয় বাগানমালিক খাসিয়ারা তাদের লক্ষ্য করে বন্দুকের কয়েক রাউন্ডটি গুলি ছোড়ে। এতে মো. আশিকুর রহমান গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। পরে তাঁর সঙ্গে থাকা অন্যরা লাশ বাংলাদেশে নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন।

অন্যদিকে একই দিন বেলা ৩টায় সীমান্ত পিলার ১২৫৫/২ এস থেকে আনুমানিক ৩০০ গজ ভারতের অভ্যন্তরে বরম সিদ্দিপুর নামক স্থান দিয়ে দুই ব্যক্তি সুপারিবাগানে ঢুকলে খাসিয়ারা তাঁদের লক্ষ্য করে ছররা গুলি ছোড়ে। এতে মো. ইয়াকুব আলী নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন। পরে স্থানীয়রা আহত ইয়াকুবকে উদ্ধার করে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

রাশিয়াকে এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ফেরত নিতে বলছে তুরস্ক, কিন্তু কেন

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার সম্পাদকের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার ফোনালাপ

তাহলে কি বাংলাদেশ-ভারত ফাইনাল

গণমাধ্যমে হামলা ও ময়মনসিংহে নৃশংসতায় জড়িতদের ছাড় দেওয়া হবে না, সরকারের বিবৃতি

‘কোম্পানির লোকেরাই আমার ভাইকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে’

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত