শরীয়তপুর-চাঁদপুর মহাসড়কে জমি অধিগ্রহণে জটিলতা, পালাল ঠিকাদার

শরীয়তপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৪, ১০: ৫৮
আপডেট : ১৩ জুন ২০২৪, ১১: ৪৫

প্রয়োজনীয় জমি অধিগ্রহণে ধীরগতির কারণে পাঁচ বছর ধরে থমকে আছে শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। দুই দফায় মেয়াদ বাড়ানোর পরও জমি বুঝে পায়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো। এর মধ্যে নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলে কাজ না করার সিদ্ধান্ত সড়ক বিভাগকে জানিয়ে দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।

এদিকে, এই পাঁচ বছরে সড়কটি সচল রাখতে অতিরিক্ত কয়েক কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে সড়ক বিভাগের। দ্রুত সময়ের মধ্যে জমি অধিগ্রহণ করে উন্নয়নকাজ শেষ করার দাবি জানিয়েছেন এই রুটে চলাচলকারী বিভিন্ন যানবাহনের চালক ও যাত্রীরা।

তবে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বলছে, জমি অধিগ্রহণ কোনো সমস্যা না। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান অন্য কোনো কারণে কাজ না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারে।

আর সড়ক বিভাগ বলছে, শিগগিরই পুনরায় ঠিকাদার নিয়োগ করে সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে।

শরীয়তপুর সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলা সদর উপজেলার মনোহর বাজার থেকে ভেদরগঞ্জ উপজেলার ইব্রাহিমপুরের মেঘনা নদীর ফেরিঘাট পর্যন্ত শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়কটির দৈর্ঘ্য ৩১ কিলোমিটার। খানাখন্দে ভরা সড়কটিতে প্রায়ই ঘটে দুর্ঘটনা। ২০১৯ সালের ১২ মার্চ সড়ক উন্নয়নের প্রকল্পটি একনেকে পাস হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় ৮৫৯ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। প্রথমে প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। ৯৫ দশমিক ৮৫ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত হয়।

২০১৯ সালের জুনে জমি অধিগ্রহণ কার্যক্রম শুরু করে জেলা প্রশাসন। এ পর্যন্ত মাত্র ২৯ দশমিক ২৫ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ শেষে সড়ক বিভাগকে বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। বাকি ৬৬ দশমিক ৬০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।

এদিকে জমি অধিগ্রহণ শুরুর পাশাপাশি সড়ক উন্নয়নে চারটি প্যাকেজে ঠিকাদার নিয়োগ করে সওজ। ৪ নম্বর প্যাকেজে ইব্রাহিমপুর ফেরিঘাট থেকে চরসেন্সাস মাদবরকান্দি পর্যন্ত ছয় কিলোমিটার সড়কের কাজ পেয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মীর হাবিবুল আলম অ্যান্ড রানা বিল্ডার্স। কিছু জমি বুঝে পেয়ে প্রতিষ্ঠানটি ফেরিঘাট থেকে কাজ শুরু করেছে। এ পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিংয়ের জন্য প্রস্তুত করেছে প্রতিষ্ঠানটি। তাদের কাজ চলমান রয়েছে।

চরসেন্সাস মাদবরকান্দি থেকে মনোহর বাজার পর্যন্ত তিনটি প্যাকেজের ২৫ কিলোমিটার সড়কের কাজ যৌথভাবে পেয়েছিল ওরিয়েন্ট ট্রেডিং অ্যান্ড বিল্ডার্স, রিলায়েবল বিল্ডার্স, মাইনুদ্দিন বাশি লিমিটেড, বদরুল ইকবাল, হাসান টেকনো বিল্ডার্স ও ওয়েস্টার্ন ট্রাভেশন অ্যান্ড শিপিং কোম্পানি নামের ছয়টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রথম মেয়াদে সড়কের জমি বুঝে না পেয়ে এ প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাজ শুরু করতে পারেনি। পরে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানো হয়। কিন্তু জমি বুঝে না পাওয়া এবং নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ার কথা বলে কাজ না করার কথা জানিয়ে সওজকে চিঠি দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো।

শরীয়তপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ নাবিল হোসেন বলেন, প্রকল্পের ৪ নম্বর প্যাকেজের ৬ কিলোমিটার অংশের কাজ চলমান রয়েছে। বাকি তিনটি প্যাকেজের জন্য পুনরায় ঠিকাদার নিয়োগ করে কাজ শুরু করা হবে।

জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নিজাম উদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘করোনা মহামারি ও অন্যান্য জটিলতার কারণে জমি অধিগ্রহণে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তবে সড়ক উন্নয়নকাজে সেটা কোনো সমস্যা ছিল না। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ না করে চলে গেছে। কী কারণে চলে গেছে, তা সড়ক বিভাগই ভালো বলতে পারবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত