গোলাম ওয়াদুদ, ঢাকা
২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে। মজার বিষয় হলো দুটি আন্দোলন থেকেই শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছে ফুটওভার ব্রিজ বা পদচারী-সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি শুনে। যেন দুর্ঘটনাস্থলে ফুটওভার ব্রিজ হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে।
প্রথম ঘটনার দিকে তাকানো যাক, ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ প্রতিদিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য ভোর ৭টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরার গেটে অপেক্ষা করছিলেন আবরার আহমেদ চৌধুরী। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আসার আগেই তাঁকে চাপা দেয় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস। আবরারকে সেদিন বাসে তুলে দিতে সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর বাবা। আবরার পড়তেন ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিউপি)। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা করেন আবরারের বাবা।
আবরার নিহত হওয়ার পর তাঁর সহপাঠীরা রাস্তা বন্ধ করে এর বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে। সেই আন্দোলন প্রগতি সরণি ছাপিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মধ্যেই বাসচালক সিরাজুলকে (২৯) আটক করে পুলিশ। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেদিন তিনি আবরার আহমেদ চৌধুরী নামে সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এর দুই বছর পর রাজধানীর গুলিস্তানে নটর ডেম শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়ি ধাক্কা দিলে সেখানেই মারা যায় নাঈম। তাঁর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। একে একে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজধানীতে। এবারও আন্দোলনের মূল দাবি নিরাপদ সড়ক।
এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ফজলে নূর তাপস ঘোষণা দেন, যেখানে নাঈমের মৃত্যু হয়েছে সেখানে ‘শহীদ নাঈম’ নামে একটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হবে।
উভয় প্রতিশ্রুতির পর শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছেন। তাঁদের ফিরতে হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই প্রতিশ্রুতিকে এমনভাবে সামনে হাজির করা হয়েছে, যেন ফুটওভার ব্রিজ করে দেওয়া হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে। শুধু এ দুই ক্ষেত্রেই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত শুধু রাজধানীতে ১১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছে।
এর মধ্যে পথচারী ৬২ জন, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ৩৩ জন এবং অন্যান্য যানবাহনের যাত্রী ও আরোহী ২৪ জন। এই প্রতিটি মৃত্যুতে মানুষ ফুঁসে ওঠেনি। যে দু-একটিতে মানুষ ফুঁসে ওঠে, তাতে ফুটওভার ব্রিজ ও স্পিড ব্রেকার বা গতিরোধক স্থাপনের মতো প্রতিশ্রুতি আসে সমাধান হিসেবে।
সঙ্গে আরও নানা কথা বলা হয়। এই যেমন ২০১৯ সালে দু-তিন দিনের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডিএনসিসির মেয়র। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘এ ঘটনায় আপনাদের মাঝ থেকে ২-৫ জনকে নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করব। প্রয়োজনে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। আপনাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করব।’ বলেছিলেন, ‘এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাসের মালিকদের সংযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব না। এ কাজটি আমরা খুব দ্রুত করব।’
কথিত সেই ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধনও করেছিলেন মেয়র। কিন্তু বাকি কোনো কিছুই আর সামনে আসেনি। সেই কমিটি, বাসমালিকদের সংযুক্ত করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ বা সড়কে শৃঙ্খলা আনয়ন—কোনোটিই হয়নি। এবারও নাঈমের মৃত্যুর পর প্রায় একই প্রতিশ্রুতি সামনে এসেছে। কিন্তু এই ফুটওভার ব্রিজ বা স্পিড ব্রেকারই কি সড়ককে নিরাপদ করার জন্য যথেষ্ট?
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজ নিরাপদ সড়কের জন্য যথেষ্ট নয়। সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা শুধু মুখ দিয়ে কথাই বলেন, কাজ করেন না। সিটি করপোরেশনের গাড়িচালকদেরই ঠিক করতে পারলেন না তাঁরা, আবার মানুষকে ঠিক করবেন কীভাবে। নেতারা সারা জীবনই খালি মুখ দিয়ে মানুষকে সান্ত্বনা দিয়ে যান।’ তিনি বলেন, ‘আর দেখুন সিটি করপোরেশনের গাড়ি রাতে চলার কথা। কিন্তু তারা সব সময় চালায়। তারা একেকজন পাওয়ার দেখায় যে, তারা মেয়রের লোক।’
আবার বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও পথচারীদের সেগুলো ব্যবহার করতে দেখা যায় কম। অনেক সময় ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের রাস্তা পার হতে দেখা যায়। রাস্তা পারাপারকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে ফুটওভার ব্রিজকে সমাধান হিসেবে দেখতে নারাজ ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজগুলো মানুষের জন্য খুব কষ্টদায়ক। আমি সব সময় সাজেস্ট করি আন্ডারপাস করার জন্য। আন্ডারপাস করলে মানুষের কষ্ট অর্ধেক হয়ে যায়। ফুটওভার ব্রিজ করতে নানা দিক ভাবতে হয়, বাস, ট্রাক ইত্যাদি, ট্রাকের ওপর মালপত্র নেয়। এগুলোর কথা চিন্তা করে এগুলো উঁচু করা হয়। তাই মানুষের উঠতে কষ্ট হয়। আর যদি আপনি আন্ডারগ্রাউন্ড করেন, একটা মানুষের যে উচ্চতা, তার থেকে ২ ফুট উঁচু রাখলেই চলে, যা মানুষের কষ্ট অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।’
দুর্ঘটনা ঘটলেই যে সমাধান হিসেবে ফুটওভার ব্রিজের কথা সামনে আসে—এ নিয়েও সমালোচনা করেন কাঞ্চন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এটা তাঁদের পলিসি। শহরে দুর্ঘটনা ঘটলে বলে ফুটওভার ব্রিজ; আর গ্রামে হলে স্পিড ব্রেকার। এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে শান্ত করার জন্য তারা বলে। যখন শান্ত হয়ে যায়, তখন আর এসবের দরকার পড়ে না। আবার যখন কেউ মরবে, তখন আবার উত্তপ্ত হয়ে যাবে। জনগণ তো বারবার একত্র হতে পারবে না। মেয়র সাহেবদের সময় পাঁচ বছর। যদি দুবার এই ঘটনা ঘটে, তাহলে তো দুবার ফুটওভার ব্রিজের কথা বলে সময় পার করে দিতে পারেন।’
নিরাপদ সড়ক নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে যাওয়া কর্মীরাও মনে করেন এই প্রতিশ্রুতিগুলো আদতে মানুষকে তাৎক্ষণিকভাবে শান্ত করার জন্যই করা হয়। সড়ক নিরাপদ করার কোনো উদ্যোগ প্রশাসনের নেই। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ওপরও কিছুটা দায় চাপাতে চান তাঁরা। তাঁদের ভাষ্য, মানুষ সবকিছুতেই তাৎক্ষণিক ফল চায়। তাঁরা ভাবেন, এক দিন ধর্মঘট করলেই, অবরোধ করলেই সমাধান আসবে। প্রশাসন এই সুযোগটিই নেয়। যেনতেনভাবে একটা সমাধান হাজির করে তারা। অথচ জনগণ এক হয়ে দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগ মেনে নিতে পারলে সমস্যা দূর হতো। না হলে বারবার ফুটওভার ব্রিজের মতো সমাধানই আসবে।
আবরার বা নাঈমের পরিবার কি এতে তাদের সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে থাকতে পারছেন? ভুলে থাকতে পারছে রাজীব ও দিয়ার পরিবার? সেটা অবশ্য ২০১৮ সালের ঘটনা। ২০১৮ সালে ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া নিহত হয় এবং ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এই সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে। সেই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা যে সংকট পেয়েছিল, সেই একই সংকট ২০২১ সালের শেষে এসেও বিদ্যমান। এখনো প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের গাড়িতে লাইসেন্সবিহীন চালক থাকে। এখনো বেপরোয়া যানবাহনের গতির প্রতিযোগিতায় জিম্মি সাধারণ যাত্রী ও পথচারী। নিরাপদ সড়কের যে প্রতিশ্রুতি ২০১৮ সালে সরকার দিয়েছিল, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বাস্তবায়ন হলে নাঈমকে চাপা দেওয়া গাড়িটি চালকই চালাতেন এবং তাঁর লাইসেন্সও থাকত। বাস্তবায়ন হলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এখনো রাস্তায় চলত না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘আগে সিস্টেমটাকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। আমাদের এখানে লিজ সিস্টেমে গাড়ি চলে, ব্যবসাটা করে চালক; মালিক এখানে নাই বললেই চলে। যখন চালক আয়ের চাপে গাড়ি চালান, তখন তিনি রাস্তার দিকে তাকাবেন নাকি যাত্রীর দিকে তাকাবেন? ওটাকে ঠিক না করে আমি যতই ফুটওভার ব্রিজ বানাই না কেন, তা হচ্ছে আনাড়িপনা।’
এসব প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আমরা যত ধরনের প্রতিশ্রুতি দেখি, তা উপসর্গ ধরে; কিন্তু রিফর্ম দরকার, এখানে বিনিয়োগ দরকার। পরিবহনে রিফর্ম দরকার। কেন চালক ব্যবসায় থাকবেন, তাঁকে তো সব সময় রাস্তার দিকে নজর রাখতে হবে। তাঁর তো একজন বেতনভোগী কর্মচারী হওয়ার কথা। কেন এটা হচ্ছে না, তার উত্তর জেনে যদি সাজানো যায় হাতিরঝিলের মতো; অবশ্য সেখানে কিছু সমস্যা থাকলেও বিশৃঙ্খলা হয় না।’ তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনাটা আমরা সুন্দর করলাম, সেলফ এনফোর্স হলো। এতে পুলিশ অত্যন্ত বেজার হয়ে গেছে। তার একটা ইনকাম ছিল, তা সেখানে নেই।’
বুয়েটের এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি, তাই রাস্তায় তারা প্রতিযোগিতা করছে। প্রতিযোগিতাবিহীন গণপরিবহনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ওপরমহলের লোক যদি না বোঝে, তাহলে সম্ভব না। বিশেষ করে মেয়র হচ্ছেন নগরপতি। তাঁর সব বোঝার দরকার নাই, তাঁর তো কিছু থিংক ট্যাংক থাকার কথা, যা দিয়ে তিনি দৃশ্যমান উন্নতি দেখাতে পারবেন।’
সবচেয়ে সরল জিনিস হলো অবকাঠামোর উন্নয়ন। এই অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্যে কিছু দৃশ্যমান উন্নয়নের দিকেই অধিকাংশের নজর রয়েছে উল্লেখ করে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আন্দোলনকে ঠেকা দেওয়ার জন্য ফুটওভার ব্রিজ সামনে আসে। আমরা মুভমেন্ট করছি, আমাদের বিবেকের ভিত নড়ে গেছে, তোমরা দেখিয়ে দিয়েছ—এসবই বোঝানো হয়। (সে সময়) আমার সবচেয়ে বেশি আগ্রহটা ছিল পুলিশের বিষয়ে। এর আগে যে বড় মুভমেন্ট হলো, তখন পুলিশের আইজিপি বলল, তাঁরা একটা মডেল করিডর করছেন, নির্দিষ্ট বাসের জায়গায় চিহ্ন দেওয়া হবে, সেখানেই দাঁড়াতে হবে, পুলিশের নিজস্ব লোক থাকবে। ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি।’
এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গটিও জড়িত একটু ঘুরপথে। বিষয়টি সামনে আনলেন পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপকই। তিনি বলেন, ‘বড় সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের পরিকল্পনায় অভাব আছে অনেক; কিন্তু কেউ বলছে না—এটা ঠিক করা যাবে না। সবাই বলছে ঠিক হবে। এখানেই সমস্যা। তখন আপনারা-আমরা কথা বললে সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকেরা মনে করে—“এরা উন্নয়ন চায় না, আমাদের লোকেরা তো সব ঠিকই করবে বলছে। ” আমাদের বিশৃঙ্খল অবস্থা রেখে যারা উন্নয়নের কথা বলে তারা এনজিওদের মতো। একসময় আমাদের অপুষ্টি দেখিয়ে বিদেশ থেকে লোন আনত তারা। যখন পুষ্টি সমস্যার সমাধান হলো, তখন তাদের ঝামেলা হয়ে গেল। সুতরাং যানজট বিশৃঙ্খলা যদি চলে যায়, তাহলে বিনিয়োগ তো আসবে না। কেন আমি হাতির ঝিলের মতো করব? পুলিশও এটা চাইবে না, যারা নেতা আছে, তাঁরাও এমনটা চাইবেন না। কারণ, চাঁদা তুলতে পারবে না।’
আরও পড়ুন:
২০১৯ সালের ১৯ মার্চ এবং ২০২১ সালের ২৪ নভেম্বর দুটি আলাদা তারিখ হলেও একটা মিল আছে। দুটি তারিখ বিশেষ হয়ে আছে দুটি মৃত্যু এবং তার পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কারণে। মজার বিষয় হলো দুটি আন্দোলন থেকেই শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছে ফুটওভার ব্রিজ বা পদচারী-সেতু তৈরির প্রতিশ্রুতি শুনে। যেন দুর্ঘটনাস্থলে ফুটওভার ব্রিজ হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে।
প্রথম ঘটনার দিকে তাকানো যাক, ২০১৯ সালের ১৯ মার্চ প্রতিদিনের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য ভোর ৭টার দিকে রাজধানীর প্রগতি সরণিতে বসুন্ধরার গেটে অপেক্ষা করছিলেন আবরার আহমেদ চৌধুরী। তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস আসার আগেই তাঁকে চাপা দেয় সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস। আবরারকে সেদিন বাসে তুলে দিতে সঙ্গে এসেছিলেন তাঁর বাবা। আবরার পড়তেন ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিউপি)। এ ঘটনায় গুলশান থানায় একটি মামলা করেন আবরারের বাবা।
আবরার নিহত হওয়ার পর তাঁর সহপাঠীরা রাস্তা বন্ধ করে এর বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে। সেই আন্দোলন প্রগতি সরণি ছাপিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে ছড়িয়ে পড়ে। আন্দোলনের মধ্যেই বাসচালক সিরাজুলকে (২৯) আটক করে পুলিশ। আন্দোলনের দ্বিতীয় দিন ঘটনাস্থলে যান ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবির মুখে সেদিন তিনি আবরার আহমেদ চৌধুরী নামে সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন।
এর দুই বছর পর রাজধানীর গুলিস্তানে নটর ডেম শিক্ষার্থী নাঈম হাসানকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের গাড়ি ধাক্কা দিলে সেখানেই মারা যায় নাঈম। তাঁর মৃত্যুর বিচারের দাবিতে রাস্তায় নামেন শিক্ষার্থীরা। একে একে সেই আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে পুরো রাজধানীতে। এবারও আন্দোলনের মূল দাবি নিরাপদ সড়ক।
এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার (২৫ নভেম্বর) ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ফজলে নূর তাপস ঘোষণা দেন, যেখানে নাঈমের মৃত্যু হয়েছে সেখানে ‘শহীদ নাঈম’ নামে একটি ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করে দেওয়া হবে।
উভয় প্রতিশ্রুতির পর শিক্ষার্থীরা ঘরে ফিরেছেন। তাঁদের ফিরতে হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এই প্রতিশ্রুতিকে এমনভাবে সামনে হাজির করা হয়েছে, যেন ফুটওভার ব্রিজ করে দেওয়া হলেই সড়ক নিরাপদ হয়ে যাবে। শুধু এ দুই ক্ষেত্রেই নয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনা হচ্ছে। রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের এক জরিপ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে গত ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত শুধু রাজধানীতে ১১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৯ জন নিহত হয়েছে।
এর মধ্যে পথচারী ৬২ জন, মোটরসাইকেলচালক ও আরোহী ৩৩ জন এবং অন্যান্য যানবাহনের যাত্রী ও আরোহী ২৪ জন। এই প্রতিটি মৃত্যুতে মানুষ ফুঁসে ওঠেনি। যে দু-একটিতে মানুষ ফুঁসে ওঠে, তাতে ফুটওভার ব্রিজ ও স্পিড ব্রেকার বা গতিরোধক স্থাপনের মতো প্রতিশ্রুতি আসে সমাধান হিসেবে।
সঙ্গে আরও নানা কথা বলা হয়। এই যেমন ২০১৯ সালে দু-তিন দিনের মধ্যে ফুটওভার ব্রিজ স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন ডিএনসিসির মেয়র। শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেছিলেন, ‘এ ঘটনায় আপনাদের মাঝ থেকে ২-৫ জনকে নিয়ে আমরা একটি কমিটি গঠন করব। প্রয়োজনে আপনাদের সঙ্গে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। আপনাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে আলোচনা করব।’ বলেছিলেন, ‘এ ধরনের সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বাসের মালিকদের সংযুক্ত করা হবে। এ ছাড়া সড়কে শৃঙ্খলা আনা সম্ভব না। এ কাজটি আমরা খুব দ্রুত করব।’
কথিত সেই ফুটওভার ব্রিজের উদ্বোধনও করেছিলেন মেয়র। কিন্তু বাকি কোনো কিছুই আর সামনে আসেনি। সেই কমিটি, বাসমালিকদের সংযুক্ত করে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ বা সড়কে শৃঙ্খলা আনয়ন—কোনোটিই হয়নি। এবারও নাঈমের মৃত্যুর পর প্রায় একই প্রতিশ্রুতি সামনে এসেছে। কিন্তু এই ফুটওভার ব্রিজ বা স্পিড ব্রেকারই কি সড়ককে নিরাপদ করার জন্য যথেষ্ট?
এ বিষয়ে নিরাপদ সড়ক চাইয়ের (নিসচা) প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজ নিরাপদ সড়কের জন্য যথেষ্ট নয়। সমস্যা হচ্ছে, তাঁরা শুধু মুখ দিয়ে কথাই বলেন, কাজ করেন না। সিটি করপোরেশনের গাড়িচালকদেরই ঠিক করতে পারলেন না তাঁরা, আবার মানুষকে ঠিক করবেন কীভাবে। নেতারা সারা জীবনই খালি মুখ দিয়ে মানুষকে সান্ত্বনা দিয়ে যান।’ তিনি বলেন, ‘আর দেখুন সিটি করপোরেশনের গাড়ি রাতে চলার কথা। কিন্তু তারা সব সময় চালায়। তারা একেকজন পাওয়ার দেখায় যে, তারা মেয়রের লোক।’
আবার বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও পথচারীদের সেগুলো ব্যবহার করতে দেখা যায় কম। অনেক সময় ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও ঝুঁকি নিয়ে পথচারীদের রাস্তা পার হতে দেখা যায়। রাস্তা পারাপারকে ঝুঁকিমুক্ত রাখতে ফুটওভার ব্রিজকে সমাধান হিসেবে দেখতে নারাজ ইলিয়াস কাঞ্চন। তিনি বলেন, ‘ফুটওভার ব্রিজগুলো মানুষের জন্য খুব কষ্টদায়ক। আমি সব সময় সাজেস্ট করি আন্ডারপাস করার জন্য। আন্ডারপাস করলে মানুষের কষ্ট অর্ধেক হয়ে যায়। ফুটওভার ব্রিজ করতে নানা দিক ভাবতে হয়, বাস, ট্রাক ইত্যাদি, ট্রাকের ওপর মালপত্র নেয়। এগুলোর কথা চিন্তা করে এগুলো উঁচু করা হয়। তাই মানুষের উঠতে কষ্ট হয়। আর যদি আপনি আন্ডারগ্রাউন্ড করেন, একটা মানুষের যে উচ্চতা, তার থেকে ২ ফুট উঁচু রাখলেই চলে, যা মানুষের কষ্ট অর্ধেকে নামিয়ে আনতে পারে।’
দুর্ঘটনা ঘটলেই যে সমাধান হিসেবে ফুটওভার ব্রিজের কথা সামনে আসে—এ নিয়েও সমালোচনা করেন কাঞ্চন। আজকের পত্রিকাকে তিনি বলেন, ‘এটা তাঁদের পলিসি। শহরে দুর্ঘটনা ঘটলে বলে ফুটওভার ব্রিজ; আর গ্রামে হলে স্পিড ব্রেকার। এগুলো তাৎক্ষণিকভাবে মানুষকে শান্ত করার জন্য তারা বলে। যখন শান্ত হয়ে যায়, তখন আর এসবের দরকার পড়ে না। আবার যখন কেউ মরবে, তখন আবার উত্তপ্ত হয়ে যাবে। জনগণ তো বারবার একত্র হতে পারবে না। মেয়র সাহেবদের সময় পাঁচ বছর। যদি দুবার এই ঘটনা ঘটে, তাহলে তো দুবার ফুটওভার ব্রিজের কথা বলে সময় পার করে দিতে পারেন।’
নিরাপদ সড়ক নিয়ে দীর্ঘদিন আন্দোলন করে যাওয়া কর্মীরাও মনে করেন এই প্রতিশ্রুতিগুলো আদতে মানুষকে তাৎক্ষণিকভাবে শান্ত করার জন্যই করা হয়। সড়ক নিরাপদ করার কোনো উদ্যোগ প্রশাসনের নেই। এ ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের ওপরও কিছুটা দায় চাপাতে চান তাঁরা। তাঁদের ভাষ্য, মানুষ সবকিছুতেই তাৎক্ষণিক ফল চায়। তাঁরা ভাবেন, এক দিন ধর্মঘট করলেই, অবরোধ করলেই সমাধান আসবে। প্রশাসন এই সুযোগটিই নেয়। যেনতেনভাবে একটা সমাধান হাজির করে তারা। অথচ জনগণ এক হয়ে দীর্ঘস্থায়ী দুর্ভোগ মেনে নিতে পারলে সমস্যা দূর হতো। না হলে বারবার ফুটওভার ব্রিজের মতো সমাধানই আসবে।
আবরার বা নাঈমের পরিবার কি এতে তাদের সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে থাকতে পারছেন? ভুলে থাকতে পারছে রাজীব ও দিয়ার পরিবার? সেটা অবশ্য ২০১৮ সালের ঘটনা। ২০১৮ সালে ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে দ্রুতগতির দুই বাসের সংঘর্ষে রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী রাজীব ও দিয়া নিহত হয় এবং ১০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। এই সড়ক দুর্ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নিহত দুই কলেজ শিক্ষার্থীর সহপাঠীদের মাধ্যমে শুরু হওয়া বিক্ষোভ পরে সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ে এবং নৌমন্ত্রীর পদত্যাগসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নামে। সেই আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীরা যে সংকট পেয়েছিল, সেই একই সংকট ২০২১ সালের শেষে এসেও বিদ্যমান। এখনো প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের গাড়িতে লাইসেন্সবিহীন চালক থাকে। এখনো বেপরোয়া যানবাহনের গতির প্রতিযোগিতায় জিম্মি সাধারণ যাত্রী ও পথচারী। নিরাপদ সড়কের যে প্রতিশ্রুতি ২০১৮ সালে সরকার দিয়েছিল, তা এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। বাস্তবায়ন হলে নাঈমকে চাপা দেওয়া গাড়িটি চালকই চালাতেন এবং তাঁর লাইসেন্সও থাকত। বাস্তবায়ন হলে ফিটনেসবিহীন গাড়ি এখনো রাস্তায় চলত না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. শামসুল হক বলেন, ‘আগে সিস্টেমটাকে সুশৃঙ্খল করতে হবে। আমাদের এখানে লিজ সিস্টেমে গাড়ি চলে, ব্যবসাটা করে চালক; মালিক এখানে নাই বললেই চলে। যখন চালক আয়ের চাপে গাড়ি চালান, তখন তিনি রাস্তার দিকে তাকাবেন নাকি যাত্রীর দিকে তাকাবেন? ওটাকে ঠিক না করে আমি যতই ফুটওভার ব্রিজ বানাই না কেন, তা হচ্ছে আনাড়িপনা।’
এসব প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আমরা যত ধরনের প্রতিশ্রুতি দেখি, তা উপসর্গ ধরে; কিন্তু রিফর্ম দরকার, এখানে বিনিয়োগ দরকার। পরিবহনে রিফর্ম দরকার। কেন চালক ব্যবসায় থাকবেন, তাঁকে তো সব সময় রাস্তার দিকে নজর রাখতে হবে। তাঁর তো একজন বেতনভোগী কর্মচারী হওয়ার কথা। কেন এটা হচ্ছে না, তার উত্তর জেনে যদি সাজানো যায় হাতিরঝিলের মতো; অবশ্য সেখানে কিছু সমস্যা থাকলেও বিশৃঙ্খলা হয় না।’ তিনি বলেন, ‘পরিকল্পনাটা আমরা সুন্দর করলাম, সেলফ এনফোর্স হলো। এতে পুলিশ অত্যন্ত বেজার হয়ে গেছে। তার একটা ইনকাম ছিল, তা সেখানে নেই।’
বুয়েটের এই অধ্যাপক বলেন, ‘আমরা প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছি, তাই রাস্তায় তারা প্রতিযোগিতা করছে। প্রতিযোগিতাবিহীন গণপরিবহনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি ওপরমহলের লোক যদি না বোঝে, তাহলে সম্ভব না। বিশেষ করে মেয়র হচ্ছেন নগরপতি। তাঁর সব বোঝার দরকার নাই, তাঁর তো কিছু থিংক ট্যাংক থাকার কথা, যা দিয়ে তিনি দৃশ্যমান উন্নতি দেখাতে পারবেন।’
সবচেয়ে সরল জিনিস হলো অবকাঠামোর উন্নয়ন। এই অবকাঠামো উন্নয়নের মধ্যে কিছু দৃশ্যমান উন্নয়নের দিকেই অধিকাংশের নজর রয়েছে উল্লেখ করে ড. শামসুল হক বলেন, ‘আন্দোলনকে ঠেকা দেওয়ার জন্য ফুটওভার ব্রিজ সামনে আসে। আমরা মুভমেন্ট করছি, আমাদের বিবেকের ভিত নড়ে গেছে, তোমরা দেখিয়ে দিয়েছ—এসবই বোঝানো হয়। (সে সময়) আমার সবচেয়ে বেশি আগ্রহটা ছিল পুলিশের বিষয়ে। এর আগে যে বড় মুভমেন্ট হলো, তখন পুলিশের আইজিপি বলল, তাঁরা একটা মডেল করিডর করছেন, নির্দিষ্ট বাসের জায়গায় চিহ্ন দেওয়া হবে, সেখানেই দাঁড়াতে হবে, পুলিশের নিজস্ব লোক থাকবে। ধাপে ধাপে এগিয়ে নেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু তা হয়নি।’
এ ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গটিও জড়িত একটু ঘুরপথে। বিষয়টি সামনে আনলেন পুরকৌশল বিভাগের এই অধ্যাপকই। তিনি বলেন, ‘বড় সমস্যাটা হচ্ছে, আমাদের পরিকল্পনায় অভাব আছে অনেক; কিন্তু কেউ বলছে না—এটা ঠিক করা যাবে না। সবাই বলছে ঠিক হবে। এখানেই সমস্যা। তখন আপনারা-আমরা কথা বললে সরকারের উচ্চপর্যায়ের লোকেরা মনে করে—“এরা উন্নয়ন চায় না, আমাদের লোকেরা তো সব ঠিকই করবে বলছে। ” আমাদের বিশৃঙ্খল অবস্থা রেখে যারা উন্নয়নের কথা বলে তারা এনজিওদের মতো। একসময় আমাদের অপুষ্টি দেখিয়ে বিদেশ থেকে লোন আনত তারা। যখন পুষ্টি সমস্যার সমাধান হলো, তখন তাদের ঝামেলা হয়ে গেল। সুতরাং যানজট বিশৃঙ্খলা যদি চলে যায়, তাহলে বিনিয়োগ তো আসবে না। কেন আমি হাতির ঝিলের মতো করব? পুলিশও এটা চাইবে না, যারা নেতা আছে, তাঁরাও এমনটা চাইবেন না। কারণ, চাঁদা তুলতে পারবে না।’
আরও পড়ুন:
ঝিনাইদহ সদরের নতুন বাড়ি এলাকায় দুই ট্রাকের সংঘর্ষে আল আমিন (২৫) নামের এক ট্রাকচালকের নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হন আরও ৩ জন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
১ ঘণ্টা আগেকুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সাজেদুল লস্কর (৩২) নামের এক ব্যক্তির লাঠির আঘাতে তার চাচাতো ভাই আপেল লস্করের (৫০) মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার ভোরে উপজেলার হোগলবাড়িয়া ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডি লস্কর পাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। সাজেদুল লস্করকে আটক করেছে পুলিশ। দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আউয়াল কবির বিষয়টি নিশ
১ ঘণ্টা আগেময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার রাজগাতি ইউনিয়নের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া সুখাইজুড়ি নদী একসময় প্রবহমান ছিল। এতে এলাকার মানুষ গোসল দিত, মাছ ধরত ও হাঁস পালন করত। সেই নদী দখল করে বাঁশ ও জালের বেড়া দিয়ে ছোট ছোট ঘের তৈরি করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা।
১ ঘণ্টা আগেকুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ এলাকার একটি রেস্তোরাঁর কর্মী তোফাজ্জল হোসেন। অর্থের অভাবে লেখাপড়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি তাঁর। ১৩ বছর বয়সে কাজ শুরু করেন রেস্তোরাঁয়।
১ ঘণ্টা আগে