ফরিদপুরে বিদেশি ফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে তরুণ উদ্যোক্তাদের

ফরিদপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ জুন ২০২৪, ১৬: ১৪
Thumbnail image

ফরিদপুরে বিদেশি ফল চাষে আগ্রহ বাড়ছে তরুণ উদ্যোক্তাদের। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হারে চাষ হচ্ছে ড্রাগন ফল। এ ছাড়া বিদেশি জাতের আঙুর ও মাল্টার চাষ হচ্ছে। তবে এগুলো অনেকে পরীক্ষামূলক চাষ করলেও সফলতা পেয়েছেন। 

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এ বছর ড্রাগন ফলের চাষ হয়েছে ৬ হেক্টর জমিতে, যা থেকে ২৫ মেট্রিকটন ফল উৎপাদন হয়েছে। প্রায় ২২ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের মাল্টা, যা থেকে ১৩৪ মেট্রিকটন ফল উৎপাদন হয়েছে। এ ছাড়া পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হচ্ছে বিদেশি জাতের আঙুর। তবে এর তেমন কোনো তথ্য নেই জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে। 

সরেজমিনে দেখা যায়, শহরতলির শোভারামপুর ইউনিয়ন পরিষদের কাছে এক বছর আগে ৭০ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে ‘থ্রি স্টার গ্রিন’ নামক বাগানে পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ শুরু করেছেন আহমেদ ফজলে রাব্বি ও সেলিম হোসেন নামে দুই তরুণ। প্রথম বছরেই তাঁরা সফলতার মুখ দেখছেন। আগামী বছর থেকে বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ করবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁদের বাগানে বাইকুনুর, ডিক্সন, ফ্যান্টাসি সিডলেস, নারু সিডলেস, মার্সেল ফোরাস, ভাইটালিয়া আরলি রেডসহ বিভিন্ন প্রজাতির আঙুরের চাষ শুরু করেছেন। 

আহম্মেদ ফজলে রাব্বি বলেন, ‘ছোটবেলা থেকেই গাছপালা রোপণের শখ আমার। শখের বশবর্তী হয়ে নিজ বাড়ির ছাদে বিভিন্ন ফলফলাদির গাছ লাগিয়েছি। এখন জমি বর্গা নিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ করে সফলতা পাওয়ায় আগামী বছর থেকে আমি বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ করব। এখন আমার বাগানে যে আঙুর হয়েছে, এগুলো সবই দর্শনার্থীদের জন্য, এ বছর আমি আঙুর বিক্রি করব না।’ 
 
ফরিদপুর গার্ডেনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সাগর নন্দী বলেন, ‘আমাদের দেশে শহর থেকে গ্রামাঞ্চল প্রায় সর্বত্রই এই ফলের চাহিদা রয়েছে। তবে আবহাওয়া, মাটি ও বাণিজ্যিক চাষের জ্ঞানের অভাবসহ নানা কারণে ফলটি চাষের আগ্রহ খুব একটা দেখা যায় না। তবে ফরিদপুরের আহম্মেদ ফজলে রাব্বি তাঁর বাগানে পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ করে সফল হয়েছেন তা অতুলনীয়। তিনি সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে আঙুর উৎপাদনে ব্যাপক সফলতা পাবেন বলে মনে করি।’ 

জমিতে চাষ করা আঙুর পরিচর্যা করছেন এক তরুণ উদ্যোক্তা। ছবি: আজকের পত্রিকাফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাগানটির কথা শুনেছি। তার বাগানের আঙুর খেতে সুস্বাদু ও মিষ্টি। বাগানটি পরিদর্শনের পাশাপাশি আঙুর চাষে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আমাদের পক্ষ থেকেও আঙুরচাষিকে সব ধরনের সহযোগিতা করা হচ্ছে। 

অন্যদিকে জেলা সদরের কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের শ্যামসুন্দরপুর গ্রামে কয়েক বছর আগে বারি-১ মাল্টার চাষ শুরু করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. আজিজুর রহমান। এই মাল্টা চাষে তিনি সফলতা পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। 

জেলার বোয়ালমারী উপজেলার চণ্ডীবিলা গ্রামে ড্রাগন ফল চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন আবুল হাসান মিলন নামের এক যুবক। নিজ কৃষিজমিতে ড্রাগন ফলের চাষ, চারা উৎপাদন ও ফল বিক্রি করে এখন স্বাবলম্বী তিনি। 

ড্রাগনচাষি মিলন বলেন, ‘ইউটিউবে দেখে দুই বছর আগে চাকরির পাশাপাশি শখের বশে ড্রাগন ফল চাষ শুরু করি। পরে নিজের কৃষিজমিতে প্রায় ২১ শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির বড় ড্রাগন গাছ তৈরি করেছি। এসব গাছে ধরেছে নানা রঙের ড্রাগন ফুল ও ফল। শুধু কৃষিজমিতে নয়, পাশাপাশি আরও দুই বিঘা জমিতে চাষ করব।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত