বংশাল থানার ওসিসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
Thumbnail image

পুলিশ হেফাজতে রাজধানীর লালবাগের ‘মি: বাংলাদেশ’ নামে পরিচিত বডিবিল্ডার ফারুক হোসেনকে হত্যার অভিযোগে বংশাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাইনুল ইসলামসহ ৫ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।  মামলাটি মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি) তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ বুধবার ঢাকার মহানগর দায়রা জজ মো. আসাদুজ্জামান এই নির্দেশ দেন।

মামলার অপর পুলিশ সদস্যরা হলেন বংশাল থানার উপপরিদর্শক ইমদাদুল হক, আবু সালেহ, মাসুদ রানা ও বুলবুল আহমেদ।

মহানগর দায়রা আদালতের অতিরিক্ত পিপি তাপস কুমার পাল বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেন। 

তিনি বলেন, আগামী ২৮ মার্চের মধ্যে আদালত তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল এর জন্য দিন ধার্য করেছেন।

গত মঙ্গলবার পুলিশ হেফাজতে মৃত ফারুকের স্ত্রী ইমা আক্তার হ্যাপী আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করেন। আজ বুধবার আদালত তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১২ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফারুক হোসেন খাজা দেওয়ান সিং লেন লালবাগের বাসা থেকে ব্যক্তিগত কাজে বের হন। এর এক ঘণ্টা পর ফারুক হোসেন স্ত্রী হ্যাপীকে ফোন দিয়ে জানায়, তাকে সন্দেহজনকভাবে কায়েতটুলী ফাঁড়ির কতিপয় পুলিশ ধরে নিয়ে আটকে রেখে নির্যাতন করছেন। 

খবর শুনে দুই বছরের সন্তানকে কোলে নিয়ে হ্যাপী সেখানে ছুটে যান। দেখেন, ফারুককে পুলিশ সদস্যরা মারধর করে আটকে রেখেছেন।

হ্যাপী সেখানে উপস্থিত এসআই ইমদাদুল হক, মাসুদ রানা, বুলবুল আহমেদসহ অন্যদের পা ধরে তার স্বামীকে ছেড়ে দেওয়ার আকুতি জানান। 

তখন ইমদাদুল হক তাকে বলেন, ‘ফারুক অনেক বড় ক্রিমিনাল, তাদের গালিগালাজ করেছে। এমনিতে ছাড়া যাবে না। ওকে ছাড়তে হলে এক লাখ টাকা লাগবে’। 

তখন হ্যাপী বলেন, তার স্বামী সিটি ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শোয়েবের ব্যক্তিগত দেহরক্ষী। আগে বডিবিল্ডার মিস্টার বাংলাদেশ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তিনটি ছোট ছোট সন্তান, তার আয়ের টাকায় সংসার চলে। তাকে ছেড়ে দিন। পরে এক লাখ থেকে কমিয়ে তারা ৫০ হাজার টাকা দাবি করেন। এরপর তাকে কুপ্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় আসামিরা ফারুককে ব্যাপক মারধর করে। 

আসামিরা বলেন- ফারুক একজন মাদক ব্যবসায়ী। তারা কিছু করতে পারবেন না। তাদের বড় স্যার জানেন কী করবেন। এর কিছুক্ষণ পর ফারুককে মোটরসাইকেলে করে বংশাল থানার দিকে নিয়ে যান তারা।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, হ্যাপী তখন ওসি মাইনুল হোসেনের হাত-পা ধরে আকুতি মিনতি করে স্বামীকে ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হয় না। 

তারা তাকে পরদিন সিএমএম আদালতে যোগাযোগ করতে বলেন। পরদিন হ্যাপী কোর্টে যান স্বামীর খবর নিতে। সেখানে অনেক কষ্টে স্বামীর সাক্ষাৎ পান। সে সময় মারধরের কথা স্ত্রীকে জানান ফারুক। তার কিছু হলে আদালতে বিচার চাইতে বলেন।

ফারুকের বিরুদ্ধে ১৫০ গ্রাম গাঁজার মামলা দেওয়া হয়েছে বলে জানতে পারেন হ্যাপী। ৫-৬ টার দিকে তিনি বাসায় ফিরে যান। ১৫ জানুয়ারি সকাল সাড়ে ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এক ব্যক্তি হ্যাপীকে জানান, ফারুক মারা গেছেন। হাসপাতালের মর্গে গিয়ে তিনি স্বামীর লাশ দেখতে পান। ফারুকের গলায়, বুকে, পিঠে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পান।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত