Ajker Patrika

রায়পুরায় আ.লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, টেঁটা ও গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ২

রায়পুরা (নরসিংদী) প্রতিনিধি 
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতাহতদের স্বজনদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা
নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতাহতদের স্বজনদের ভিড়। ছবি: আজকের পত্রিকা

নরসিংদীর রায়পুরার দুর্গম চরাঞ্চলে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববিরোধের জের ধরে সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে।

আজ শুক্রবার ভোরে উপজেলার চানপুর ইউনিয়নের মোহিনীপুর গ্রামে এ রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

নিহত ব্যক্তিরা হলেন মোহিনীপুর সদাগরকান্দি গ্রামের খোরশেদ মিয়ার ছেলে আমিন মিয়া (২৬) ও আব্দুল বারিকের ছেলে আবুল বাশার (৩৭)। তাঁরা দুজনই প্রবাসী আবদুস সালাম পক্ষের অনুসারী।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ও সাবেক ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ইউপির বর্তমান সদস্য সামসুর লোকজনের মাঝে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে একাধিকবার উভয় পক্ষের লোকজনের মধ্যে হামলা-ভাঙচুর ও হতাহতের ঘটনা ঘটে।

আওয়ামী সরকারের সময় আবদুস সালামের লোকজনের ভয়ে দীর্ঘদিন এলাকাছাড়া ছিলেন সামসুর লোকজন। গত ৫ আগস্টের পর সামসুর লোকজন বাড়িতে চলে এলে প্রতিপক্ষ এলাকাছাড়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৬-৭ মাস পর ঈদকে সামনে রেখে আবদুস সালামের লোকজন নিজ বাড়িতে উঠতে চাইলে বাধা দেন সামসুর লোকজন। এ নিয়ে শুক্রবার ভোরে উভয় পক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র, টেঁটা ও বন্দুক নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হন। এতে আবদুস সালামের অনুসারী আমিন মিয়া ও আবুল বাশার টেঁটা ও গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনা আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

আমিন মিয়ার বাবা খোরশেদ মিয়া বলেন, ‘আমরা পাঁচ-ছয় মাস ধরে বাড়িছাড়া। ঈদকে সামনে রেখে শুক্রবার ভোরে বাড়ি ফিরতে চেয়েছিলাম। এ সময় সামসু মিয়ার লোকজন আমাদের ওপর গুলি চালান। তিন মাস আগে আমার ছেলে আমিন মিয়া সৌদি আরব থেকে ছুটিতে এসেছিল, তাকে গুলি করে মাটিতে ফেলে গলা চিপে হত্যা করা হয়।’

আবদুস সালাম বলেন, ‘কুখ্যাত সন্ত্রাস সামসু এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। তিনি নিয়মিত অত্যাধুনিক অস্ত্রের মহড়া দেন। গত ছয় মাস ধরে প্রতিপক্ষের হামলার ভয়ে আমার অনুসারীরা এলাকা ছেড়ে অন্যত্র অবস্থান করছিলেন। ঈদকে সামনে রেখে আজ আমার লোকজন বাড়িতে ফিরছিল, তখন সামসুর লোকজন দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালান। এতে আমার পক্ষের দুজন নিহত এবং বেশ কয়েকজন আহত হন।’

রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা রাবেয়া সুলতানা বলেন, ‘মারামারির ঘটনায় মৃত অবস্থায় দুজনের লাশ হাসপাতালে আনা হয়। লাশ দুটির শরীরে বিভিন্ন স্থানে টেঁটা ও গুলির চিহ্ন রয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে।’

রায়পুরা থানার ওসি আদিল মাহমুদ বলেন, ‘সংঘর্ষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় দুজন নিহত হয়েছেন। বিস্তারিত পরে বলা যাবে।’

নরসিংদীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) সুজন চন্দ্র সরকার বলেন, ‘দুজন মারা গেছে, লাশ বুঝে পেয়েছি। এলাকার পরিস্থিতি এ মুহূর্তে শান্ত আছে। আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে পুলিশ কাজ করছে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত