শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার চাইতে থানায় গিয়ে মারধরের শিকার বাবা, এএসআই প্রত্যাহার

শিবালয় (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ আগস্ট ২০২২, ১৬: ৩৪
আপডেট : ২১ আগস্ট ২০২২, ১৭: ৩৫

শিশুকন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার বিচার চাইতে যাওয়া বাবাকে থানার ভেতরে বেধড়ক পেটানোর অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। গতকাল শনিবার রাতে মানিকগঞ্জের শিবালয় থানায় এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিবালয় থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আরিফ হোসেনকে রাতেই থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মানিকগঞ্জের শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরজাহান লাবনী। 

ভুক্তভোগী শিশুর বাবা জানান, স্ত্রীসহ তিনি ঢাকায় থাকেন। তাঁর পাঁচ বছরের মেয়ে থাকে শিবালয়ের গ্রামের বাড়িতে দাদির কাছে। ওই বাড়িতে গতকাল শনিবার স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা মো. মান্নান খানের চাচাতো ভাই রজ্জব খান তাঁর মেয়েকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। বিষয়টি হাতেনাতে ধরে ফেলেন শিশুটির দাদি। পরে গ্রামের মাতবরদের বিষয়টি জানানো হলেও অভিযুক্ত ব্যক্তিরা প্রভাবশালী হওয়ায় তাঁরা কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছিলেন না। উল্টো অভিযোগকারীকে নানাভাবে ভয়ভীতি দেখানো হয়। পরে শিবালয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেন তিনি। শনিবার সন্ধ্যায় অভিযোগের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে তাঁর মা ও ভুক্তভোগী শিশুকে নিয়ে থানায় যান। 

শিশুটির দাদি জানান, ছেলের সঙ্গে নাতনিকে কোলে নিয়ে তিনিও থানায় গিয়েছিলেন। এএসআই আরিফ যখন তাঁর ছেলেকে টেনে রুমে নিয়ে মারপিট করে তখন কয়েকজন পুলিশ সদস্যের হাত-পা ধরে তিনি কান্নাকাটি করেছেন। কিন্তু কেউ তাঁর ছেলেকে উদ্ধার করেনি। এ সময় তাঁর নাতনিও কান্নাকাটি করেছে। অনেক ভয় পেয়েছে সে। পরে ছেলেকে উদ্ধার করে শিবালয় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। 

এদিকে একজন বিচারপ্রার্থীর সঙ্গে পুলিশ সদস্যের এমন আচরণের বিষয়টি জানাতে রাতেই মা ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপার কার্যালয়ে যান শিশুটির বাবা। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে যান শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে। এ সময় মা ও এলাকার একজনের কাঁধে ভর করে ভুক্তভোগী শিশুটির বাবাকে অফিসে ঢুকতে দেখা যায়। শিবালয় সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরজাহান লাবনী ভুক্তভোগীদের অভিযোগ শুনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

এ বিষয়ে নূরজাহান লাবনী বলেন, ঘটনা জানার পর অভিযুক্ত আরিফ হোসেনকে রাতেই থানা থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থার জন্য সুপারিশ করা হবে। এ ছাড়া ধর্ষণ মামলার আসামিকেও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত