Ajker Patrika

গৃহকর্মীদের শ্রম আইনের আওতায় সুরক্ষার দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা
গৃহকর্মীদের শ্রম আইনের আওতায় সুরক্ষার দাবি

গৃহশ্রমিক নির্যাতন প্রতিরোধে যে নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়, তা নির্যাতন প্রতিরোধে যথেষ্ট নয়। শুধু নীতিমালা দিয়ে গৃহশ্রমিক নির্যাতন বন্ধ করা সম্ভব নয়। এ জন্য প্রয়োজন কঠোর আইন। 

আজ মঙ্গলবার ‘সময় এখন গৃহকর্ম ও গৃহকর্মীর সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতির: শ্রমিক হিসেবে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির’ শীর্ষক সংলাপে বক্তারা এসব কথা বলেন। বক্তারা গৃহকর্মকে শ্রম আইনে অন্তর্ভুক্তির দাবি জানান। মিরপুরের ইউসেপ বাংলাদেশ কার্যালয়ে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।

বক্তারা বলেন, প্রতিদিন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয় গৃহশ্রমিক নির্যাতন, হত্যা, ধর্ষণের ঘটনা। কিন্তু এসবের কোনো বিচার হয় না। নির্যাতনকারীরা ক্ষমতার জোরে আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে আসেন। 

অক্সফামের সহযোগিতায় কর্মজীবী নারী সুনীতি প্রকল্পের আওতায় সংলাপটি আয়োজন করে মিরপুর অঞ্চলের গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরাম। এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য কর্মজীবী নারীর প্রতিষ্ঠাতা শিরীন আক্তার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন মিরপুর অঞ্চলের গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরাম সভাপতি জাকিয়া সুলতানা। সংলাপের উদ্দেশ্য তুলে ধরেন কর্মজীবী নারীর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ফারহানা আফরিন তিথি। বক্তব্য দেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের সভাপতি রাজেকুজ্জমান রতন, অক্সফ্যামের প্রোগ্রাম কো–অর্ডিনেটর তারেক আজিজ, ইউসেপ বাংলাদেশের ডেপুটি প্রোগ্রাম অফিসার জুয়েল চন্দ্র সরকার প্রমুখ। 

গৃহশ্রমিকদের প্রতিবন্ধকতা তুলে ধরেন মিরপুর অঞ্চলের গৃহকর্মী আঞ্চলিক ফোরামের সহসভাপতি সোনিয়া বেগম এবং সাধারণ সম্পাদক সালমা বেগম। সোনিয়া বেগম বলেন, মীমাংসার চাপে মামলার গৃহশ্রমিক নির্যাতনের বিচার এগোয় না। থানা-পুলিশ আদালত সবাই নির্যাতনকারীর বক্তব্যকেই প্রাধান্য দেন। একপর্যায়ে গৃহশ্রমিকদের হার মানতে হয়।

বক্তারা বলেন, গৃহশ্রমিকদের অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা কারও একার বিষয় নয়, বরং নিয়োগকারী-গৃহশ্রমিক উভয়েরই দায়িত্ব ও কর্তব্য।

বক্তারা বলেন, গৃহকর্মীদের কোনো ছুটি নেই, কাজের নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা নেই, নেই স্বাস্থ্য সুবিধা, নেই কোনো নিয়োগপত্র এবং ন্যূনতম মজুরি। এছাড়াও গৃহকর্মীরা কর্মক্ষেত্রে যৌন হয়রানিসহ নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকে। তাদের কাজের তেমন সামাজিক মর্যাদা নেই এবং পেশা হিসেবে কাজের কোনো স্বীকৃতি নেই। গৃহকর্মীদের শ্রমিক হিসেবে বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এ অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় তারা শ্রমিকের অধিকার, সুযোগ ও সুবিধা বঞ্চিত।

সম্প্রতি বাংলাদেশ সরকার শ্রম আইন সংশোধন (নভেম্বর ২০২৩) করে সংসদে বিল আকারে পাস করেছে যেখানে শ্রমজীবী নারীর জন্য মাতৃত্বকালীন ছুটি ১১২ থেকে বাড়িয়ে ১২০ দিন করা হয়েছে। সংশোধিত শ্রম আইনে সুবিধা বঞ্চিত রয়েছেন গৃহকর্মীরা। শ্রম আইন সংশোধন বিল (২০২৩) সংসদে পাস করার পর অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতি কাছে পাঠানো হলে রাষ্ট্রপতি এতে সম্মতি না দিয়ে, পুনর্বিবেচনার জন্য সংসদে ফেরত পাঠিয়েছেন। ফলে এখনো সুযোগ আছে বলে মনে করেন তাঁরা।

বক্তারা বলেন, এই সুযোগ নিয়ে এই সকল শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে আরও গতিশীল করতে হবে এবং আইনের জন্য নীতিনির্ধারকদের ওপর চাপ তৈরি করতে হবে। দাবি প্রতিষ্ঠায় সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেন তাঁরা।

সংলাপে ন্যায্য কর্মঘণ্টা ও মজুরি কাঠামো প্রণয়ন এবং বাস্তবায়ন, যথাসময়ে বেতন প্রদান এবং প্রয়োজনীয় বিশ্রাম, ছুটি, বিনোদনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা, পেশাগত ও জীবন দক্ষতা প্রশিক্ষণের সুযোগ নিশ্চিত করা, গৃহকর্মী সুরক্ষা ও কল্যাণ নীতি ২০১৫-এর পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন দাবি তুলে ধরা হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

জাতীয় নির্বাচন: ভোট কমিটির নেতৃত্বে ডিসি–ইউএনওকে না রাখার চিন্তা

মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন, চিকিৎসার দায়িত্ব নিলেন তারেক রহমান

ঈদে পুলিশের সহযোগী ফোর্স হবে বেসরকারি নিরাপত্তাকর্মী, পাবে গ্রেপ্তারের ক্ষমতা

তিন নারী আমার জীবনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ: তারেক রহমান

গত দশ বছর ভিসা না পাওয়ার কারণে বাংলাদেশে আসতে পারিনি: মাইলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত