বাসটিতে তাঁকে ছয়বার ধর্ষণ করা হয়েছিল, জানালেন ভুক্তভোগী নারী

মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি
আপডেট : ০৪ আগস্ট ২০২২, ২২: ১৯
Thumbnail image

ঈগল এক্সপ্রেস পরিবহনের ছিনতাই করা সেই বাসে ওই নারীকে ছয়বার ধর্ষণ করা হয়েছিল। ডাকাতেরা তাঁর পাশাপাশি অন্য আরেক নারীর ওপরও চালিয়েছিল নির্যাতন। টাঙ্গাইলের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক রুমা খাতুনের কাছে দেওয়া জবানবন্দিতে এ তথ্য জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের কোর্ট ইন্সপেক্টর তানবির আহমেদ।

ওই নারীর দেওয়া জবানবন্দির বরাত দিয়ে তানবির আহমেদ জানান, রাত সাড়ে ১১টায় বাসটি সিরাজগঞ্জের একটি হোটেলে পৌঁছায়। যাত্রীদের খাওয়া শেষে রওনা হওয়ার পাঁচ মিনিট পরই রাস্তা থেকে ২০/২২ বছর বয়সের তিনজন বাসে ওঠেন। তাঁরা বাসে উঠেই জানান, সামনে তাঁদের আরও লোক আছেন। কিছু দূর যাওয়ার পর আরও চারজন ওঠেন। তাঁদের মধ্য থেকে একজন বলেন, ‘আমার লোক আছে আরও।’ কিছু দূর যাওয়ার পর আরও ছয়জন বাসযাত্রী ওঠেন। এভাবে মোট ১৩ জন বাসে ওঠেন। তাঁরা বাসের পেছনে বসেন। বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর তাঁদের মধ্যে তিনজন চালকের পাশে বনেটে গিয়ে বসেন। তাঁরা সামনে নামার কথা বলেন।

জবানবন্দিতে ওই নারী জানান, একপর্যায়ে চালককে উঠিয়ে তাঁদের মধ্য থেকে একজন গাড়ি চালানো শুরু করেন। তাঁরা বাসের চালক ও সুপারভাইজারকে পেছনে নিয়ে আসেন। এর পর প্রথমে পুরুষ যাত্রীদের হাত, মুখ ও চোখ বাঁধেন। পরে মেয়েদের বেঁধে ফেলেন। মোবাইল ফোন, গয়না, টাকাসহ সব লুট করে নেন। এ সময় অনেককে মারধর করেন তাঁরা। একপর্যায়ে ডাকাত দলের ছয়জন তাঁকে ধর্ষণ করে। ধর্ষণকালে তাঁর হাত ও চোখের বাঁধন খুলে যায়। একপর্যায়ে গাড়ির গতি কমে এবং ডাকাতেরা নামতে থাকেন। একসময় হঠাৎ ডাকাত দলের চালক গাড়ির জানালা দিয়ে নেমে যান। এ সময় গাড়ি খাদে পড়ে যায়। প্রথমে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন আসেন উদ্ধার করতে। যাত্রীরা জানালা দিয়ে বের হয়ে আসেন। পরে স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের কাছে তাঁরা ডাকাতির ঘটনা বলেন।

এর আগে ওই বাসের যাত্রী হেকমত আলী ও তাঁর স্ত্রী জেসমিনের বয়ানে জানা গেছে, তিন দফায় বাসটিতে ডাকাত দলের মোট ১১ জন সদস্য উঠেছিল। শেষবার দুজন ওঠার পরই তারা বাসটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়।

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল এক্সপ্রেস পরিবহনের একটি বাস চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বাসটি বঙ্গবন্ধু সেতু পার হওয়ার পর সিরাজগঞ্জ এলাকা থেকে যাত্রীবেশে ওঠা ডাকাতদল যাত্রীদের জিম্মি করে। পরে ডাকাতরা যাত্রীদের হাত, মুখ ও চোখ বেঁধে তাঁদের কাছে থাকা মোবাইল ফোন, টাকাসহ মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনিয়ে নেয়। পরে ডাকাতেরা এক নারী যাত্রীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ছিনতাই করা বাসটি টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ সড়কের রক্তিপাড়া এলাকায় গতি কমিয়ে অন্য একটি পরিবহনে করে পালিয়ে যায়। পরে রক্তিপাড়া বাসস্ট্যান্ডের দেড় শ গজ উত্তরে এক মসজিদের পশ্চিম পাশে বাসটি দুর্ঘটনার শিকার হয়।

আরও পড়ুন:

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত