তুরাগে বাসা থেকে নার্সের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার, আটক স্বামী

উত্তরা (ঢাকা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৬ ডিসেম্বর ২০২২, ১৪: ৪৪

রাজধানীর তুরাগের একটি ভাড়া বাসা থেকে তাহমিনা আক্তার (২৫) নামে এক নার্সের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় তাঁর স্বামী ওয়াশিউজ্জামানকে (২৯) আটক করেছে পুলিশ। আজ সোমবার দুপুরে আজকের পত্রিকাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন তুরাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মওদুদ হাওলাদার। 

এর আগে গতকাল রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে তুরাগ থানাধীন বাউনিয়া আদর্শপাড়ার মৃত আব্দুল জলিলের মালিকানাধীন বাড়ির নিচতলা থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। 

মৃত ওই নার্স গাজীপুর জেলার কালিগঞ্জ উপজেলার ডেমরা গ্রামের ফজলুল হক ও বিলকিস দম্পতির মেয়ে। বর্তমানে বাউনিয়ার ওই বাসায় স্বামীর সঙ্গে বসবাস করতেন তিনি। তিনি ও তাঁর স্বামী ওয়াশিউজ্জামান উত্তরা আধুনিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সিনিয়র স্টাফ নার্স হিসেবে কর্মরত। 

আটককৃত ওয়াশিউজ্জামান পাবনার চাটমোহর উপজেলার বালুরচর গ্রামের আব্দুল নুরের ছেলে। 

বাউনিয়া আদর্শপাড়ার বাসিন্দারা জানান, তাহমিনার সঙ্গে তাঁর স্বামীর কিছুদিন ধরে পারিবারিক কলহ চলছিল। গতকাল রাতে তাহমিনার স্বামী ওয়াশিউজ্জামান বাসায় ফিরে তাঁকে ডাকতে থাকেন। কিন্তু দরজা না খোলায় তাঁর সন্দেহ হয়। পরে পুলিশে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে আবার দরজা ভাঙেন। এ সময় ঘরের সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় তাহমিনার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তাহমিনার এক সহকর্মী বলেন, ‘তাহমিনা ওয়াশিউজ্জামানের দ্বিতীয় বউ। তাহমিনা যখন নার্সিংয়ে লেখাপড়া করত তখন থেকেই ওয়াশিউজ্জামানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। কিন্তু ওয়াশিউজ্জামান তখন বিবাহিত ছিল। সবকিছু জেনেই তাহমিনা ওয়াশিউজ্জামানকে বিয়ে করেছে। এ নিয়ে তাঁদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ চলছিল। গতকাল ওয়াশিউজ্জামানের প্রথম বউ বাউনিয়ার বাসায় আসেন। তখন তাঁদের তিনজনের মধ্যে প্রচণ্ড বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে প্রথম বউকে নিয়ে ওয়াশিউজ্জামান অন্য একটি ঘরে চলে যান। তখন তাহমিনা আরেকটি ঘরে একাই ছিল। এ ঘটনায় রাগে, অভিমানে ও ক্ষোভে তাহমিনা গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।’ 

এ ব্যাপারে ওসি বলেন, খবর পেয়ে ওই নার্সের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় তাঁর স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য নিহতের মরদেহ শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। 

ওসি আরও বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই নার্স আত্মহত্যা করেছেন। তবে কী কারণে আত্মহত্যা করেছেন তা এখনো জানা যায়নি। 

নিহতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের পর কিছু জানা গেছে কিনা-সে বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, তদন্ত স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। তদন্ত শেষ হওয়ার পর বিস্তারিত জানানো হবে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত