শেখ জাবেরুল ইসলাম, গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জের পারইহাটি এখন সবারই চেনা গ্রাম। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন সেই গ্রামের দিকে ছুটছে, ইউটিউবার আর ভিডিওগ্রাফারদের ভিড় তো লেগেই আছে। সবাই আসছে এক শিশু ‘সুপারম্যান’কে দেখতে। জুনায়েদ মোল্লা নামের ১২ বছর বয়সী সেই শিশুর বাস সেই গ্রামে, যে পুরো বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে কড়ে আঙুল দেখিয়ে উঠে বসেছিল কুয়েতগামী উড়োজাহাজে।
কিন্তু জুনায়েদের বিধি বাম, স্বপ্নের উড়োজাহাজ ডানা মেলার আগেই তাকে ধরা পড়তে হয়। এরপর নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে নামিয়ে আনেন, সেখান থেকে থানায়।
তবে জাহাজে উড়তে না পারলেও তাতে বেশ লাভই হয়েছে তার। আগে বাড়িতে তাকে রাখা হতো পায়ে শিকল বেঁধে। এখন মানুষের আনাগোনায় পায়ের শিকল খুলে দিয়েছেন বাড়ির লোকেরা। ঘরের ভেতরের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছে দ্বাদশবর্ষীয় দুরন্ত বালক। পুকুরে সাঁতার কাটছে, গোসল করছে, নৌকা নিয়ে বিলে ঘুরছে, খেলাধুলা করছে। এক নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে জুনায়েদ।
দেশের আর সব স্বাভাবিক শিশুর মতো এ রকমই শৈশব হওয়ার কথা ছিল জুনায়েদের, কিন্তু তার ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। ১৮ মাস বয়সে ফেলে চলে যায় মা। এরপর থেকে নিজের মতো করে বড় হয় জুনায়েদ। আদর বলতে কী, তা তার ভাগ্যে জোটেনি।
জুনায়েদের গ্রামটি পড়েছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে। বাবা ইমরান মোল্লা পাশের উজানী বাজারের সবজি বিক্রেতা। বাড়িতে জুনায়েদের সৎমা। সেই ঘরে আরও আছে এক ভাই, এক বোন।
ছোটবেলায় জুনায়েদকে বাড়ির পাশের খাঞ্জাপুর দারুল উলুম কারিয়ানা কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। সেখানে পড়ার সময় বেশ কয়েকটি অঘটন ঘটায়। এরপর মাদ্রাসা ছাড়তে হয়। পরে আরও কয়েকটি মাদ্রাসা বদল করে সে। এমন হতো যে দু-তিন মাস পরপর সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যেত। সর্বশেষ মাস ছয়েক আগে উজানী আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয় জুনায়েদকে। মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়ি আসার পর সেখানেও তাকে জেরার মুখে পড়তে হয়।
এরপর সে বাড়ি থেকে পালাতে শুরু করে। এভাবে কয়েকবার পালিয়ে যায়। একবার এসেছিল ঢাকায়, একবার মোংলা বন্দরে। পালিয়ে একবার রাজবাড়ী জেলায়ও চলে গিয়েছিল। সেখানে এক সরকারি কর্মকর্তার কাছে রাতে আশ্রয় নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে জুনায়েদের বাবা ও চাচা সেখানে যান। কিন্তু তাঁরা আনতে গেলে সেই কর্মকর্তার কাছ থেকেও পালিয়ে যায় সে। প্রায় দুই ঘণ্টা খোঁজার পর পাওয়া যায়। এরপর রাজবাড়ী থেকে তাকে বাড়িতে আনা হয়।
এ বছরের শুরুর দিকে মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকায় চলে আসে জুনায়েদ। সেখান থেকে দু-তিন দিন পর ফিরে আসে। বাড়িতে আসার পর তার চাচাতো ভাইয়ের টাকা চুরি করে আবার পালিয়ে যায়। পরে তাকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে ধরে এনে ঘরের ভেতরে পায়ে বেড়ি পরিয়ে তালা দিয়ে রাখা হয়। কয়েক দিন পর জুনায়েদ তার দাদির কাছে কান্নাকাটি করে বলে, সে আবার মাদ্রাসায় যাবে, আবার পড়াশোনা করবে। দাদি তার কথা বিশ্বাস করে তালা খুলে দেন। এরপর সে আবার পালানোর ফন্দি আঁটে।
৯ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে ১ হাজার টাকা চুরি করে একটি ইজিবাইকে করে জুনায়েদ আসে মুকসুদপুর উপজেলার ভাবরাসুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে। সেখানে তার দাদির বাড়ি। সেখানে দুই দিন থাকার পর ১১ সেপ্টেম্বর সকালে না খেয়ে, কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে পড়ে। প্রথমে যায় তার মায়ের কাছে আগদিয়া গ্রামে। মা তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন।
এরপর সে বের হয়ে ইজিবাইকে করে চলে আসে মুকসুদপুর কলেজ মোড়ের বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে ঢাকাগামী একটি বাসে উঠে পড়ে। বাসের সুপারভাইজার তাকে কোথায় যাবে জিজ্ঞেস করলে সে বলে, ঢাকায় যাব। ভাড়া চাইলে জুনায়েদ বলে, সে গরিব, তার কাছে কোনো টাকা নেই। বিনা পয়সায় সে ঢাকার সায়েদাবাদে আসে। এরপর সেখান থেকে ফার্মগেটগামী একটি বাসে উঠে আসে পান্থপথে, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে। সেখানেও আসে ভাড়া না দিয়ে। বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে গিয়ে কিছু সময় ঘোরাঘুরি করে। একটি খাবারের দোকান থেকে হালিমও খায়। তবে টাকা দিতে হয়নি। এক লোক তার খাবারের টাকা দিয়ে দেন।
বসুন্ধরা থেকে বের হয়ে জুনায়েদ এয়ারপোর্টে যাওয়ার বাসে উঠে পড়ে। এয়ারপোর্টের সামনে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। প্রথমে বিমানবন্দরের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। সেখানে ঢুকতে ব্যর্থ হলে সে উল্টো পথে উঠে আসে। এরপর নানা কৌশলে উড়োজাহাজ পর্যন্ত চলে যায়।
উড়োজাহাজের সিটে বসে সুপারম্যানের সিনেমাও দেখে জুনায়েদ। প্রায় আধা ঘণ্টা থাকার পর এক ব্যক্তি এসে বলেন, ওটা তাঁর সিট। পরে উড়োজাহাজের ক্রুরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, ‘আমার সঙ্গে বাবা আছে।’ প্রথমে উড়োজাহাজের ভেতরে তার বাবাকে খোঁজা হয়। এরপর তাকে নামিয়ে আনা হয়। পরদিন সকালে এয়ারপোর্ট থানায় জুনায়েদকে হস্তান্তর করা হয়। এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
গোপালগঞ্জের পারইহাটি এখন সবারই চেনা গ্রাম। দূরদূরান্ত থেকে লোকজন সেই গ্রামের দিকে ছুটছে, ইউটিউবার আর ভিডিওগ্রাফারদের ভিড় তো লেগেই আছে। সবাই আসছে এক শিশু ‘সুপারম্যান’কে দেখতে। জুনায়েদ মোল্লা নামের ১২ বছর বয়সী সেই শিশুর বাস সেই গ্রামে, যে পুরো বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থাকে কড়ে আঙুল দেখিয়ে উঠে বসেছিল কুয়েতগামী উড়োজাহাজে।
কিন্তু জুনায়েদের বিধি বাম, স্বপ্নের উড়োজাহাজ ডানা মেলার আগেই তাকে ধরা পড়তে হয়। এরপর নিরাপত্তাকর্মীরা তাকে নামিয়ে আনেন, সেখান থেকে থানায়।
তবে জাহাজে উড়তে না পারলেও তাতে বেশ লাভই হয়েছে তার। আগে বাড়িতে তাকে রাখা হতো পায়ে শিকল বেঁধে। এখন মানুষের আনাগোনায় পায়ের শিকল খুলে দিয়েছেন বাড়ির লোকেরা। ঘরের ভেতরের বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়েছে দ্বাদশবর্ষীয় দুরন্ত বালক। পুকুরে সাঁতার কাটছে, গোসল করছে, নৌকা নিয়ে বিলে ঘুরছে, খেলাধুলা করছে। এক নতুন জীবন ফিরে পেয়েছে জুনায়েদ।
দেশের আর সব স্বাভাবিক শিশুর মতো এ রকমই শৈশব হওয়ার কথা ছিল জুনায়েদের, কিন্তু তার ভাগ্যের চাকা ঘোরেনি। ১৮ মাস বয়সে ফেলে চলে যায় মা। এরপর থেকে নিজের মতো করে বড় হয় জুনায়েদ। আদর বলতে কী, তা তার ভাগ্যে জোটেনি।
জুনায়েদের গ্রামটি পড়েছে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নে। বাবা ইমরান মোল্লা পাশের উজানী বাজারের সবজি বিক্রেতা। বাড়িতে জুনায়েদের সৎমা। সেই ঘরে আরও আছে এক ভাই, এক বোন।
ছোটবেলায় জুনায়েদকে বাড়ির পাশের খাঞ্জাপুর দারুল উলুম কারিয়ানা কওমি মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয়। সেখানে পড়ার সময় বেশ কয়েকটি অঘটন ঘটায়। এরপর মাদ্রাসা ছাড়তে হয়। পরে আরও কয়েকটি মাদ্রাসা বদল করে সে। এমন হতো যে দু-তিন মাস পরপর সে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যেত। সর্বশেষ মাস ছয়েক আগে উজানী আজিজিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ভর্তি করানো হয় জুনায়েদকে। মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে বাড়ি আসার পর সেখানেও তাকে জেরার মুখে পড়তে হয়।
এরপর সে বাড়ি থেকে পালাতে শুরু করে। এভাবে কয়েকবার পালিয়ে যায়। একবার এসেছিল ঢাকায়, একবার মোংলা বন্দরে। পালিয়ে একবার রাজবাড়ী জেলায়ও চলে গিয়েছিল। সেখানে এক সরকারি কর্মকর্তার কাছে রাতে আশ্রয় নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে জুনায়েদের বাবা ও চাচা সেখানে যান। কিন্তু তাঁরা আনতে গেলে সেই কর্মকর্তার কাছ থেকেও পালিয়ে যায় সে। প্রায় দুই ঘণ্টা খোঁজার পর পাওয়া যায়। এরপর রাজবাড়ী থেকে তাকে বাড়িতে আনা হয়।
এ বছরের শুরুর দিকে মাদ্রাসায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে ঢাকায় চলে আসে জুনায়েদ। সেখান থেকে দু-তিন দিন পর ফিরে আসে। বাড়িতে আসার পর তার চাচাতো ভাইয়ের টাকা চুরি করে আবার পালিয়ে যায়। পরে তাকে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর থেকে ধরে এনে ঘরের ভেতরে পায়ে বেড়ি পরিয়ে তালা দিয়ে রাখা হয়। কয়েক দিন পর জুনায়েদ তার দাদির কাছে কান্নাকাটি করে বলে, সে আবার মাদ্রাসায় যাবে, আবার পড়াশোনা করবে। দাদি তার কথা বিশ্বাস করে তালা খুলে দেন। এরপর সে আবার পালানোর ফন্দি আঁটে।
৯ সেপ্টেম্বর বাড়ি থেকে ১ হাজার টাকা চুরি করে একটি ইজিবাইকে করে জুনায়েদ আসে মুকসুদপুর উপজেলার ভাবরাসুর ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামে। সেখানে তার দাদির বাড়ি। সেখানে দুই দিন থাকার পর ১১ সেপ্টেম্বর সকালে না খেয়ে, কাউকে কিছু না বলে বেরিয়ে পড়ে। প্রথমে যায় তার মায়ের কাছে আগদিয়া গ্রামে। মা তাকে বাড়ি ফিরে যেতে বলেন।
এরপর সে বের হয়ে ইজিবাইকে করে চলে আসে মুকসুদপুর কলেজ মোড়ের বাসস্ট্যান্ডে। সেখান থেকে ঢাকাগামী একটি বাসে উঠে পড়ে। বাসের সুপারভাইজার তাকে কোথায় যাবে জিজ্ঞেস করলে সে বলে, ঢাকায় যাব। ভাড়া চাইলে জুনায়েদ বলে, সে গরিব, তার কাছে কোনো টাকা নেই। বিনা পয়সায় সে ঢাকার সায়েদাবাদে আসে। এরপর সেখান থেকে ফার্মগেটগামী একটি বাসে উঠে আসে পান্থপথে, বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে। সেখানেও আসে ভাড়া না দিয়ে। বসুন্ধরা শপিং কমপ্লেক্সে গিয়ে কিছু সময় ঘোরাঘুরি করে। একটি খাবারের দোকান থেকে হালিমও খায়। তবে টাকা দিতে হয়নি। এক লোক তার খাবারের টাকা দিয়ে দেন।
বসুন্ধরা থেকে বের হয়ে জুনায়েদ এয়ারপোর্টে যাওয়ার বাসে উঠে পড়ে। এয়ারপোর্টের সামনে আসতে সন্ধ্যা হয়ে যায়। প্রথমে বিমানবন্দরের ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। সেখানে ঢুকতে ব্যর্থ হলে সে উল্টো পথে উঠে আসে। এরপর নানা কৌশলে উড়োজাহাজ পর্যন্ত চলে যায়।
উড়োজাহাজের সিটে বসে সুপারম্যানের সিনেমাও দেখে জুনায়েদ। প্রায় আধা ঘণ্টা থাকার পর এক ব্যক্তি এসে বলেন, ওটা তাঁর সিট। পরে উড়োজাহাজের ক্রুরা তাকে জিজ্ঞাসা করলে সে বলে, ‘আমার সঙ্গে বাবা আছে।’ প্রথমে উড়োজাহাজের ভেতরে তার বাবাকে খোঁজা হয়। এরপর তাকে নামিয়ে আনা হয়। পরদিন সকালে এয়ারপোর্ট থানায় জুনায়েদকে হস্তান্তর করা হয়। এয়ারপোর্ট থানার পুলিশ তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করে।
অন্তর্বর্তী সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ এম হাসান আরিফ বলেছেন, ‘আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত ভিসার ব্যাপারে কিছুটা কড়াকড়ি করেছে। তারা আমাদের ভিসা দেবে কি না, এটা তাদের বিষয়।’
৫ ঘণ্টা আগেনাটোরের বড়াইগ্রামে আওয়ামী লীগের এক সমর্থককে বেধড়ক মারধরের অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। এ ঘটনায় পুলিশ আহত ওই যুবককেই আটক করে। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান
৫ ঘণ্টা আগেঅন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, ‘আপনারা ভালো কাজ করলে আমাদের সমর্থন পাবেন। জনগণের বিরুদ্ধে অবস্থান নিলে এক সেকেন্ডও সময় নেব না আপনাদের বিরুদ্ধে দাঁড়াতে। দায়সারা কথা বলে ছাত্র-জনতার সঙ্গে প্রহসন করবেন না।
৬ ঘণ্টা আগেলক্ষ্মীপুরে একটি তাফসিরুল কোরআন মাহফিল ও ইসলামি সংগীত সন্ধ্যা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১১ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার মোহাম্মদিয়া জামে মসজিদ মাঠে এই আয়োজন করা হয়েছিল। মাহফিলে জামায়াত নেতাকে প্রধান অতিথি করায় বিএনপি সেটি বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
৭ ঘণ্টা আগে