Ajker Patrika

এখন আর মরদেহ নৌকায় আনতে হবে না গ্রামবাসীর

ঘিওর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
এখন আর মরদেহ নৌকায় আনতে হবে না গ্রামবাসীর

প্রায় তিন যুগ আগে তিন গ্রামের বাসিন্দাদের সহযোগিতায় একটি কবরস্থান করা হয়। কিন্তু মধ্য দিয়ে একটি খাল বয়ে যাওয়ায় বর্ষা মৌসুমে নৌকা করে পার হয়ে, আর শুষ্ক মৌসুমে ২-৩ কিলোমিটার ঘুরে মরদেহ নিতে হতো কবরস্থানে। অবশেষে রাস্তাসহ ওই খালটির ওপর নির্মাণ করা হয়েছে একটি কাঠের সেতু। এতে খুশি এলাকার বাসিন্দারা। 

আজ রোববার সকালে মানিকগঞ্জের ঘিওরে বানিয়াজুরী ইউনিয়নের কাকজোর গ্রামে ওই রাস্তা ও কাঠের সেতু উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হামিদুর রহমান।

ইউনিয়ন উন্নয়ন তহবিল প্রকল্পের আওতায় আরসিসি কলামসহ রাস্তা ও ২০ মিটার দৈর্ঘ্যের কাঠের সেতুটি ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকায় নির্মাণ করেছেন বানিয়াজুরী ইউপি চেয়ারম্যান এস আর আনসারী বিল্টু।

স্থানীয়রা বলছে, কাকজোর গ্রামবাসীর সহায়তায় সামাজিক কবরস্থান উপজেলার অন্যতম বৃহৎ একটি কবরস্থান। তিন যুগ ধরে এখানে কাকজোরসহ পাশের শোলধারার কিছু অংশ ও বেড়িবাঁধ গ্রামের মানুষের মরদেহ দাফন করা হয়। জনপদ থেকে কবরস্থানের মাঝ দিয়ে বয়ে গেছে গভীর খাল। বর্ষা মৌসুমে বিকল্প রাস্তা না থাকায় নৌকায় করে মরদেহ নিয়ে দাফন করতে হয় এলাকাবাসীকে। 

আর শুকনো মৌসুমে গভীর খালের পাড় ডিঙিয়ে খাটিয়া নিয়ে ওঠা কষ্টসাধ্য ছিল। ফলে ২-৩ কিলোমিটার ঘুরে মরদেহ আনতে হতো কবরস্থানে। ভোগান্তি বয়ে প্রিয়জনদের লাশ কবরস্থানে দাফন করা এই গ্রামবাসী রাস্তা ও একটি ব্রিজ নির্মাণের দাবিতে সোচ্চার ছিল। অবশেষে দাবি পূরণ হওয়ায় তাঁরা খুশি।

কাকজোর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মতিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কবরস্থানে যেতে খালের ওপর সংযোগ ব্রিজ ও আধা-কিলোমিটার রাস্তা না থাকায় অনেক কষ্টে প্রিয়জনদের মরদেহ দাফন করতে হতো। এখন আমরা এলাকাবাসীরা এই ভোগান্তি থেকে রক্ষা পাব।’ 

এই গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা হাবিবুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আধুনিক যুগে বাস করেও রাস্তার অভাবে লাশ নৌকায় করে নিয়ে কবরস্থানে দাফন করা কতটা কষ্টকর, তা বলে বোঝানো যাবে না। আমার এক স্বজন মারা যাওয়ার পর তাঁর মরদেহ নৌকায় করে নিয়ে এই কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। মরদেহ নৌকায় ওঠানো-নামানো অনেক ভোগান্তির ছিল। এখন কবরস্থানে যাওয়ার রাস্তা ও সংযোগ ব্রিজ তৈরি হওয়ায় আমরা খুশি।’

এ বিষয়ে বানিয়াজুরী ইউপি চেয়ারম্যান এস আর আনসার বিল্টু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমি চেয়ারম্যান হওয়ার আগেই নিয়ত ছিল এই কবরস্থানে যাওয়ার পথে মানুষের কষ্ট লাঘব করার। কাজটি করতে পেরে আমি অনেক আনন্দিত।’

উদ্বোধনের সময় আরও উপস্থিত ছিলেন—উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাহাঙ্গীর আলম, ঘিওর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাম প্রসাদ সরকার দীপু, সাংবাদিক রিপন আনসারী, ইউপি সচিব রাশেদ রায়হান, ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম, সাজ্জাদ হোসেন, তাহমিনা আক্তার, নাট্যব্যক্তিত্ব গিনি আলম, সমাজসেবক মোফাজ্জল হোসেন, আল আজাদ, খন্দকার তুহিন প্রমুখ।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম ছেলে বিয়ে করে পরিবারহারা, স্বামী পরিত্যক্ত হয়ে ঢাকায় এসে ধর্ষণের শিকার

সামরিক বাহিনীর ৮ সংস্থা ও স্থাপনার নাম পরিবর্তন

মাদারীপুরে ৩ খুন: ঘটনার পেছনে পা ভাঙার প্রতিশোধসহ ৩ কারণ

মসজিদে লুকিয়েও রক্ষা পেলেন না স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও তাঁর ভাই, ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দিল প্রতিপক্ষ

ধর্ষণের শিকার নারী-শিশুর ছবি-পরিচয় প্রকাশ করলেই আটক

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত