Ajker Patrika

ছেলেকে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবি, ফোন পেয়েই মৃত্যুর কোলে মা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি  
অপহরণের শিকার মাহিন রহমান (২৩) ও আহসান হাবীব (২৫)। ছবি: আজকের পত্রিকা
অপহরণের শিকার মাহিন রহমান (২৩) ও আহসান হাবীব (২৫)। ছবি: আজকের পত্রিকা

গাজীপুরের শ্রীপুরে এক কারখানার দুই শ্রমিককে অস্ত্রের মুখে তুলে নিয়ে মুক্তপণ দাবি করে অপহরণকারীরা। অপহরণকারীদের মুক্তিপণ দাবির ফোন পেয়েই এক মা মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন। অপহরণকারীরা দুজনকে তুলে নিয়ে বেদম মারধর করে বাড়িতে মুক্তিপণ দাবি করে ফোন দেয়। সন্তান অপহরণের শিকার এমন খবর পেয়ে এক নারী (মা) মারা যান। পরে একজনের মায়ের মৃত্যুর খবরে বিনা মুক্তিপণে ছাড়া মেলে অপহরণের শিকার দুজনের।

আজ শনিবার শ্রীপুর পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের লোহাগাছ ফালু মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গতকাল শুক্রবার রাতে কাজ থেকে ফেরার সময় অপহরণের শিকার হয় কারখানার দুই শ্রমিক। মায়ের মৃত্যুর খবরে আজ শনিবার সকালে তাঁদের ছেড়ে দেয় অপহরণকারীরা। পরে আহত অবস্থায় তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এর আগে অপহরণকারীরা তাঁদের কাছ থেকে টাকাসহ মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়।

অপহরণের শিকার দুজন হলেন রাজশাহী সদরের রাজপাড়া গ্রামের সেলিম রেজার ছেলে মাহিন রহমান (২৩) এবং অন্যজন একই গ্রামের নবী হোসেনের ছেলে আহসান হাবীব (২৫)। তাঁরা দুজন লোহাগাছ ফালু মার্কেট এলাকার এসকেবি স্টেইনলেস স্টিল মিলস কারখানায় চাকরি করেন।

এ ঘটনায় আজ দুপুরে কারখানার ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের শ্রীপুর মডেল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। তাতে দুজনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন লোহাগাছ গ্রামের এম সালামতের ছেলে কাদের মিয়া (২৭) ও একই গ্রামের তাজউদ্দীনের ছেলে শাকিল আহাম্মেদ (৩০)। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ব্যক্তিরা পলাতক।

কারখানার ব্যবস্থাপক আবদুল কাদের বলেন, দিনের নিয়মিত ডিউটি শেষ করে ওই দুই শ্রমিক (যুবক) ভাড়া বাসায় ফেরার সময় বেশ কয়েকজনে মিলে দুজনকে জোর করে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের ওপর বেদম মারধর করা হয়। এ সময় তাঁদের সঙ্গে থাকা স্মার্টফোন ও টাকা নিয়ে যায়। এরপর রাত আড়াইটার দিকে আহসান হাবীবকে মারধর করে তার পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে ১ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। ফোন পেয়ে অপহরণের শিকার আহসান হাবীবের মা অচেতন হয়ে পড়েন। রাত আড়াইটার তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর শুনে অপহরণকারীরা শনিবার সকাল ১০টার দিকে মুক্তিপণের টাকা ছাড়াই দুজনকে ছেড়ে দেয়।

অপহরণের শিকার আহসান হাবীবের বড় ভাই আল আমীন বলেন, ‘ছোট ভাইকে অপহরণের খবর শুনতে পেয়ে মা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপর রাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। সন্তানের বিপদে আমার মা নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেননি। অবশেষে মারাই গেলেন আমাদের মা।’

এর আগে, গত ১২ জানুয়ারি মাওনা চৌরাস্তার উড়ালসড়কের পাশ থেকে এক নিউরোসার্জনকে অপহরণ করা হলে একদিন পর ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দিয়ে বাসায় ফেরেন তিনি। ওই ডাক্তারের নাম আমিনুর রহমান। তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজের নিউরোসার্জন বিভাগের চিকিৎসক। মাওনা এলাকার লাইফকেয়ার প্রাইভেট ক্লিনিকে চেম্বার শেষ করে ঢাকার বাসায় আসার গাড়ির জন্য অপেক্ষা করার সময় তিনি অপহরণের শিকার হন। এরপর পরিবারের কাছে ফোন দিয়ে কয়েক দফায় অপহরণকারীরা ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মুক্তিপণ নেন।

শ্রীপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবদিন মণ্ডল বিষয়টি নিশ্চিত করে আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। আহত ব্যক্তিদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পুলিশ কাজ শুরু করেছে। এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত