গাজীপুরের শ্রীপুরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের সংঘর্ষে কমপক্ষে ৯ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় উভয় পক্ষ থানায় পাল্টাপাল্টি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

গতকাল শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ধনুয়া গ্রামের কাচারীপাড়া দাখিল মাদ্রাসা মোড়ে ওই ঘটনা ঘটে। 

আহতরা হলেন, একই গ্রামের আব্দুল মান্নান মানিক (৩০), মো. মেজবাহ উদ্দিন (৩০), মোকলেছুর রহমান (২৮) তুহিন (২৪), আবুল হাসেম (৪০) আহসান হাবিব আসু (৫০), ফারুক (৩৮), ফাইজুদ্দিন (৫২) মাজেদা (৪৩)। তাঁদের মধ্যে আব্দুল মান্নান মানিক, আবুল হাসেম, তুহিন ও আসুর অবস্থা আশঙ্কাজনক। 

ব্যবসায়ী মেজবাহ উদ্দিন বলেন, ‘দীর্ঘ দিন থেকে আমরা স্থানীয় কয়েকজন মিলে একটি কারখানায় নির্মাণ সামগ্রীসহ লেবার সরবরাহ করে আসছি। গতকাল শুক্রবার রাতে ব্যবসায়ী সংক্রান্ত আলোচনা হচ্ছিল আমাদের মধ্যে। এ সময় আমাদের প্রতিপক্ষ আমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে আমাদের ওপর এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। তাতে আমাদের ব্যবসায়ী সহযোগী মানিক ও তুহিন গুরুতর আহত হয়েছেন।’ 

মানিকের চোখে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। এ ছাড়া অপরপক্ষ হামলা চালিয়ে চারটি মোটরসাইকেল ব্যাপক ভাঙচুর করে। 

স্থানীয় মালেকের বাড়িতেও হামলা চালিয়ে বাসার মূল ফটক ভাঙচুর করা হয়। গুরুতর আহতদের উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। 

অপর পক্ষের আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, ‘অভিযুক্তরা দীর্ঘ দিন পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শত্রুতা পোষণ করে আসছে। এর ধারাবাহিকতায় গতকাল শুক্রবার রাতে স্থানীয় হাজী মার্কেট থেকে নিজস্ব ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে বাড়ি ফিরছিলাম। পথে মাদ্রাসা মার্কেট পৌঁছানো মাত্রই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর করে। তাতে আমি, আমার ছোট ভাই আহসান হাবিব আসুসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছি।’ 

শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বিজন কুমার আজকের পত্রিকাকে বলেন, মারধরের ঘটনায় আহত বেশ কয়েকজনকে তাঁদের স্বজনেরা হাসপাতালে নিয়ে আসার পর প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে চারজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় গাজীপুর শহীদ তাজ উদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

গাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সিরাজুল হক বলেন, ‘মারধরের বিষয়টি জানার পরপরই আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ব্যবসা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে সমস্যা হয়েছে। বিষয়টি ভিন্ন খাতে নিতে একটি পক্ষ উঠে পড়ে লেগেছে। সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় পক্ষের লোকজন আহত হয়েছে।’ 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম নাসিম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘খবর পেয়ে রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ভাঙচুর করা মোটরসাইকেল থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে উভয় পক্ষ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’