Ajker Patrika

বেলাবয় হারিয়ে যাওয়ার পথে মৃৎশিল্প 

প্রতিনিধি, বেলাব (নরসিংদী) 
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২১, ১২: ১৬
বেলাবয় হারিয়ে যাওয়ার পথে মৃৎশিল্প 

আমাদের অতীত ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে মৃৎশিল্পের কথা। এমন একসময় ছিল যখন আমাদের পরিবারের নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সব কাজে মাটির তৈরি জিনিসের বিকল্প কিছুই ছিল না। কিন্তু কালের পরিক্রমায় বাহারি ডিজাইনের প্লাস্টিক, মেলামাইন, সিরামিক ও সিলভারের জিনিসের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় মাটির তৈরি জিনিসপত্রের চাহিদা কমে যাচ্ছে। যার কারণে এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত মানুষের যেমন কমে গেছে কাজের পরিধি, তেমনি কমেছে তাঁদের উপার্জন। জীবন–জীবিকার জন্য বাধ্য হয়ে অনেকে এই পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন। এ জন্য হারিয়ে যাওয়ার পথে নরসিংদীর বেলাব উপজেলার শত বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মৃৎশিল্প।

জানা যায়, উপজেলার পাটুলী ইউনিয়নের সুটুরীয়া গ্রামের কুমারপাড়ায় শত বছরের অধিক সময় ধরে এই মৃৎশিল্পের কাজ চলে আসছে। এমন একসময় ছিল যখন এই কুমারপাড়ার সব পরিবারের মৃৎশিল্পের নির্ভর করে জীবিকা চলত। বর্তমানে এই কুমারপাড়ায় ৪০টি পরিবার বসবাস করলেও ১০টির বেশি তাদের বংশীয় পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশা শুরু করেছে। বর্তমানে এ পাড়ায় ২০-২৫টি পরিবার অতিকষ্টে এ পেশা ধরে রেখেছে।

মৃৎশিল্পী মিন্টু চন্দ্র পাল জানান, পিতা–মাতার কাছ থেকে দেখে দেখে তিনি এই মাটির কাজ শিখেছেন। যখন তিনি এ কাজ শিখেছেন, তখন তাঁদের তৈরি মাটির জিনিসের চাহিদা ছিল ব্যাপক। কিন্তু বর্তমান সময়ে দিন দিন মাটির জিনিসের চাহিদা কমে যাচ্ছে। যার কারণে কমে যাচ্ছে তাঁদের আয়-উপার্জনও। ফলে এক প্রকার দুঃখ–কষ্টের মাঝেই যাচ্ছে তাঁদের জীবন।

মিন্টু চন্দ্র আরও জানান, একসময় তাঁদের গ্রামের পাশের বিভিন্ন জমি থেকে বিনা মূল্যে মাটি সংগ্রহ করতে পারতেন। কিন্তু এখন দেশে বেড়েছে ইটের ভাটা। যার কারণে কৃষকেরা আর বিনা মূল্যে তাঁদের মাটি দিচ্ছেন না। ইটের ভাটায় মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন তাঁরা। এ জন্য মাটি কিনে এসব জিনিসপত্র তৈরি করে আগের মতো লাভ হয় বলে জানান তিনি।

নিশা রানী নামের এক মৃৎশিল্পী জানান, একসময় তাঁদের এখানে ভাত, তরকারির পাতিল, বড় কলস, মটকিসহ বিভিন্ন ধরনের হাঁড়ি–পাতিল আর বাচ্চাদের খেলনা মিলিয়ে ৪০-৫০ প্রকার জিনিস তৈরি করা হতো। কিন্তু এখন মাত্র ৮-১০ প্রকার জিনিস তৈরি হচ্ছে। কেবল বৈশাখ মাস এলেই মেলা উপলক্ষে বিভিন্ন প্রকার জিনিস তৈরির চাপ বাড়ে। এ ছাড়া বছরের অন্যান্য সময়ে কাজের তেমন চাপ থাকে না।

বেলাব উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন শাহিন জানান, বেলাবয় ঐতিহ্যবাহী এ মৃৎশিল্প টিকিয়ে রাখতে সাধ্যমতো কারিগরদের পাশে থাকবে প্রশাসন। তাঁদের পণ্য উৎপাদনে কাঁচামালের সমস্যা থাকলে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

আমিনুল ইসলাম নন, শিক্ষা উপদেষ্টা হচ্ছেন অধ্যাপক আবরার

গণপিটুনিতে নিহত জামায়াত কর্মী নেজাম ও তাঁর বাহিনী গুলি ছোড়ে, মিলেছে বিদেশি পিস্তল: পুলিশ

বিএনপির দুই পেশাজীবী সংগঠনের কমিটি বিলুপ্ত

বসুন্ধরায় ছিনতাইকারী সন্দেহে ২ বিদেশি নাগরিককে মারধর

উপদেষ্টা হচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী আমিনুল ইসলাম

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত