মা ও যমজকে নিয়ে দুটি অ্যাম্বুলেন্স গেল দুই ঠিকানায়

যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭: ১৯
আপডেট : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১৭: ৩৮

দুটি অ্যাম্বুলেন্সে দুই ঠিকানায় পাঠানো হলো বাবার পরিচয় না পাওয়া যশোর জেনারেল হাসপাতালে থাকা যমজ দুই সন্তান ও মানসিক ভারসাম্যহীন তাদের মাকে। যমজ দুই সন্তানকে পাঠানো হলো খুলনা ছোট মণি নিবাসে আর ভারসাম্যহীন তাদের মাকে ঢাকা কাশিমপুর সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে। আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতাল থেকে দুটি অ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের সরকারি দুই আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়।

গাড়িতে ওঠার আগে যমজ শিশুদের পরানো হয় গোলাপি রঙের নতুন জামা। আর মানসিক ভারসাম্যহীন তাদের মাকে পরানো হয় লাল আর সবুজের প্রিন্ট শাড়ি।

এদিকে আইনি জটিলতায় নবজাতকদের এত দিন নাম রাখা না গেলেও এদিন সকালে শিশু দুটির নাম রাখা হয়ে। হাসপাতাল ছাড়ার আগে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে যমজ দুই শিশুর নাম রাখা হয় মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশা।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায়, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুণ অর রশিদ, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক ডা. ইয়াকুব আলী মোল্লা, জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম ও হাসপাতাল সমাজসেবা কার্যালয়ের সমাজসেবা কর্মকর্তা রুবেল হাওলাদার।

পরে যশোরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদারও তাদের বিদায় জানান। যমজ দুজনের মা মোছা. মাহিনুরকে নিয়ে গাজীপুরের কাশিমপুর সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রের উদ্দেশে যাত্রা করেন জেলা প্রতিবন্ধীবিষয়ক কর্মকর্তা মুনা আফরিণ এবং শিশু মোহাম্মদ মুসা ও মোছা. মাইশাকে নিয়ে খুলনার ছোটমণি নিবাসে যান সমাজসেবা অধিদপ্তরের চাইল্ড প্রটেকশন কর্মকর্তা খালেদা আক্তার।

যশোর-৪ আসনের সংসদ সদস্য রণজিৎ কুমার রায় বলেন, বাঘারপাড়ায় মানসিক ভারসাম্যহীন নারী যমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে হাসপাতালে তাদের সুচিকিৎসার বন্দোবস্ত করে মাকে গাজীপুরে আশ্রয়কেন্দ্রে এবং দুই সন্তানকে খুলনার ছোটমণি নিবাসে পাঠানো হয়।

মা ও যমজকে নিয়ে দুটি অ্যাম্বুলেন্স গেল দুই ঠিকানায়। ছবি: আজকের পত্রিকাযশোরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, মানসিক ভারসাম্যহীন মা ও তাঁর দুই সন্তানকে পাওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের চিকিৎসা ও দেখাশোনার ব্যবস্থা করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশনায় জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মা ও দুই সন্তানকে দুটি সরকারি আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। রাষ্ট্র তাদের দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে।

এর আগে গত সোমবার দুপুরে যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভায় মা ও সন্তানদের এই দুই আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালত-১-এর বিচারক ওই নারী ও দুই নবজাতকের বিষয়টি নিষ্পত্তি করার বিষয়ে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডকে দায়িত্ব দেন।

এদিকে ১৮ দিন ধরে যশোর জেনারেল হাসপাতালে যমজ সন্তান ও তাদের মা চিকিৎসাধীন ছিলেন। তাদের স্বজনদের সন্ধান পাওয়া গেলেও তারা দায়িত্ব নিতে রাজি হননি।

৩ সেপ্টেম্বর যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নতুন গ্রামের জামিরুল ইসলামের পরিত্যক্ত ঘরে মানসিক ভারসাম্যহীন ওই নারী যমজ সন্তান প্রসব করেন। পরে গৃহকর্তা জামিরুল ওই নারীকে বাঘারপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। ওই দিন সন্ধ্যায় তাদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। এর পর থেকে মা ও দুই নবজাতক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত