৯ বছর পর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতাকে গুমের মামলা, আসামি হানিফসহ ১২ আ.লীগ নেতা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২০: ৩২
আপডেট : ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২১: ১২

কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন সবুজকে গুমের ঘটনায় কুষ্টিয়ায় মামলা হয়েছে। মামলায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফ ও তাঁর চাচাতো ভাই শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতাসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১২ নেতা–কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও বেশ কয়েকজনকে।

আজ সোমবার দুপুরে কুষ্টিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি করেন সবুজের ভাই আরিফুল হোসেন সজিব। আদালত মামলাটি গ্রহণ করে কুষ্টিয়া মডেল থানা-পুলিশকে এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করার আদেশ দিয়েছেন। 

বাদীর আইনজীবী খন্দকার সিরাজুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ঘটনার সময় ২০১৫ সাল। 

মামলার অন্য আসামিরা হলেন কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাবু, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজ, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হাজি রবিউল ইসলাম, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতার ছোট ভাই আতিকুর রহমান আতিক, শহর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজের ছোট ভাই হাফিজুর রহমান হাফিজ, কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হালিমুজ্জামান হালিম, কুষ্টিয়া শহরের কুঠিপাড়া এলাকার আবু তাহের, কুষ্টিয়া শহরের পেয়ারাতলা এলাকার রমজান হোসেন, কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার চক হরিপুর গ্রামের শেখ আফাজ উদ্দিনের ছেলে রবিউল হোসেন। 

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, কুষ্টিয়া জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক শেখ সাজ্জাদ হোসেন সবুজ কুষ্টিয়া পৌরসভার মেয়র প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ১৫ আগস্ট সবুজ দলীয় নেতা–কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মজমপুর গেটস্থ বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে শ্রদ্ধা জানাতে যান। ওই সময় কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজের নেতৃত্বে একটি সশস্ত্র এবং উসকানিমূলক মহড়ার কারণে উপস্থিত অন্য ত্যাগী নেতা–কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন এবং মোমিজের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় কুষ্টিয়া পৌর এলাকার ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সবুজ নামে এক যুবক নিহত হন। 

ওই সময় আওয়ামী লীগ কর্মী সবুজ নিহত হওয়ার পর উপস্থিত সব নেতা–কর্মী যে যার মতো স্থান ত্যাগ করলে কুষ্টিয়া স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা শেখ সাজ্জাদ হোসেন সবুজও বাড়িতে চলে যান বিশ্রামের জন্য। ঘটনার দিন দুপুর ২টার দিকে মামলার ১ নম্বর আসামি জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৎকালীন সভাপতি আক্তারুজ্জামান লাবু, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান আতার ছোট ভাই আতিকুর রহমান আতিক, শহর আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোমিনুর রহমান মোমিজের ছোট ভাই হাফিজুর রহমান হাফিজ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের তৎকালীন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হালিমুজ্জামান হালিম, কুঠিপাড়া এলাকার আবু তাহের, পেয়ারাতলা এলাকার রমজান হোসেন এবং খোকসা উপজেলার রবিউল হোসেন সবুজের বাড়িতে যান এবং রাগান্বিত হয়ে সবুজকে বলেন, ‘তোমাকে এখনই নেতার (হানিফের) বাড়িতে যেতে হবে।’ 

এ সময় সবুজ তাঁর স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জিনিয়াকে সঙ্গে নিয়ে হানিফের বাড়িতে যান। হানিফ সবুজকে বলেন, ‘যদি বাঁচতে চাও তাহলে আমার কথামতো চলতে হবে। আর র‍্যালিতে নিহত সবুজের পরিবার তোমার বিরুদ্ধে মামলা মামলা করবে। তুমি লাবুর (১ নম্বর আসামি) সঙ্গে গাজীপুরের ড্রিম স্কয়ার রিসোর্টে চলে যাও। আমি রিসোর্টের মালিককে বলে দিচ্ছি সেখানে তুমি নিরাপদে থাকতে পারবে।’ 

হানিফের কথামতো অন্য আসামিদের মদদে রিসোর্টে ওঠেন সবুজ। সেখানে অবস্থানকালে অন্য আসামিদের মদদ ও যোগসাজশে পূর্বপরিকল্পিতভাবে সবুজকে ১০–১২ জন সাদাপোশাকধারী রিসোর্ট থেকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। 

মামলার বিষয়ে স্ত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস জিনিয়া বলেন, ‘আমার স্বামী অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা হয়ে উঠেছিলেন। কুষ্টিয়া পৌর মেয়র পদে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু বিষয়টি হানিফসহ কেউই মেনে নিতে পারেননি। সেই কারণে আমার স্বামীকে পরিকল্পিতভাবে অপহরণ করে গুম করে রাখা হয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত