ঝিনাইদহ প্রতিনিধি
ঝিনাইদহের ছয়টি বাঁওড় ইজারা না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন হালদার সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীরা। কয়েক দিন ধরে একাধিকবার বাঁওড়পাড়ে সমাবেশ করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন তাঁরা। আজ সোমবার কোটচাঁদপুরের বলুহর প্রজেক্ট এলাকায় হাজির হন ৭৭ বছর বয়সী শ্রী নরেন হালদার। যাঁর জীবনের ৬৮ বছরই কেটেছে জাল দড়া টেনে। এ সময় তিনি পেটে লাথি না মারার আকুতি জানান।
সুধীর হালদার নামে আরেক মৎস্যজীবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে বলেছি, হয় বিষ দেন, না হয় বাঁওড়ের মালিকানা দেন।’ বাপ-দাদার আমলের বলুহর বাঁওড় ইজারা দেওয়া হলে তাঁরা স্বেচ্ছায় আত্মাহুতি দিতে বাধ্য হবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকে হালদার সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীরা বাঁওড়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এই বৃদ্ধ বয়সেও বৃহৎ একটি পরিবার এ মাছ ধরা পেশার আয়ের ওপর নির্ভরশীল। জীবনের শেষে এসে তাঁর জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন বলুহর বাঁওড়ের মালিকানা হারাতে বসেছি।’
বিষয়টি স্বীকার করে জেলা বিল বাঁওড় প্রকল্প পরিচালক মো. আলফাজ উদ্দিন শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মৎস্য বিভাগ চেষ্টা করছে বর্তমান প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে চলমান নিয়মে মাছের চাষ করার। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয় এগুলো ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়িত হলে হাজারো হালদার পরিবার পথে বসবেন, এটা সত্য।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় অধীনে ঝিনাইদহের ছয়টি বাঁওড় ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাঁওড়গুলো হচ্ছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাঠগড়া, ফতেপুর, কোটচাঁদপুরের বলুহর, জয়দিয়া, কালীগঞ্জের মর্জাদ এবং বেড়গোবিন্দপুর বাঁওড়। এসব বাঁওড়ের মোট জলাধার হচ্ছে ১ হাজার ১৩৭ হেক্টর। এসব বাঁওড় এলাকায় ৭৬৭ পরিবারের প্রায় ৫ হাজার সদস্য বাঁওড় থেকে আয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। মৎস্যজীবীরা সরকারের ‘জাল যার জলা তার’ এই নীতির ওপর ভর করে ১৯৭৯ সাল থেকে বাঁওড়ে মাছ ধরে আসছিলেন। এখন ইজারা দেওয়া হলে জেলার ৬ বাঁওড়ের ওপর নির্ভরশীল ৮ শতাধিক জেলে পরিবারের পেশা হারাবেন।
মৎস্যজীবী সুধীর হালদার বলেন, ‘বাঁওড় ইজারা দিলে সরকারের এককালীন বেশি টাকা আয় হলেও একদিকে যেমন বাঁওড়গুলো ক্ষতির মুখে পড়বে, তেমনি মালিকানা হারিয়ে পথে বসবে বাঁওড়ের ওপর নির্ভরশীল হাজারো পরিবার। ফলে ধ্বংস হবে জীববৈচিত্র্য। বাঁওড়গুলো চলে যাবে প্রভাবশালী মধ্যস্বত্বভোগীদের দখলে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ইতিমধ্যে একটি মাফিয়া চক্র বাঁওড়গুলো ইজারা নিতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। ভুঁইফোড় সমিতির নামে কোটি কোটি টাকার ডাক তুলে সিডি জমা দেওয়া হয়েছে। কোটচাঁদপুরের শীতল হালদার নামে এক ব্যক্তি ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বিপরীতে সিডি জমা দিয়েছেন।’
ফতেপুর বাঁওড় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি সুশান্ত কুমার হালদার বলেন, ‘বাঁওড়গুলো ঘিরে তাঁরা জীবন নির্বাহ করেন। ফতেপুর ও কাঠগড়া বাঁওড়ে ১৫০ জন মৎস্যজীবী রয়েছেন। বলুহর ও জয়দিয়া বাঁওড়ে কাজ করেন আরও ৪৭২ জন। মর্জাদ বাঁওড়ে আছেন ১৪৫ জন ও বেড়গোবিন্দপুর বাঁওড়ে ২১০ জন মৎস্যজীবী নিয়মিত কাজ করেন। বাঁওড় সরকারের হাত থেকে চলে গেলে এঁরা সবাই বেকার হয়ে পড়বেন। আর এঁদের ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছেন আরও কমপক্ষে ৫ হাজার মানুষ, যারা পথে বসবে।’
জয়দিয়া বাঁওড়ের মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি নিত্য হালদার বলেন, ‘তাঁরা বাঁওড়ে কোনো প্রকার সার-ওষুধ ছাড়াই মাছ চাষ করেন। পাশাপাশি ট্যাংরা, পুঁটি, শিং, কই, পাবদা, খলিশা, বাটাসহ নানান প্রজাতির দেশি মাছ বাঁওড়ে লালন করে বিক্রি করেন। বাঁওড়ের পানিতে থাকা জীববৈচিত্র্য অক্ষুণ্ন রেখে তাঁরা মাছের চাষ করেন। কিন্তু ইজারা দিলে কৃত্রিম চাষ শুরু হবে, হারিয়ে যাবে জীববৈচিত্র্য ও দেশীয় মাছ।’
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম বলেন, ‘বাঁওড়পাড়ের মানুষগুলোর কথা চিন্তা করে ভূমি মন্ত্রণালয় মৎস্য অধিদপ্তরের এক প্রকল্পের মাধ্যমে মাছ চাষের জন্য দিয়েছিল। কিন্তু তারা সফলতা আনতে পারেনি।’ বাঁওড়পাড়ের হালদারদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন, ‘আগামী ৩১ জানুয়ারি বিষয়টি নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ে সভা হবে। সেখানে বিষয়টি উঠবে।’
তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, ‘বাঁওড়গুলো ইজারা দিলে সরকার হয়তো এককালীন টাকা পাবে, কিন্তু হালদার পরিবারগুলো পেশা হারিয়ে পথে বসবে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে মানবতা ভূলুণ্ঠিত হবে।’ জনপ্রতিনিধি হিসেবে বাঁওড় রক্ষায় যা যা করার দরকার, তিনি করবেন।
ঝিনাইদহের ছয়টি বাঁওড় ইজারা না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন হালদার সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীরা। কয়েক দিন ধরে একাধিকবার বাঁওড়পাড়ে সমাবেশ করে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন তাঁরা। আজ সোমবার কোটচাঁদপুরের বলুহর প্রজেক্ট এলাকায় হাজির হন ৭৭ বছর বয়সী শ্রী নরেন হালদার। যাঁর জীবনের ৬৮ বছরই কেটেছে জাল দড়া টেনে। এ সময় তিনি পেটে লাথি না মারার আকুতি জানান।
সুধীর হালদার নামে আরেক মৎস্যজীবী আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমরা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে দেখা করে বলেছি, হয় বিষ দেন, না হয় বাঁওড়ের মালিকানা দেন।’ বাপ-দাদার আমলের বলুহর বাঁওড় ইজারা দেওয়া হলে তাঁরা স্বেচ্ছায় আত্মাহুতি দিতে বাধ্য হবেন।
তিনি আরও বলেন, ‘ব্রিটিশ আমল থেকে হালদার সম্প্রদায়ের মৎস্যজীবীরা বাঁওড়ে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছেন। এই বৃদ্ধ বয়সেও বৃহৎ একটি পরিবার এ মাছ ধরা পেশার আয়ের ওপর নির্ভরশীল। জীবনের শেষে এসে তাঁর জীবিকা নির্বাহের একমাত্র অবলম্বন বলুহর বাঁওড়ের মালিকানা হারাতে বসেছি।’
বিষয়টি স্বীকার করে জেলা বিল বাঁওড় প্রকল্প পরিচালক মো. আলফাজ উদ্দিন শেখ আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মৎস্য বিভাগ চেষ্টা করছে বর্তমান প্রকল্পের মেয়াদ বৃদ্ধি করে চলমান নিয়মে মাছের চাষ করার। কিন্তু ভূমি মন্ত্রণালয় এগুলো ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটা চূড়ান্তভাবে বাস্তবায়িত হলে হাজারো হালদার পরিবার পথে বসবেন, এটা সত্য।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় অধীনে ঝিনাইদহের ছয়টি বাঁওড় ইজারা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাঁওড়গুলো হচ্ছে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার কাঠগড়া, ফতেপুর, কোটচাঁদপুরের বলুহর, জয়দিয়া, কালীগঞ্জের মর্জাদ এবং বেড়গোবিন্দপুর বাঁওড়। এসব বাঁওড়ের মোট জলাধার হচ্ছে ১ হাজার ১৩৭ হেক্টর। এসব বাঁওড় এলাকায় ৭৬৭ পরিবারের প্রায় ৫ হাজার সদস্য বাঁওড় থেকে আয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। মৎস্যজীবীরা সরকারের ‘জাল যার জলা তার’ এই নীতির ওপর ভর করে ১৯৭৯ সাল থেকে বাঁওড়ে মাছ ধরে আসছিলেন। এখন ইজারা দেওয়া হলে জেলার ৬ বাঁওড়ের ওপর নির্ভরশীল ৮ শতাধিক জেলে পরিবারের পেশা হারাবেন।
মৎস্যজীবী সুধীর হালদার বলেন, ‘বাঁওড় ইজারা দিলে সরকারের এককালীন বেশি টাকা আয় হলেও একদিকে যেমন বাঁওড়গুলো ক্ষতির মুখে পড়বে, তেমনি মালিকানা হারিয়ে পথে বসবে বাঁওড়ের ওপর নির্ভরশীল হাজারো পরিবার। ফলে ধ্বংস হবে জীববৈচিত্র্য। বাঁওড়গুলো চলে যাবে প্রভাবশালী মধ্যস্বত্বভোগীদের দখলে।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ইতিমধ্যে একটি মাফিয়া চক্র বাঁওড়গুলো ইজারা নিতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছে। ভুঁইফোড় সমিতির নামে কোটি কোটি টাকার ডাক তুলে সিডি জমা দেওয়া হয়েছে। কোটচাঁদপুরের শীতল হালদার নামে এক ব্যক্তি ২ কোটি ৩৭ লাখ টাকার বিপরীতে সিডি জমা দিয়েছেন।’
ফতেপুর বাঁওড় মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি সুশান্ত কুমার হালদার বলেন, ‘বাঁওড়গুলো ঘিরে তাঁরা জীবন নির্বাহ করেন। ফতেপুর ও কাঠগড়া বাঁওড়ে ১৫০ জন মৎস্যজীবী রয়েছেন। বলুহর ও জয়দিয়া বাঁওড়ে কাজ করেন আরও ৪৭২ জন। মর্জাদ বাঁওড়ে আছেন ১৪৫ জন ও বেড়গোবিন্দপুর বাঁওড়ে ২১০ জন মৎস্যজীবী নিয়মিত কাজ করেন। বাঁওড় সরকারের হাত থেকে চলে গেলে এঁরা সবাই বেকার হয়ে পড়বেন। আর এঁদের ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছেন আরও কমপক্ষে ৫ হাজার মানুষ, যারা পথে বসবে।’
জয়দিয়া বাঁওড়ের মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি নিত্য হালদার বলেন, ‘তাঁরা বাঁওড়ে কোনো প্রকার সার-ওষুধ ছাড়াই মাছ চাষ করেন। পাশাপাশি ট্যাংরা, পুঁটি, শিং, কই, পাবদা, খলিশা, বাটাসহ নানান প্রজাতির দেশি মাছ বাঁওড়ে লালন করে বিক্রি করেন। বাঁওড়ের পানিতে থাকা জীববৈচিত্র্য অক্ষুণ্ন রেখে তাঁরা মাছের চাষ করেন। কিন্তু ইজারা দিলে কৃত্রিম চাষ শুরু হবে, হারিয়ে যাবে জীববৈচিত্র্য ও দেশীয় মাছ।’
ঝিনাইদহ জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম বলেন, ‘বাঁওড়পাড়ের মানুষগুলোর কথা চিন্তা করে ভূমি মন্ত্রণালয় মৎস্য অধিদপ্তরের এক প্রকল্পের মাধ্যমে মাছ চাষের জন্য দিয়েছিল। কিন্তু তারা সফলতা আনতে পারেনি।’ বাঁওড়পাড়ের হালদারদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।
জাতীয় সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট শফিকুল আজম খান চঞ্চল বলেন, ‘আগামী ৩১ জানুয়ারি বিষয়টি নিয়ে আন্তমন্ত্রণালয়ে সভা হবে। সেখানে বিষয়টি উঠবে।’
তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, ‘বাঁওড়গুলো ইজারা দিলে সরকার হয়তো এককালীন টাকা পাবে, কিন্তু হালদার পরিবারগুলো পেশা হারিয়ে পথে বসবে। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে মানবতা ভূলুণ্ঠিত হবে।’ জনপ্রতিনিধি হিসেবে বাঁওড় রক্ষায় যা যা করার দরকার, তিনি করবেন।
জাহাজের নকশা অনুমোদনের জন্য ৫ লাখ টাকা ঘুষ নেওয়ার মামলায় নৌপরিবহন অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও সার্ভেয়ার এসএম নাজমুল হককে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক রেজাউল করিম আসামির উপস্থিতিতে এ সাজা ঘোষণা করেন।
৪ মিনিট আগেআন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সাবেক নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে হওয়া রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে চট্টগ্রাম ষষ্ঠ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কাজী শরীফুল ইসলামের আদালত তাঁর জামিন নামঞ্জুর করেন।
৪৩ মিনিট আগেতৃতীয় শ্রেণির চাকরিতে যোগ দিয়েছিলেন এক দশক আগে। এই পদে চাকরি করে আক্ষরিক অর্থে ‘পাহাড়সম’ সম্পদ হয়েছে বান্দরবানের লামা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর নাজমুল আলমের।
২ ঘণ্টা আগেকুমিল্লার বুড়িচংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার পাঁচজন আরোহী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও দুজন। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নের কালিকাপুর রেল ক্রসিংয়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
২ ঘণ্টা আগে