Ajker Patrika

ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে বাধ্যতামূলক উপস্থিতির নির্দেশ, শিক্ষকদের অসন্তোষ

আপডেট : ২৫ এপ্রিল ২০২৩, ১৩: ১১
ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে বাধ্যতামূলক উপস্থিতির নির্দেশ, শিক্ষকদের অসন্তোষ

যশোরের মনিরামপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে শেখ রাসেল মিনি স্টেডিয়াম উদ্বোধন উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার দুপুরে মনিরামপুরে যাচ্ছেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল। এ উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ চত্বরে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। কিন্তু উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপজেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

এ দিকে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা নিয়ে শিক্ষকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেন এই অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের হাজির হতে হবে, তা নিয়েও তাঁদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলার বেশ কিছু শিক্ষক জানিয়েছেন, বেতন আটকে দেওয়া থেকে শুরু করে নানাভাবে হয়রানির হাত থেকে বাঁচতেই বাধ্য হয়ে অনুষ্ঠানে এসেছেন তাঁরা। উপজেলার শিক্ষা কর্মকর্তারা বলছেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে শিক্ষকদের থাকতে বলা হয়েছে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টার মধ্যে উপজেলা চত্বরে হাজির হতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপস্থিত শিক্ষকেরা। গতকাল সোমবার এসংক্রান্ত মৌখিক আদেশে উপজেলা মাধ্যমিক ও প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তর থেকে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের জানানো হয়েছে। উপজেলার ৪৫০টিরও বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কয়েক হাজার শিক্ষককে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানা গেছে।

সকাল ১০টায় সরেজমিনে উপজেলা পরিষদ চত্বরে দেখা গেছে, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে মঞ্চ প্রস্তুত করা হয়েছে। সামনের চেয়ারে বসে রয়েছেন শতাধিক শিক্ষক। এদিকে দলে দলে শিক্ষকেরা অনুষ্ঠানে এসে হাজির হচ্ছেন। অনুষ্ঠানে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেলকে প্রধান অতিথি করা হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা হিসেবে স্থানীয় সংসদ সদস্য ও পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের সচিব মহিউদ্দিন আহমেদ উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অনুষ্ঠানে উপস্থিত একাধিক শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘আজ যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মনিরামপুরে আসছেন এটা গতকাল (সোমবার) প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের মোবাইল ফোনে জানানো হয়েছে। অনুষ্ঠানে আমাদের বাধ্যতামূলক হাজির থাকতে বলা হয়েছে। আসা-যাওয়ার জন্য কোনো খরচ দেবে কি না তাও কিছু বলেনি।’

শিক্ষকেরা আরও বলেন, ‘শুধু শিক্ষকদের সহজেই ডেকে কোনো অনুষ্ঠানে হাজির করা যায়। না গেলে বেতন বন্ধের হুমকি দেয়। এ জন্য ডাকলেই আমরা বাধ্য হয়ে হাজির হই।’

যশোরের মনিরামপুর উপজেলা পরিষদ চত্বরে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে প্রস্তুত মঞ্চস্টেডিয়াম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষকদের হাজির হওয়ার জন্য নির্দেশনার বিষয়টি আজকের পত্রিকাকে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিকাশ চন্দ্র সরকার। তিনি বলেন, ‘এ ব্যাপারে ইউএনওর সঙ্গে কথা বলতে হবে। তাঁর নির্দেশে শিক্ষকদের ডাকা হয়েছে।’

এ বিষয়ে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ইসমত আরা পারভিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘মূলত অনুষ্ঠানে লোকসমাগম ঘটাতে শিক্ষকদের আসতে বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে ইউএনওর নির্দেশনা আছে।’

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর পরিচালনার বিষয়ে শিক্ষকদের কিছু নির্দেশনা দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের ডাকা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জাকির হোসেন। তিনি আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর স্কুল কলেজ খুলবে। এ বিষয়ে কিছু নির্দেশনা দেওয়ার জন্য শিক্ষকদের আসতে বলা হয়েছে।’

তবে ইউএনওর বক্তব্যের বিষয়ে উপস্থিত শিক্ষকেরা বলেন, ‘এ যাবৎ কোনো সময় স্কুল-কলেজ খোলার আগে নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আমাদের উপজেলায় ডাকা হয়নি। এ ছাড়া অনুষ্ঠানের বিষয়ে কোনো আলোচনাও হয়নি।

উপস্থিত একাধিক শিক্ষক বলেন, ‘মনিরামপুরে দীর্ঘদিন ধরে ক্ষমতাসীন দলে কোন্দল চলে আসছে। মূলত কাঙ্ক্ষিত লোকসমাগম ঘটাতে শিক্ষকদের ব্যবহার করা হয়েছে বলে আমাদের ধারণা।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

৭ ঘণ্টা পর ঝালকাঠির অবরোধ প্রত্যাহার, যান চলাচল স্বাভাবিক

ঝালকাঠি প্রতিনিধি  
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা
বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি অংশে অবরোধ সাত ঘণ্টা পর প্রত্যাহার করে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়। ছবি: আজকের পত্রিকা

ইনকিলাব মঞ্চের প্রতিষ্ঠাতা ও মুখপাত্র শরিফ ওসমান বিন হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে এবং খুনিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে তাঁর নিজ জেলা ঝালকাঠিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছে ছাত্র-জনতা। সাত ঘণ্টা পর পুলিশের অনুরোধে আজ শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করা হলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

আজ জুমার নামাজ শেষে বেলা আড়াইটার দিকে বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি কলেজ মোড় এলাকায় অবরোধ শুরু করেন বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। অবরোধ চলাকালে মহাসড়কের উভয় পাশে বিপুলসংখ্যক যানবাহন আটকে পড়ে। ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তবে রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, জরুরি ওষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় কাঁচামাল বহনকারী যান চলাচলের সুযোগ দেওয়া হয়।

অবরোধ কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, এনসিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণঅধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। এ সময় মহাসড়কে টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করা হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন এনসিপির ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক মাইনুল ইসলাম মান্না, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা আহ্বায়ক আল তৌফিক লিখন, যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি, সদস্যসচিব রাইয়ান বিন কামাল, গণঅধিকার পরিষদ ঝালকাঠি জেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঝালকাঠি-২ আসনের মনোনীত প্রার্থী মাহমুদুল ইসলাম সাগরসহ অন্য নেতারা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ঝালকাঠি জেলা কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক ইয়াসিন ফেরদৌস ইফতি বলেন, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের একজন গুরুত্বপূর্ণ সহযোদ্ধাকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে হত্যা করেছে। তিনি সিঙ্গাপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। হামলাকারীদের ইন্টারপোলের মাধ্যমে দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। তা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

ঝালকাঠি সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) বেলায়েত হোসেন আজকের পত্রিকাকে বলেন, বেলা আড়াইটায় অবরোধ শুরু হওয়ায় বরিশাল–খুলনা আঞ্চলিক মহাসড়কে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি শান্ত করা হলে তাঁরা রাত সাড়ে ৯টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহারে সম্মত হন। পরে সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ ও সাবেক মেয়রের বাড়িতে আগুন

দিনাজপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ৪৪
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা
সাবেক প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছেন একদল লোক। ছবি: আজকের পত্রিকা

সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বোচাগঞ্জের বাড়িতে আগুন দিয়েছে একদল লোক। আজ শুক্রবার রাতে দুজনের বাড়িতে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে বোচাগঞ্জ থানা-পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা সেখানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

স্থানীয় জনতা ও বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক নৌ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও সেতাবগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র আসলাম হোসেনের বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। তবে কারা আগুন দিয়েছে, এ বিষয়ে বিস্তারিত জানা যায়নি।

বোচাগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের সাব-অফিসার শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘রাত সোয়া ৮টার দিকে সাবেক মেয়র আসলামের বাড়িতে আগুন লাগার খবর পেয়ে আমরা সেখানে পৌঁছাই। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসা হয়েছে।’

এ ছাড়া খালিদ মাহমুদের বাড়ির আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে বলে জানা গেছে।

এ বিষয়ে জানার জন্য বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করা হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

ময়মনসিংহে যুবককে পিটিয়ে হত্যা: অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা

ময়মনসিংহ প্রতিনিধি
আপডেট : ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২: ১৮
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত
দিপু চন্দ্র দাস। ছবি: সংগৃহীত

ময়মনসিংহের ভালুকায় দিপু চন্দ্র দাস (২৮) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা ও মরদেহে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। আজ শুক্রবার নিহত দিপুর ছোট ভাই অপু চন্দ্র দাস বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় অভিযোগ দিয়েছেন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ভালুকা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহেদুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, বিক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হন দিপু চন্দ্র দাস। এ ঘটনায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা হয়েছে।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার ডুবালিয়াপাড়া এলাকার পাইওনিয়ার নিট কম্পোজিট কারখানা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত দিপু চন্দ্র দাস জেলার তারাকান্দা উপজেলার মোকামিয়া কান্দা গ্রামের রবি চন্দ্র দাসের ছেলে। তিনি ওই কোম্পানির শ্রমিক ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত

প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

‎নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা‎
প্রথম আলো ও ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলায় র‍্যাকের নিন্দা

কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি দৈনিক প্রথম আলো ও দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে যে হামলা চালিয়েছে, তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে রিপোর্টার্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন (র‍্যাক)।

অন্যদিকে, দুই গণমাধ্যমে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করতে গিয়ে নাজেহাল ও হেনস্তার শিকার হয়েছেন ইংরেজি দৈনিক দ্য নিউ এজের সম্পাদক প্রবীণ সাংবাদিক নূরুল কবীর। এ ঘটনারও তীব্র নিন্দা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছে র‍্যাক। অবিলম্বে এসব ঘটনার সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও দ্রুত তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানিয়েছে র‍্যাক।

শুক্রবার এক বিবৃতিতে সভাপতি আলাউদ্দিন আরিফ ও সাধারণ সম্পাদক তাবারুল হক বলেন, সংবাদমাধ্যম রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান ভিত্তি। গণমাধ্যমের কণ্ঠ রুদ্ধ করতে সহিংসতা, ভয়ভীতি প্রদর্শন, হামলা কিংবা হেনস্তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কর্মকাণ্ড গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার এবং আইনের শাসনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী।

১৮ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাত ১২টার দিকে উচ্ছৃঙ্খল কতিপয় ব্যক্তি প্রথমে দৈনিক প্রথম আলো, তারপর দ্য ডেইলি স্টার পত্রিকা অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। এ সময় পত্রিকা দুটির অনেক সাংবাদিক ভবনের ভেতরে আটকা পড়েছিলেন। খবর পেয়ে সেনা, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে হামলাকারীদের সরিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে ভবনের ভেতরে আটকে পড়া সাংবাদিকদের উদ্ধার করে ফায়ার সার্ভিস।

পত্রিকা দুটির শীর্ষ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রাতে আকস্মিক হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার পর কর্মীদের সবাইকে দ্রুত অফিস ত্যাগ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ফলে শুক্রবার ছাপা পত্রিকা বের করা সম্ভব হয়নি।

র‍্যাক নেতারা বলেন, মনে হচ্ছে একটি গোষ্ঠী অত্যন্ত সচেতনভাবে প্রতিপক্ষ বানাতে গণমাধ্যমকে টার্গেট করে হামলা চালিয়েছে। এটা খুবই দুঃখজনক ও মর্মান্তিক। স্বাধীন সাংবাদিকতায় বিশ্বাসী বর্তমান সরকারের সময় এমন ঘটনা ন্যক্কারজনক। ডিআরইউ মনে করে, ওসমান হাদি একজন দেশপ্রেমিক জুলাই যোদ্ধা ছিলেন। শহীদ ওসমান হাদিসহ ছাত্র-জনতার ত্যাগের কারণে তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।

হাদির মৃত্যুকে পুঁজি করে যারা গণমাধ্যমের ওপর হামলা করেছে, তারা হাদির অনুসারী নয়, এটা স্পষ্ট। কতিপয় মহল হাদির মৃত্যুকে ব্যবহার করে নিজেদের কদর্য চেহারা প্রকাশ করেছে। অবিলম্বে এসব ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে দৃস্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান নেতারা।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
Loading...

সম্পর্কিত