ভারতের নিষেধাজ্ঞায় চাল আমদানি বন্ধ বেনাপোল বন্দরে

বেনাপোল (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ জুলাই ২০২৩, ১৬: ২০

ভারত সরকার রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় যশোরের বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল (সিদ্ধ, আতপ) আমদানি বন্ধ রয়েছে। নিষেধাজ্ঞার আগে যাদের চাল বন্দরে এসেছে তা রপ্তানির সুযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এদিকে হঠাৎ রপ্তানি বন্ধের কারণে বাংলাদেশি অনেক আমদানিকারক লোকসানের কবলে পড়েছেন। দেশে চালের মজুত অনেক থাকলেও রপ্তানি বন্ধের খবরে ইতিমধ্যে খোলা বাজারে কেজিতে দাম বেড়েছে ১ থেকে ২ টাকা পর্যন্ত। গত ২০ জুলাই ভারত সরকারের বাণিজ্য বিভাগ এক প্রজ্ঞাপনে সাময়িকভাবে চাল রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়। তবে নিষেধাজ্ঞার আগে যে সব চাল বন্দরে পৌঁছেছে তা রপ্তানির সুযোগ থাকছে।

খাদ্যের মান পরীক্ষার কাজে নিযুক্ত বেনাপোল স্থলবন্দরের সঙ্গনিরোধ কর্মকর্তা হেমন্ত কুমার সরকার বলেন, ‘রপ্তানি বন্ধের বিষয়ে কোনো চিঠি তাঁদের দপ্তরে আসেনি। তবে বেনাপোল বন্দর দিয়ে চাল আমদানি হচ্ছে না। অন্য খাদ্যদ্রব্যের আমদানি স্বাভাবিক আছে।’

জানা গেছে, প্রতিবছর দেশে চালের চাহিদা রয়েছে ৩ কোটি ৭০ লাখ মেট্রিক টন। তবে দেশে চালের উৎপাদন ৩ কোটি ৫৫ লাখের মতো। চাহিদার বিপরীতে চাল উৎপাদন না হওয়ায় বাকি ১৫ লাখ মেট্রিক টন আমদানি করতে হয়। আর এসব চালের বড় অংশ আমদানি হয় ভারত থেকে। তবে পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চালের বাজার ঊর্ধ্বগতি হলে দেশের বাইরে চাল রপ্তানি বন্ধ করে ওই দেশের সরকার। এতে বিপাকে পড়তে হয় বাংলাদেশকে। আমদানি বন্ধের অজুহাত দেখিয়ে অতিরিক্ত মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা দাম বাড়ায়। এবার ভারতে চাল উৎপাদন হয় এমন কয়েকটি প্রদেশে অতি বন্যায় ধানের ক্ষতি হয়েছে। এতে উৎপাদন ঘাটতির শঙ্কায় দেশের বাইরে চাল রপ্তানি বন্ধ করে ভারত সরকার।

আজ শনিবার সকালে বেনাপোল বন্দর এলাকার বাজার ঘুরে জানা গেছে, সব ধরনের চাল কেজিতে ২ টাকা পর্যন্ত বেড়ে স্বর্ণা চাল ৫০, মিনিকেট ৫৭, বাসমতি ৭৬, চিকন আতপ ৫২, মোটা আতপ ৪৭, কাজল লতা ৫৫ ও আটাশ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

সাধারণ ক্রেতা আরিফ বলেন, ‘আমদানি বন্ধের খবরে দাম বেড়েছে বাজারে। বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে দাম আরও বাড়তে পারে।’

চাল ব্যবসায়ী নিপু হোসেন জানান, দেশে পর্যাপ্ত চাল মজুত আছে, আমদানিও হয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ জোরদার থাকলে চালের দাম স্বাভাবিক থাকবে। 

বন্দর পরিসংখ্যান সূত্রে জানা যায়, গেল অর্থবছরে দেশে চাল আমদানি হয়েছে ১০ লাখ ৫৫ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে সরকারিভাবে আমদানি করা হয় ৬ লাখ ৩৩ হাজার ৯৪০ মেট্রিক টন ও বেসরকারিভাবে ৪ লাখ ২১ হাজার ৬২০ মেট্রিক টন। এর মধ্যে বেনাপোল বন্দর দিয়ে ২০২২-২৩ অর্থবছরে চাল আমদানির পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪৮ হাজার ২৭ মেট্রিক টন এবং ২০২২ সালে চাল আমদানি ৬৯ হাজার ৪৪৩ মেট্রিক টন।

বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি আমিনুল হক জানান, হঠাৎ আমদানি বন্ধে তাঁরা অনেকটা ক্ষতির মুখে পড়েছেন। এবার কোটা চুক্তিতে ভারতের কাছে ২০ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানির দাবি তোলা হয়েছে। খাদ্যদ্রব্য আমদানিতে ভারতের সঙ্গে কোটা চুক্তি বাস্তবায়ন হলে খাদ্যসংকট অনেকটা কমবে বলে মনে করেন আমিনুল হক।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত