যশোরে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ, যুবলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৪

যশোর প্রতিনিধি
আপডেট : ১১ জুলাই ২০২২, ১২: ০০
Thumbnail image

যশোরে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অষ্টম শ্রেণির এক স্কুলছাত্রীকে (১৬) ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গতকাল রোববার ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রী যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি ধর্ষণ মামলা করে। পরে জেলা যুবলীগের এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন শহরের পুরোনো কসবার বাসিন্দা, যশোর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক) রফিকুল ইসলাম ওরফে ঢোল রফিক, শহরের সিটি কলেজপাড়ার মিরাজ হোসেন আকাশ, আরবপুরের তাহসিন বিল্লাল ও ঘোপ বেলতলার আরাফাত আহমেদ।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মিরাজ হোসেন আকাশের সঙ্গে অষ্টম শ্রেণির ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। গত শনিবার সন্ধ্যায় তারা শহরের গাড়িখানা রোডে পুনাক (পুলিশ নারী কল্যাণ সংস্থা) মেলায় ঘুরতে যায়। সেখান থেকে ভুক্তভোগীকে গান শোনানোর কথা বলে রাত ১০টার দিকে আকাশ অন্য দুই সহযোগী বিল্লাল ও আরাফাতকে সঙ্গে নিয়ে বিমান অফিস মোড়ে যশোর জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরেফ ঢোল রফিকের অফিসে নিয়ে যায়। সেখানে আসামিরা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ করে। এ সময় ভুক্তভোগীকে নির্যাতন করা হয় বলেও অভিযোগে বলা হয়। একপর্যায়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় ভুক্তভোগীর চিৎকারে টহলরত পুলিশের একটি দল শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড মোড় থেকে তাকে উদ্ধার করে। এ সময় বিল্লাল, আকাশ ও আরাফাতকে পুলিশ আটক করে। পরে তাঁদের তথ্যমতে শহরের কাঁঠালতলা থেকে গতকাল রোববার দুপুরে জেলা যুবলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরফে ঢোল রফিককে আটক করা হয়।

যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি তাজুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এ বিষয়ে জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও যশোর ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, ভুক্তভোগী স্কুলছাত্রীকে ঘুরতে নিয়ে একপর্যায়ে আকাশ তার দুই বন্ধু বিল্লাল ও আরাফাতকে সঙ্গে নিয়ে রাতে যশোর বিমান অফিস মোড়ে রফিকুল ইসলামের অফিস কক্ষে মাদকের আড্ডাখানায় নিয়ে যায়। সেখানে রফিকুলের দেহরক্ষী পুরোনো কসবা কাজীপাড়ার বছির আহম্মেদের ছেলে শহীদ (৪৩) ভুক্তভোগীকে ধর্ষণ করেন। এরপর আরাফাত ও অন্যরা ধর্ষণের চেষ্টা করলে মেয়েটি চিৎকার করে। পরে ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে আকাশ, আরাফাত ও বিল্লাল ভুক্তভোগীকে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর চিৎকারে টহলরত পুলিশের একটি দল শহরের চুয়াডাঙ্গা বাসস্ট্যান্ড মোড়ে তাদের জেরা করে। টহলরত পুলিশের জেরার মুখে তারা পুরো ঘটনার কথা খুলে বলেন। এ সময় আকাশ, বিল্লাল, আরাফাতরা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে টহল পুলিশ তাঁদের আটক করে। পরে তাদের তথ্যে রফিকুল ইসলামকে দুপুর ১টা ১০ মিনিটে কাঁঠালতলা থেকে আটক করা হয়।

যশোর ডিবির ওসি রুপন কুমার সরকার আরও জানান, এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর করা মামলায় আসামিদের আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত