যশোরে আজহারীর মাহফিলে মানুষের ঢল, পদদলিত হয়ে আহত অন্তত ৫

­যশোর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩: ০৯
আপডেট : ০৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১৯: ৪৬
Thumbnail image
ড. মিজানুর রহমান আজহারী। ছবি: সংগৃহীত

যশোরে মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে পদদলিত হয়ে অন্তত পাঁচজন আহত হয়েছে। আজ শুক্রবার রাতে শহরতলি পুলেটহাটের আদ–দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চত্বর ও আশপাশের এলাকায় তাঁরা পদদলিত হন। আহতদের যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ রাত ১০টার দিকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বজলুর রশিদ।

আহতদের স্বজনেরা বলেন, আজ রাতে তাঁরা পুলেটহাটে মিজানুর রহমান আজহারীর ওয়াজ মাহফিলে যাচ্ছিলেন। মাহফিল স্থলের প্রধান ফটকের সামনে যশোর–বেনাপোল মহাসড়কে অতিরিক্ত মানুষের সমাগমে চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় সড়কে আগে যাওয়া-আসাকে কেন্দ্র করে হট্টগোল শুরু হলে ধাক্কাধাক্কিতে অনেকে পড়ে যান। এতে পদদলিত হয়ে তাঁরা আহত হন। এ সময় স্থানীয়রা উদ্ধার করে তাঁদের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করে। এর মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় পাঁচজন যশোর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

এদিকে ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মাহফিলে দায়িত্বরত স্বেচ্ছাসেবীরা জানায়, অন্তত ৩০ জন আহতের ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক মৃত্যুর খবরও রটেছে। যদিও এ বিষয়ে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার পুলিশ বা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেনি।

এ বিষয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার বজলুর রশিদ বলেন, যশোর জেনারেল হাসপাতালে পাঁচজন ভর্তি হয়েছে।

এদিকে আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশন আয়োজিত তিন দিনব্যাপী তাফসিরুল কোরআন মাহফিলের শেষ দিনে ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের ঢল নামে। আজহারির আসার খবরে মাহফিল প্রাঙ্গণে লাখখানেক মানুষের সমাগম ঘটে। আজ সকাল থেকে শীত উপেক্ষা করে মানুষের জমায়েত হয়। বিকেল থেকে মাহফিলের স্থান ছাপিয়ে সড়ক, মহাসড়কেও শিশু, নারী, পুরুষের ঢল নামে। দুপুরের পর সড়কে যানজট দেখা দেয়। এ জন্য অনেকে হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছায়। সব সড়কের ঢেউ গিয়ে মেশে পুলেরহাটে। সন্ধ্যায় আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহও বক্তব্য দেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, শুক্রবার সকাল থেকেই যশোর-বেনাপোল, যশোর-ঝিনাইদহ, যশোর-মাগুরা, যশোর-খুলনা মহাসড়কসহ বিভিন্ন সড়ক ধরে লাখ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসল্লি শহরতলির পুলেরহাটের অভিমুখে রওনা হয়েছে। দুপুরের পর সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে যানবাহনের চাপ বাড়ে। বাসের পাশাপাশি ট্রাক, মাইক্রো, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহনে চড়ে মানুষ গন্তব্যে রওনা হন। এ ছাড়া ট্রেনে চড়েও অনেকে যশোর স্টেশনে নামেন। সেখান থেকে হেঁটে, যানবাহনে চড়ে অনেকে গন্তব্যে যান। গোটা শহরতলিতে মানুষের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। সন্ধ্যার পর পায়ে হাঁটা মানুষের সংখ্যা বেড়ে যায়। অনেকেই মূল অনুষ্ঠানে স্থলে পৌঁছাতে পারেনি। দূর থেকেই বক্তব্য শুনতে হয়েছে।

শহরের রেলগেট এলাকায় যানজটে দাঁড়িয়ে থাকা ইজিবাইকের যাত্রী সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘আজহারী সাহেব আসছেন শুনে এসেছি। মাহফিলে যাচ্ছি। কিন্তু পথে প্রচণ্ড জ্যামের কারণে আটকে আছি। খুব ধীরে যাচ্ছে যানবাহন। রোডে প্রচুর মানুষের ভিড়।’

যশোরে আজহারীর মাহফিলে মানুষের ঢল। ছবি: সংগৃহীত
যশোরে আজহারীর মাহফিলে মানুষের ঢল। ছবি: সংগৃহীত

লিমন হোসেন নামে এক রিকশা চালক বলেন, ‘চাঁচড়া পুলেরহাটের দিকে রিকশা নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। অনেক লোকের ভিড়। দুপুরের পর থেকে রিকশা নিয়ে ডালমিল পার হতে পারিনি। এখন যাত্রীরা সব হেঁটে যাচ্ছে। রেলগেট পার হলেই আর সামনে আগানো যাচ্ছে না।’

শহর ও শহরতলির প্রায় প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কের চিত্র একই। শহরের চাঁচড়া মোড় থেকে পুলেরহাট অভিমুখে সবচেয়ে বেশি মানুষের ঢল নামে। এসব সড়কের মানুষের ভোগান্তিও ছিল চোখে পড়ার মতো।

এদিকে মাহফিল উপলক্ষে চার দিনব্যাপী ইসলামী বই মেলা ও প্রদর্শনী করা হয়েছে। মেলায় ২২টি স্টল রয়েছে। একই সঙ্গে শিশুদের জন্য ‘কিডস জোন’ করা হয়েছে।

আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশনের মানব সম্পদ কর্মকর্তা জাহেদ হোসাইন আজকের পত্রিকাকে বলেন, আদ্-দ্বীন ফাউন্ডেশন শুধু ওয়াজ মাহফিলের মধ্যে সীমাবদ্ধ করেনি। এখানে ইসলামী কৃষ্টি কালচার তুলে ধরা হচ্ছে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত