ঝিকরগাছায় অযত্নে পড়ে আছে ৫ শহীদের কবর

মাসুদুর রহমান মাসুদ, ঝিকরগাছা (যশোর)
প্রকাশ : ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০: ৩৪
যশোরের ঝিকরগাছার উপজেলার উজ্জ্বলপুর গ্রামে পাঁচ শহীদের কবরস্থান। ছবি: সংগৃহীত

উজ্জ্বলপুর শহীদ দিবস আজ বুধবার (১৩ নভেম্বর)। ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতার লাল সূর্যকে ছিনিয়ে আনতে যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বাঁকড়া ইউনিয়নের উজ্জ্বলপুর গ্রামে আত্মাহুতি দেন পাঁচ সূর্যসন্তান। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও এসব শহীদদের স্মৃতি ও কবরস্থান অযত্নে পড়ে আছে।

১৯৭১ সালে বাঁকড়া ইউনিয়নের উজ্জ্বলপুর, খোসালনগর, দিগদানা ও মাটশিয়া এবং পার্শ্ববর্তী উপজেলা মনিরামপুরের ডুমুরখালী গ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় অবস্থানরত কয়েকটি মুক্তিযোদ্ধাদের ঘাঁটির কমান্ডার ছিলেন ক্যাপ্টেন ফজলুর রহমান। ঘটনার দিন ১৩ নভেম্বর খোসালনগর কপোতাক্ষ নদের ঘাটে কেশবপুরের মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সুভাষের নেতৃত্বে একটি দলকে পাহারায় থাকার কথা ছিল, কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগে তাঁরা পাহারা দেওয়ার স্থান ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যান। যার ফলে মনিরামপুরের ঝাঁপা গ্রাম থেকে পাকিস্তানি সেনা ও তাঁদের দোসররা গোপনে কপোতাক্ষ নদ পার হয়ে খোসালনগরে চলে আসেন।

এদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের অপর একটি দল আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে খোসালনগর খেয়াঘাট পাহারা দিতে কপোতাক্ষ নদের দিকে আসতে থাকেন। পথিমধ্যে উজ্জ্বলপুর গ্রামের নিছার আলী সংবাদ দেন ‘পাকসেনারা নদ পার হয়ে এপারে চলে এসেছে এবং নিকটে কোথাও অবস্থান করছে’। তখন মুক্তিকামী সেনাদল আব্দুল খালেকের নেতৃত্বে সামনের দিকে এগোতে থাকেন পাক সেনাদের খোঁজে।

সেখানে বাগানে ওত পেতে থাকা পাক সেনাদের অতর্কিত হামলায় শহীদ হন জেলার কেশবপুরের আব্দুল খালেক, মনিরামপুরের জালাল উদ্দীন, আব্দুল রাজ্জাক, জামশেদ আলী ও নূর ইসলাম। হামলার পর পাকসেনারা ঘটনাস্থল ত্যাগ করে পুনরায় সেই পথে ফেরার সময় জামাল উদ্দীনকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে চলে যান। তারপর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক হোসেন আলী ও গ্রামবাসী পাঁচ শহীদকে উজ্জ্বলপুরে দাফন করেন।

স্থানীয়রা জানান, পাঁচজন শহীদের স্মৃতিকে ধরে রাখতে তাঁদের কবরস্থানের পাশে ১৯৯৫ সালে উজ্জ্বলপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করা হয়। শহীদের কবরস্থান প্রাচীর দিয়ে ঘিরে রাখা হলেও অযত্নে পড়ে আছে। স্মৃতি রক্ষার্থে নেই বিশেষ উদ্যোগ। স্থানীয় সচেতন মহল কবরস্থান ঘিরে স্মৃতি কমপ্লেক্স গড়ে তোলার দাবি জানিয়েছেন।

উজ্জ্বলপুর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা দাখিল মাদ্রাসার সুপার বায়োজিদ বোস্তামী বলেন, উজ্জলপুর শহীদ দিবস পালনের জন্য অন্য বছর প্রশাসনের নির্দেশনা থাকে এবং শহীদ পরিবারের স্বজনেরা আসেন। এবার কী হবে জানি না, তবে মাদ্রাসার পক্ষ থেকে আলোচনা ও শহীদদের মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত