বাগেরহাটে ঘরে ঢুকে স্কুলশিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা

বাগেরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১৬: ৫৭
আপডেট : ০৬ আগস্ট ২০২৪, ১৭: ২০

বাগেরহাটে ঘরে ঢুকে সাবেক স্কুলশিক্ষককে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। মারপিটে গুরুতর আহত হয়েছেন ওই শিক্ষকের স্ত্রী ও মেয়ে। গতকাল সোমবার দিবাগত রাতে সদর উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের ছোট পাইকপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। 

এদিকে কচুয়া উপজেলার বাধাল এলাকায় এক নারীকে কুপিয়েছে প্রতিপক্ষরা। তিনি গোপালপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। 

নিহত মৃণাল কান্তি চ্যাটার্জি (৬৫) ছোট পাইকপাড়া গ্রামের প্রয়াত কেশব লাল চ্যাটার্জির ছেলে। তিনি পার্শ্ববর্তী মধুদিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। আহত তাঁর স্ত্রী শেফালি চ্যাটার্জি (৬০) ও মেয়ে ঝুমা রানী চ্যাটার্জি (৩৫) বাগেরহাট জেলা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। 

 ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শেফালি চ্যাটার্জি বলেন, ‘ঘর দরজা সব ভাঙছে, সবকিছু নিয়ে গেছে। কিচ্ছুই নেই। সন্ধ্যার দিকে একদল এসে বাড়ি ঢিলা মারছে। তখনও বুঝিনি, রাত্রিরি আইসে এইভাবে মাইরা ফ্যালবো।’ 

আর্তনাদ করতে করতে তিনি বলেন, ‘এট্টু জায়গা আছে, ওই জায়গাজমিই কাল হইছে। এট্টু সম্পদের জন্নি তো, তোরা সব নিয়ে যাতি, মাইরে ফেললি কেন? সব ভাঙে ফেললি।’ 

শেফালি চ্যাটার্জি আরও বলেন, ‘বাড়ি থেকে আসার সময় বলেছি, সব জমিজমা তোরা খাস, আমাদের তো সব শেষ।’ 

মাথাসহ তাঁর শরীরের বিভিন্ন ক্ষতস্থানে ৩০-এর অধিক সেলাই দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে পাশের সিটে থাকা তাঁর আহত মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘ঘরে আমার ছোট ছেলে ও বোন ছিল। তাদের খাটের নিচে লুকিয়ে রেখে বাঁচাইছি। আমাগো কী দোষ। আমরা তো কোনো দল করি না। শুধু শুধু আমাগো ওপর কেন হামলা করল। আমার বৃদ্ধ বাবাকে হাতুড়ি দিয়ে পিটায় মেরে ফেলল।’ 

ঝুমা রানী চ্যাটার্জি আরও বলেন, ‘প্রতিবেশী হুমায়ুন শেখ ও নুরুল ইসলামের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে জমিসংক্রান্ত বিবাদ ছিল। গতকাল সন্ধ্যায় নুরুল ইসলাম বাড়িতে লোকজন নিয়ে এসে হুমকি দিয়ে যায়। রাতে মুখোশ পরে এসে আমাদের ওপর হামলা ও ভাঙচুর লুটপাট করে। ঘরের সবকিছু নিয়ে যায় হামলাকারীরা। আমরা এই হত্যা ও লুটপাটের বিচার চাই।’ 

এলাকাবাসী জানান, ঘটনার পর থেকে হুমায়ুন শেখ ও নুরুল ইসলাম শেখ পলাতক রয়েছেন। তাঁদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। 

অন্যদিকে কচুয়া উপজেলার বাধাল এলাকায় নাজমা সিকদার সেতারা (৫৩) নামের এক নারীকে পিটিয়ে-কুপিয়েছে প্রতিপক্ষরা। তাঁর বাড়ি থেকে হাঁস-মুরগি, গবাদিপশুসহ সবকিছু নিয়ে গেছে। তিনি গোপালপুর ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন। 

বাগেরহাট ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নাজমা সিকদার সেতারা বলেন, ‘স্থানীয় নিলু, শহীদ, আছাদ ও মাহফুজদের সঙ্গে আমার মামলা ছিল। তারাই আমার ওপর হামলা করেছে। তাদের মারধরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের রক্ত জমাট বেঁধে গেছে। পায়েসহ বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত ক্ষত জখম হয়েছে। সবকিছু লুট হয়ে গেছে। বাড়িতে কিচ্ছু নেই।’ 

এদিকে জেলার বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়সহ নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। এতে বেশকিছু নেতা-কর্মীর আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে আহতদের সংখ্যা এবং পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গতকাল সোমবার দুপুর থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মারধরে আহত জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে আসা আহত ২৯ জন চিকিৎসা নিয়েছেন।

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণে ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত