পাবনার পদ্মা নদীতে ভেসে উঠল নিখোঁজ আরেক এএসআইয়ের মৃতদেহ

কুষ্টিয়া ও পাবনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ২৩
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ১২: ৩৩
নিহত পুলিশ সদস্য মুকুল হোসেন। ছবি: সংগৃহীত

কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার পদ্মা নদীতে নিখোঁজ পুলিশ কর্মকর্তা মুকুল হোসেনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৭টার দিকে পাবনার সুজানগর উপজেলার নাজিরগঞ্জ এলাকায় পদ্মা নদীতে ভাসমান অবস্থায় তাঁর লাশ উদ্ধার করেন নাজিরগঞ্জ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা।

পাবনার সুজানগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা লাশ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নিহত মুকুল হোসেন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানায় এএসআই হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি মেহেরপুর সদর উপজেলার কালাচাঁদপুর গ্রামের মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে।

সুজানগর থানার ওসি গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘সকালে নাজিরগঞ্জ ফেরিঘাটে পদ্মা নদীতে একজনের মরদেহ ভাসতে দেখে থানায় খবর দেয় স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহটি উদ্ধার করে। পরে আমাদের কাছে থাকা কুষ্টিয়ার মিরপুরের পুলিশ নিখোঁজের তথ্য ও ছবি মিলিয়ে মরদেহটি এএসআই মুকুলের বলে শনাক্ত করা হয়।’

ওসি গোলাম মোস্তফা আরও বলেন, ‘সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। এ ঘটনায় কুষ্টিয়ার মিরপুর থানায় মামলা রয়েছে।’

কুমারখালী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘সকালে টিম নিয়ে নদীতে যাওয়া হয়। উদ্ধার অভিযান শুরুর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল। কুমারখালীর ওসি ফোন করে জানান, অভিযান শেষ। লাশ পাওয়া গেছে। ঘটনাস্থল থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে এএসআই মুকুল হোসেনের লাশ ভেসে উঠেছে। এ জন্য স্টেশনে ফিরে যাওয়া হচ্ছে।’

কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার ওসি নজরুল ইসলাম জানান, ‘২০২৪ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি কুমারখালী থানায় এএসআই হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন সদরুল আলম ও মুকুল হোসেন। তাদের নিখোঁজ ও মৃত্যুর ঘটনায় গত মঙ্গলবার এসআই নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আটজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০ থেকে ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।’

উল্লেখ্য, গত সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে উপজেলার বেড় কালোয়া এলাকার দুর্বৃত্তদের হামলায় নৌকা থেকে পদ্মা নদীতে পড়ে পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিখোঁজ হন। তাঁদের মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার বেলা ২টা ৫৫ মিনিটে এএসআই সদরুল আলমের লাশ ঘটনাস্থল থেকে দুই কিলোমিটার দূরে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

ঘটনার পর জেলা পুলিশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সোমবার ভোররাত ৪টার দিকে কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে ছয়জন পুলিশ সদস্য, স্থানীয় দুই ইউপি সদস্য ও দুই মাঝি মিলে পদ্মার ওপারে চরসাদীপুর এলাকায় আসামি ধরতে যাচ্ছিলেন। এ সময় কয়েকটি নৌকার জেলেরা তাঁদের ওপর হামলা চালান। তখন প্রাণ বাঁচাতে দুই পুলিশ সদস্য নদীতে ঝাঁপ দেন।

তবে বেড় কালোয়া এলাকার জেলে এজাহার শেখ বলেন, ‘রাতে পদ্মায় ইলিশ ধরছিলাম। সে সময় দুই ইউপি সদস্য ও ছয়জন পুলিশ এসে আমার কাছে থাকা মাছ নিয়ে চলে যায়। মাছ নেওয়ার পরে পুলিশ আবার মাছ ধরার অনুমতি দিয়ে চলে যায়।’

বেড় কালোয়া এলাকার জেলেদের নেতা ইয়ারুল ইসলাম জানান, রাত ৩টার দিকে স্থানীয় জেলেরা প্রথমে তাঁকে ফোন দিয়ে জানান, নদীতে ঝামেলা হচ্ছে। ইউপি সদস্য ও পুলিশ সদস্যরা এসে জেলেদের কাছ থেকে তেল ও মাছ নিয়ে গেছেন। সে খবর শুনেও তিনি ঘুমিয়ে পড়েছিলেন। এরপর ভোর ৫টার দিকে এএসআই সদরুল আমাকে ফোনে বলেন, ‘ভাই, আমরা বিপদে আছি। সাহায্য করেন।’ তখন একটি নৌকায় চারজন গিয়ে এসআই নজরুলসহ চার পুলিশ সদস্য ও দুই ইউপি সদস্যকে উদ্ধার করে নিয়ে আসেন। এসআই নজরুলের মাথা ফাটা ছিল।

ইয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, ‘পুলিশ সাদাপোশাকে ছিল। ইউপি সদস্যরা জেলেদের মাছ, তেল ও টাকা লুটপাট করতে পুলিশ নিয়ে এসেছিল। ৩০ থেকে ৪০ জন জেলে ডাকাত ভেবে হামলা চালিয়ে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত