শ্বাসরোধে সন্তানকে হত্যার পর বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুর নাটক সাজায় মা: পুলিশ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি
আপডেট : ০৬ মে ২০২৪, ১৬: ১২
Thumbnail image

নিজের ৭ বছরের মেয়েসন্তানকে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যাওয়ার নাটক সাজান মা। আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যার বর্ণনা দিয়েছেন তিনি। 

ঘটনাটি ঘটেছে চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার ভোগাইল বগাদী গ্রামে। মা পপি খাতুন আলমডাঙ্গা ভোগাইল বগাদী গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে। 

নিহত মাইশা ভোগাইল বগাদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। মা-বাবার বিচ্ছেদ হলে মায়ের সঙ্গে মাইশা নানাবাড়িতেই থাকত। 

আজ সোমবার সকালে চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সকালে শিশু মাইশা খাতুনের মৃত্যু হয়। মোবাইল চার্জার নিয়ে খেলতে গিয়ে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা যায় বলে প্রথমে ধারণা করা হয়। তার মায়ের চিৎকারে প্রতিবেশীরা উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

ওই দিন চুয়াডাঙ্গা সদর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। অপমৃত্যু মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আতিকুর রহমান জুয়েল রানা মামলা তদন্ত করার সময় দুর্ঘটনায় স্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে সন্দেহ হলে শিশুটির ময়নাতদন্ত করা হয়। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা হয় মাইশাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। বিদ্যুতায়িত হয়ে মৃত্যুর প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 

এর ভিত্তিতে ৩ মে মাইশার নানা শহিদুল ইসলাম বাদী হয়ে আলমডাঙ্গা থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

পুলিশ সুপার আরএম ফয়জুর রহমান আরও বলেন, মামলার তদন্তকারীরা ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যেয়ে মা পপি খাতুনের কথাবার্তায় সন্দেহ হলে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসেন। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তিনি স্বেচ্ছায় এই হত্যার দায় স্বীকার করেন। তিনি পারিবারিক কারণে নিজেই এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন বলে জানান। 

পপি খাতুনের ব্যক্তিগত জীবন, একাধিক বৈবাহিক জীবন, আবার বিবাহবিচ্ছেদ এবং বিচ্ছেদ-পরবর্তী সময়ের বিভিন্ন তথ্য পাওয়া গেছে, যা এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ভূমিকা রয়েছে। 

প্রেস বিফ্রিংয়ে চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজিম উদ্দীন আল আজাদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আনিসুজ্জামান লালন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত