Ajker Patrika

সাতক্ষীরা মুক্ত দিবসে বধ্যভূমি সংরক্ষণের দাবি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
সাতক্ষীরা মুক্ত দিবসে বধ্যভূমি সংরক্ষণের দাবি বীর মুক্তিযোদ্ধাদের

আজ সোমবার সাতক্ষীরা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা থ্রি নট থ্রি আর এসএলআরের ফাঁকা গুলি ছুড়তে ছুড়তে সাতক্ষীরা শহরে প্রবেশ করেন। ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। সন্তান হারানোর বেদনা ভুলে সেদিন মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় নেমে আসে মুক্তিপাগল আপামর জনতা। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মধ্য দিয়ে সেদিনের সাহসী সন্তানরা বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে এই সাতক্ষীরাকে মুক্ত করেছিল। 

সাতক্ষীরা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মোশাররফ হোসেন মশু বলেন, ১৯৭১ সালের ২ মার্চ সাতক্ষীরা শহরে পাকিস্তান বিরোধী মিছিলে রাজাকাররা গুলি করে শহীদ আব্দুর রাজ্জাককে হত্যা করেন। আর সেখান থেকে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেদের মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া শুরু হয়। সাতক্ষীরা ট্রেজারি থেকে অস্ত্র লুট করা হয়। আর ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে অলংকার ও টাকা-পয়সা লুটের মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের খরচ জোগান মুক্তিযোদ্ধারা।

৮ম ও ৯ম সেক্টরের অধীনে ভারতের বিভিন্ন এলাকায় ট্রেনিং শেষে ২৯ এপ্রিল সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্তে প্রথম সম্মুখ যুদ্ধ শুরু হয়। এ সময় পাক সেনাদের ২ শতাধিক সৈন্য নিহত হন। ১৭ ঘণ্টাব্যাপী এ যুদ্ধে শহীদ হন ৩ জন মুক্তিযোদ্ধা। আরও ২ জন মুক্তিযোদ্ধা আহত হন। এরপর থেমে থেমে চলতে থাকে সাতক্ষীরার বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধাদের গুপ্ত হামলা।

সাবেক কমান্ডার আরও বলেন, ভোমরা, টাউন শ্রীপুর, বৈকারী ও খানজিয়া সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হয় আব্দুর রাজ্জাক, কাজল, খোকন, নাজমুল, নূর মোহাম্মদসহ ৩৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা। লাইটের আলোয় অসুবিধা হওয়ায় ২৯ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা টাইম বোমা দিয়ে শহরের কেন্দ্রবিন্দুতে অবস্থিত পাওয়ার হাউস উড়িয়ে দিয়ে পাক সেনাদের ভীত সন্ত্রস্ত করে ফেলে। মুক্তিযোদ্ধাদের হামলায় টিকতে না পেরে ৬ ডিসেম্বর রাতে পিছু হটতে শুরু করে পাক সেনারা। ৭ ডিসেম্বর জয়ের উন্মাদনায় জ্বলে ওঠে সাতক্ষীরার দামাল ছেলেরা। 

দেশ স্বাধীনের ৫০ বছর পরেও সাতক্ষীরার বধ্যভূমিগুলো রয়ে গেছে অসংরক্ষিত। মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সমস্ত বীর সেনাদের আজীবন স্মরণীয় করে রাখতে সমস্ত বধ্যভূমিগুলো সংস্কার করার দাবি জানিয়েছেন সাতক্ষীরার বীর সন্তানরা।

বীর মুক্তিযোদ্ধা সুভাষ সরকার বলেন, সাতক্ষীরা সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে বধ্যভূমি রয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছরেও বধ্যভূমিটি সংরক্ষণ করা হয়নি। অনেকে সেখানে প্রস্রাব-পায়খানা করে। বধ্যভূমিটি সংরক্ষণের দাবি জানাচ্ছি।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আরও বলেন, জেলা কালেক্টরেট চত্বরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের একটি তালিকা রয়েছে। সেখানে বেশ কয়েকজন রাজাকারের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। নামগুলো কালো কালি দ্বারা মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। অতি দ্রুত নতুন করে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের নাম লিখে নামফলকটি সম্পন্ন করার দাবি জানাচ্ছি। 

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক হ‌ুমায়ূন কবির বলেন, কালেক্টরেট ভবনের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নামফলকে যাদের নাম অন্তর্ভুক্ত আছে তাঁদের অনেকের বিষয়ে আপত্তি রয়েছে। তাই নামফলকটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়নি। তালিকা যাচাইবাছাইয়ের কাজ চলছে। শিগগিরই প্রকৃত তালিকা নামফলকে ওঠানো হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এক ছাতায় সব নাগরিক সেবা

‘তল্লাশির’ জন্য উসকানি দিয়েছে গুলশানের ওই বাসার সাবেক কেয়ারটেকার: প্রেস উইং

প্রধান উপদেষ্টার আরও দুই বিশেষ সহকারী নিয়োগ

তানভীর ইমামের বাড়ি ভেবে গুলশানের একটি বাসায় মধ্যরাতে শতাধিক ব্যক্তির অনুপ্রবেশ, তছনছ

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী হলেন ক্যালিফোর্নিয়ার পরিবহন বিশেষজ্ঞ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত