Ajker Patrika

আইনজীবীর ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার: ৫ জনকে আসামি করে মামলা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
আইনজীবীর ফ্ল্যাট থেকে তরুণীর লাশ উদ্ধার: ৫ জনকে আসামি করে মামলা

কুষ্টিয়ায় আইনজীবীর ফ্ল্যাট থেকে জান্নাতুল ফেরদৌস তুলি (২২) নামের এক তরুণীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে তুলির মা শরিফা বেগম বাদী হয়ে পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় আরও পাঁচ-ছয়জনের বিরুদ্ধে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন।

মামলার আসামিরা হলেন আইনজীবী মাহবুবুর রহমান সুমন (২৯), মোছা. এশা (২২), মো. মজিবর (৫২), মোছা. দোলা (৪৬) ও মো. আনোয়ার (৪৭)।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে তুলির স্বজন ও এলাকাবাসী কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন করে। মানববন্ধনে তুলিকে হত্যা করে লাশ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে দাবি করে অপরাধীদের বিচার চাওয়া হয়। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন জান্নাতুল ফেরদৌস তুলির মা, বোন, স্থানীয় পৌর কাউন্সিলরসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।

এদিকে তুলির লাশের ময়নাতদন্ত গতকাল বুধবার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে সম্পন্ন হয়েছে। আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার এ বিষয়ে বলেন, সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকেরা মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সংগৃহীত আলামতের রাসায়নিক পরীক্ষা ও ডিএনএ নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠিয়েছেন। সেগুলোর রিপোর্ট এলে পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেওয়া যাবে।

এই ঘটনাকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে তুলি তাঁর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটে ক্লাস করার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে তুলির দুলাভাই শাকিল আহমেদকে ফোন করে সুমন জানান, তুলি তাঁর বাড়িতে এসে তাঁকে বিয়ে করার জন্য চাপ সৃষ্টি করছেন।

তাৎক্ষণিক তুলির মা ও দুলাভাই সুমনের বাসায় গিয়ে দেখেন বাসার সামনে রাস্তার ওপর একটি ভ্যানে তুলির নিথর দেহ পড়ে রয়েছে। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় তুলিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অপরাধীদের বিচার দাবিতে মানববন্ধন। ছবি: সংগৃহীতমামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, তুলি ও সুমনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন তুলিকে নিজের ভাড়া বাসায় ডেকে নেন সুমন। সেখানে নিজেদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হলে সুমন অন্যদের সহযোগিতায় তুলিকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে লাশ ঘরের সিলিং ফ্যানে ঝুলিয়ে রাখা হয়। পুলিশ প্রাথমিকভাবে বিষয়টিকে আত্মহত্যা বললেও পরিবার পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করে।

এ ঘটনায় ওই ভবনে থাকা একটি সিসিটিভি ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হয়। এর পর থেকে তুলির মৃত্যু ঘিরে রহস্য দানা বাঁধে। ভিডিও ক্লিপে দেখা গেছে, কয়েকজন মিলে ধরাধরি করে তুলিকে সিঁড়ি দিয়ে নামিয়ে নিয়ে আসছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সৈয়দ আশিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, কুষ্টিয়া জজ কোর্টের আইনজীবী মাহবুবুর রহমান সুমনের সঙ্গে তুলির প্রেমের সম্পর্ক ছিল। তুলি একসময় যে কোচিংয়ে পড়তেন, সুমন সেখানকার শিক্ষক ছিলেন। এক সপ্তাহ আগে সুমন বিয়ে করেছেন। স্ত্রী নিয়ে তিনি শহরের একটি পাঁচতলা ভবনের চতুর্থতলায় বাসা ভাড়া নেন। সেই বাসা থেকে তুলির লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তুলির মা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরের মজমপুর এলাকার মফিজ উদ্দিন লেনের আইনজীবী মাহমুদুল হাসান সুমনের ভাড়া বাসা থেকে জান্নাতুল ফেরদৌস তুলির লাশ উদ্ধার করা হয়। তুলি শহরের মোল্লাতেঘড়িয়ার মোল্লাপাড়ার ওহিদুল ইসলামের মেয়ে। তিনি কুষ্টিয়া নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

ভারতের ভিসা নীতি দুই দেশের মানুষের মধ্যে সম্পর্কে প্রভাব ফেলছে: বলছেন কূটনীতিকেরা

ফাইনালে ভারতের ‘যম’কে খেলানো নিয়ে দোটানায় নিউজিল্যান্ড

বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে ছাত্রদল ও এনসিপি

নিষিদ্ধ হিযবুত তাহ্‌রীরের মিছিল, পুলিশের টিয়ার শেল ও সাউন্ড গ্রেনেডে ছত্রভঙ্গ

ভারত ও যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত