পদ্মায় নিখোঁজ পুলিশ সদস্যের ১ জনের লাশ উদ্ধার

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৯ অক্টোবর ২০২৪, ১৯: ২৮
কুমারখালী পদ্মা নদীতে নিখোঁজ একজনের লাশ উদ্ধার। ছবি: আজকের পত্রিকা

কুষ্টিয়ার কুমারখালী পদ্মা নদীতে নিখোঁজ এএসআই সদরুল আলমের লাশ উদ্ধার হয়েছে। আজ মঙ্গলবার উপজেলার শিলাইদহ ঘাট এলাকার মাঝ নদী থেকে ডুবুরি দল লাশটি উদ্ধার করে। তবে এখনো মুকুল হোসেন নামে আরেকজন নিখোঁজ রয়েছেন।

কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম এই তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

সদরুল আলম পাবনা জেলার আতাইকুলা পীরপুর এলাকার আবদুল ওহাবের ছেলে। তিনি কুমারখালী থানায় এএসআই পদে কর্মরত ছিলেন।

এর আগে সোমবার ভোরে দুর্বৃত্তের হামলা নদীতে ঝাঁপ দেন ওই দুই পুলিশ সদস্য। পরে খুলনা থেকে আসা ডুবুরি দল সন্ধ্যা পর্যন্ত নিখোঁজ দুজনের সন্ধান না পেয়ে অভিযান শেষ করেন।

আজ দ্বিতীয় দিন সকাল থেকে পদ্মা নদীতে অভিযান শুরু করে ডুবুরি দলের সদস্যরা। বেলা ৩টার দিকে উপজেলার শিলাইদহ ঘাট এলাকার মাঝ নদীতে লাশটি ভেসে উঠলে লাশটি উদ্ধার করে নিয়ে আসেন তারা।

এদিকে নদীপাড়ে নিখোঁজ পুলিশ সদস্যদের অপেক্ষায় রয়েছেন দুই পরিবারের স্বজনরা। এ সময় সদরুলের লাশ উদ্ধারের সংবাদে কান্নায় ভেঙে পড়েন ঘটনাস্থলে থাকা তার স্বজনেরা।

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার ভোরে নৌকা করে স্থানীয় ইউপি সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন কুমারখালী থানার ছয়জন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে পদ্মা নদীতে যান। এ সময় অবৈধভাবে জাল ফেলে মাছ শিকার করছিল জেলেরা। পুলিশের নৌকাটি জেলেদের দিকে এগিয়ে গেলে দুর্বৃত্তরা তাদের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে।

হামলায় নৌকায় থাকা কুমারখালী থানার এএসআই সদরুল আলম ও এএসআই মুকুল হোসেন নদীতে ঝাঁপ দেন। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ রয়েছেন। হামলায় আহত হয়েছেন এসআই নজরুল ইসলাম ও কয়া ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছানোয়ার হোসেন ও আনোয়ার হোসেন।

তারা আরও জানান, ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা চললেও পদ্মা নদীতে প্রতিনিয়তই অবৈধভাবে মাছ শিকার করছে জেলেরা। ওই দিন ভোরে স্থানীয় ইউপি সদস্যদের সহযোগিতায় ছয় পুলিশ সদস্য নৌকা নিয়ে পদ্মা নদীতে যায়। এ সময় তারা অভিযানের নামে মাছ লুটে নেওয়ার চেষ্টা করলে ক্ষিপ্ত হয়ে জেলেরা তাদের ওপর হামলা চালায়। তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে জেলা পুলিশ।

পুলিশের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কুমারখালী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে এএসআই রিপন হোসেন, এএসআই সদরুল আলম, এএসআই মিজানুর রহমান, এএসআই মুকুল হোসেন ও কনস্টেবল অমল কুমার ওয়ারেন্ট তামিলের জন্য চারসাদীপুরে যাচ্ছিলেন।

কয়া ইউনিয়নের কালোয়া ঘাট থেকে চরসাদীপুর ইউনিয়নে ভাড়া করা নৌকায় করে যাওয়ার পথে পদ্মা নদী পার হওয়ার সময় মাঝপথে অজ্ঞাতনামা ২ /৩টি নৌকা দেখলে তাদের থামানোর চেষ্টা করে।

এ সময় পুলিশের নৌকায় ধাক্কা দেয়। তাদের কাছে থাকা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পুলিশের ওপর হামলা করে। ফলে পুলিশের নৌকা পানিতে ডুবে যায়। হামলায় পুলিশের এসআই নজরুল ইসলামসহ সবাই আহত হন। তাদের চিৎকার শুনে পাশের আরেক নৌকা গিয়ে চারজন পুলিশকে উদ্ধার করে। দুজন পুলিশ নিখোঁজ হয়।

এ বিষয়ে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এএসআই সদরুল আলমের লাশ উদ্ধার হয়েছে। নিখোঁজ মুকুলের সন্ধানেও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত আছে। এ ঘটনায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে। এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। তবে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত