Ajker Patrika

জামালপুরে পান চাষে বিপর্যয়, লোকসানের আশঙ্কা

জামালপুর প্রতিনিধি
আপডেট : ২৭ আগস্ট ২০২২, ১১: ০৮
জামালপুরে পান চাষে বিপর্যয়, লোকসানের আশঙ্কা

পানে দাগ পড়া, পাতা কোঁকড়ানো, গোঁড়া পচা রোগসহ পোকার আক্রমণে পানবরজের ক্ষতির আশঙ্কায় পড়েছেন জামালপুরের পানচাষিরা। এমনিতেই বৈরী আবহাওয়ার কারণে তাপমাত্রা বেশি এবং বৃষ্টি কম হওয়ায় পানের আকার ছোট হয়েছে। এ বছর পানের বরজ টিকিয়ে রাখতে অতিরিক্ত খরচ গুনতে হচ্ছে বলে জানিয়েছেন চাষিরা।

সরেজমিনে জামালপুর সদর উপজেলার রানাগাছা, ঘোড়াধাপ, বাঁশচরা, নরুন্দি, ইটাইলসহ পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে, সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের কৃষিজমি পান চাষের জন্য বেশি উপযোগী। তাই কৃষকেরা অন্য ফসলের চেয়ে পান চাষে বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। সারা বছর পান বিক্রি করে বেশি লাভ পাওয়ায় চাষিদের আগ্রহ বাড়ছে। একটি পানের বরজ ১৫ থেকে ২০ বছর পর্যন্ত দীর্ঘস্থায়ী হয়। তবে এ বছর পোকার আক্রমণ, প্রচণ্ড দাবদাহ ও বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানের পাতার আকার ছোট হয়েছে। পাতার আকার ছোট হওয়ায় ব্যবসায়ীরা কম দামে পান কিনছেন।

পানচাষি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ফাল্গুন মাসে পানের নতুন বরজে চারা লাগাতে হয়। পানগাছের চারা রোপণের আগে জমি ভালো করে চাষ দিতে হয়। তারপর বাঁশ, পাটকাঠি, শণ, সুতলিসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ঘরের মতো করে পানের বরজ তৈরি করে নিতে হয়। পরে বরজে পানের চারা রোপণ করে তা নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যমে ভালো পান উৎপাদনের জন্য উপযোগী করে তুলতে হয়। জামালপুরের পানের মান ভালো হওয়ায় সারা দেশে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। নিজ জেলার পানের চাহিদা পূরণ করে ঢাকা, শেরপুর, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, নেত্রকোনাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠানো হয়।’

মুসলিম উদ্দিন নামে আরেক চাষি বলেন, ‘দীর্ঘ ছয় মাস পানের বরজ পরিচর্যা করে গাছের গোড়ায় মাটি দেওয়া, সেচ দেওয়া, সার, বিষ ও খৈল ব্যবহার করতে হয়। এক বিঘা জমির বরজে খরচ হয় বছরে প্রায় ৩ থেকে ৪ লাখ লাখ টাকা। একটি পরিপূর্ণ পানবরজ থেকে মাসে চার থেকে পাঁচবার পান পাওয়া যায়। বাজারে বড় আকারের প্রতি বিড়া পান ৫০-৬০ টাকা, মাঝারি আকারের প্রতি বিড়া পান ৩০-৪০ টাকা এবং ছোট আকারের প্রতি বিড়া পান ১০-২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এতে প্রতি মাসে এক বিঘা জমি থেকে ৩০-৪০ হাজার টাকার পান বিক্রি করা যায়।’

মুসলিম উদ্দিন আরও জানান, বছরে পান বিক্রি করে চাষিদের ২ থেকে ৩ লাখ টাকা আয় হয়। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় পানে দাগ পড়া, পাতা কোঁকড়ানো, গোঁড়া পচা রোগসহ নানা ধরনের পোকার আক্রমণে পানবরজের ক্ষতি হয়েছে। এসব রোগ থেকে মুক্তি পেতে চাষিদের অতিরিক্ত খরচ গুনতে হয়েছে। অন্যদিকে, আবহাওয়ার কারণে তাপমাত্রা বেশি এবং বৃষ্টি কম হওয়ায় পানপাতার আকার ছোট হয়েছে। পানপাতার আকার ছোট হওয়ায় কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে এ বছর পানে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে।

এ বিষয়ে জামালপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ জাকিয়া সুলতানা আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘এ বছর সদর উপজেলায় ২০০ হেক্টর জমিতে পানের বরজ করেছেন চাষিরা। এ বছর প্রাকৃতিক দুর্যোগে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তবে তাঁদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ 

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

মুসলিম থেকে খ্রিষ্টান হওয়া ইরানি নারী এখন পানামার জঙ্গলে

বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণা হলেই মেয়াদ শেষ নতুন পরিচালনা কমিটির

ঢাবি ছাত্রীকে যৌন হেনস্তাকারীর পক্ষে নামা ‘তৌহিদী জনতার’ আড়ালে এরা কারা

এনসিপিকে চাঁদা দিচ্ছেন ধনীরা, ক্রাউডফান্ডিং করেও অর্থ সংগ্রহ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

ভ্যানিটি ব্যাগ ধরে টান, সন্তানসহ ছিটকে পড়তেই তরুণীর গালে ছুরিকাঘাত

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত