নেত্রকোনার মদন উপজেলা ছাত্রলীগকে নিষ্ক্রিয় বলায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ সোমবার দুপুরে পৌর সদরের চৌরাস্তার মোড়ে এই ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২০টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে।

জানা গেছে, গত শনিবার মদনে একটি প্রকল্পের অর্থ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক জ্যেষ্ঠ সচিব সাজ্জাদুল হাসান অংশ নেন। নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান তাঁকে নিয়ে আসেন। বিকেলে তাঁরা উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে শান্তি সমাবেশ করেন।

সভা শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম উপজেলা ছাত্রলীগ নিষ্ক্রিয় বলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদককে অবহিত করেন। পরে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সক্রিয় হতে বলেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আহ্বায়ক টিপু ইসলাম সোহাগ গতকাল রোববার রাতে পৌর সদরের চৌরাস্তার মোড়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে দেখে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন।

আজ সোমবার সকালে ছাত্রলীগের আয়োজনে এক প্রতিবাদ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। এরই জের ধরে উত্তেজনার সৃষ্টি হলে সকাল থেকে দুই পক্ষ দেশীয় অস্ত্রসহ পৌর সদরে অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে তাদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এই অবস্থা চলে ঘণ্টাব্যাপী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ ২০টি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। এ সময় মুজিবুর রহমান নামের এক পুলিশ সদস্য আহত হন।

তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে গালমন্দ করার বিষয়টি অস্বীকার করে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক টিপু ইসলাম সোহাগ বলেন, ‘উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মদন উপজেলা ছাত্রলীগ নিষ্ক্রিয় বলে জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের কাছে নালিশ দিয়েছেন। আমরা সকালে জননেত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের প্রশংসার মিছিল শেষে কেন্দুয়া রোডে এলে বিএনপির লোকজন নিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাদের ওপর হামলা করেছে।’

উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান তালুকদার শামীম বলেন, ‘উপজেলা ছাত্রলীগের কর্মকাণ্ড নিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে আমার কথা হয়। এ নিয়ে গতকাল রাতে পৌরসভার চৌরাস্তার মোড়ে ছাত্রলীগের আহ্বায়ক আমাকে গালমন্দ করে। সোমবার সকালে তারা মিছিল শেষে আমার একজন সমর্থককে ধাওয়া দেয়। পরে এলাকাবাসীর সঙ্গে তাদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।’

নেত্রকোনা জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান বলেন, ‘মদন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের সঙ্গে মদন উপজেলা ছাত্রলীগের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে আমার কথা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে পরে আমি ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলি। বিষয়টি নিয়ে আজকের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা আমার জানা নেই।’

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল আলম শাওন বলেন, ‘মদন উপজেলার ছাত্রলীগ খুবই দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। আর মদনে যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে, এটা তাদের ব্যক্তিগত আক্রোশ।’

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাওহীদুর রহমান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ২০টি ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। এ সময় এক পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি মোকাবিলায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।