স্ত্রীর মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালালেন স্বামী, গ্রেপ্তার ১ 

মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ এপ্রিল ২০২২, ১৯: ৩৭

নেত্রকোনার মদনে সাজেদা আক্তার (২৫) নামের এক নারীর মরদেহ হাসপাতালে রেখে স্বামী ও স্বজরা পালিয়ে গেছে। সাজেদা আক্তার উপজেলার মদন ইউনিয়নের বাগদাইর গ্রামের হুমায়ূন মিয়ার স্ত্রী ও কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের বাইগুনি গ্রামের মৃত আব্দুস ছাত্তারের মেয়ে। বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে নেত্রকোনার মদন হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। 

এ ঘটনায় সাজেদার ভাই মো. সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ৪ / ৫ জনকে আসামি করে বৃহস্পতিবার রাতেই মদন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। সে রাতেই পুলিশ আবুল বাশার (৪৫) নামের একজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আবুল বাশার বাগদাইর গ্রামের মৃত আলী হোসেনের ছেলে। 

মামলার অভিযোগপত্র থেকে জানা গেছে, নেত্রকোনার মদন উপজেলার মদন সদর ইউনিয়নের মৃত আলী হোসেনের ছেলে হুমায়ূন। ৯ বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে কেন্দুয়া উপজেলার মাসকা ইউনিয়নের মাইগুনি গ্রামের মৃত আব্দুস ছাত্তারের মেয়ে সাজেদাকে বিয়ে করে সে। দাম্পত্য জীবনে ৬ বছর বয়সী এক ছেলে রয়েছে তাদের। ৩ বছর আগে সাজেদার বাবার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে মালয়েশিয়া যান হুমায়ূন। গত ফেব্রুয়ারি মাসে ছুটি পেয়ে বাড়িতে আসেন। আবার মালয়েশিয়া যাওয়ার জন্য যৌতুক দাবি করলে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহের সৃষ্টি হয়। যৌতুকের জন্য শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করায় বাবার বাড়ি চলে যান সাজেদা। পরে স্বামী হুমায়ূনসহ কয়েকজন সালিস বৈঠক করে তাঁকে নিজ বাড়িতে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় হুমায়ূনের বসত ঘরে গলায় ওড়না পিছিয়ে সাজেদাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন স্বামী হুমায়ূন ও স্বজনেরা। রাতেই স্বামী হুমায়ূন ও তাঁর স্বজনেরা লোকজন সাজেদাকে মদন হাসপাতালে নিয়ে যান। মদন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আসাদ সাজেদাকে মৃত ঘোষণা করেন। মারা যাওয়ার খবর শুনেই স্বামী হুমায়ূন সাজেদার মরদেহ হাসপাতালে রেখে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ আসলে প্রতিবেশী ও স্বজনেরাও সটকে পড়েন। 

এ ঘটনায় নিহত সাজেদা আক্তারের বড় ভাই সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে সাজেদার স্বামী হুমায়ূনকে প্রধান আসামি করে যৌতুকের জন্য মারপিট করে হত্যা ও সহায়তার অপরাধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। এতে ৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪ / ৫ জনকে আসামি করা হয়। পরে হুমায়ূনের বড় ভাই আবুল বাশারকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। 
 
এ ব্যাপারে হুমায়ূনের বড় ভাই আবুল বাশার বলেন, ‘সাজেদা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে খবর শুনে হাসপাতালে আসি। আমি আসলে হুমায়ূন তাঁর শ্বশুর বাড়িতে খবর দেবে বলে চলে যায়। পরে পুলিশ আমাকে আটক করলে সবাই পালিয়ে যায়।’ 

মদন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেন, ‘সাজেদার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নেত্রকোনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সাজেদার ভাই রাতেই মদন থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। এজাহার নামীয় আসামি আবুল বাশারকে রাতেই গ্রেপ্তার করে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।’ 

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

সরকারি চাকরিজীবীরা সম্পদের হিসাব না দিলে যেসব শাস্তির মুখোমুখি হতে পারেন

ভারতের পাল্টা আক্রমণে দিশেহারা অস্ট্রেলিয়া

ঢাকা কলেজে সংঘর্ষকালে বোমা বিস্ফোরণে ছিটকে পড়েন সেনাসদস্য—ভাইরাল ভিডিওটির প্রকৃত ঘটনা

ঐশ্বরিয়ার বিচ্ছেদের খবরে মুখ খুললেন অমিতাভ

লক্ষ্মীপুরে জামায়াত নেতাকে অতিথি করায় মাহফিল বন্ধ করে দেওয়ার অভিযোগ

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত