টিসিবির পণ্য পাননি অর্ধশতাধিক কার্ডধারী, ক্ষোভ প্রকাশ

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ মার্চ ২০২৪, ২১: ১৪

নেত্রকোনার মোহনগঞ্জ পৌরশহরে টিসিবি পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফেরত গেছেন অর্ধশতাধিক কার্ডধারী। বিষয়টি নিয়ে কার্ডধারী লোকজনের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। তবে বিষয়টি নিয়ে টিসিবি ডিলার ও জনপ্রতিনিধিরা একে অন্যকে দোষারোপ করেছেন। 

আজ বৃহস্পতিবার পৌরশহরের ৪ ও ৫ নম্বর এই দুটি ওয়ার্ডে টিসিবি পণ্য বিতরণ করা হয়। 
তবে দুপুর দেড়টার দিকে গিয়ে ৫০-৬০ জন কার্ডধারী পণ্য না পেয়ে খালি হাতে ফেরত গেছেন। তাদের মধ্যে কয়েকজন বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ফোনে জানিয়েছেন। 

ডিলারের দাবি-কাউন্সিলরেরা শুরুতেই কার্ড ছাড়াই তাদের কাছের লোকজনের জন্য পণ্য নিয়ে যায়। তাই এই সংকট। তবে কাউন্সিলদের দাবি-ডিলার অন্য কোথাও পণ্য বিক্রি করে দিয়েছেন। তাই কার্ডধারীরা পণ্য পাচ্ছেন না। 

পৌরশহরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাইলোড়া গ্রামের বাসিন্দা রতন মিয়া বলেন, ‘৫০-৬০ জন কার্ডধারী পণ্য না পেয়ে ফেরত গেয়েছেন। প্রতি কর্ডের বিপরীতে পণ্য আসে, কিন্তু এসব পণ্য তাহলে যায় কোথায়?’ 

একই ওয়ার্ডের মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, জোহরের নামাজের পরপর গিয়ে দেখি পণ্য বিক্রি শেষ। অথচ আমার মতো অনেক কার্ডধারী পণ্য পাননি। সবাই কার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে চিৎকার করছেন। কার্ডের পণ্য অন্য কেউ কীভাবে নেবে। শুধু আজ নয় কয়েক মাস ধরেই পণ্য পাই না। আসার আগেই পণ্য শেষ হয়ে যায়। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ফোনে জানিয়েছি। তিনি বিষয়টি দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। 

৪ নম্বর ওয়ার্ডের দেওথান গ্রামের সুমন চন্দ্র সরকার বলেন, দেড়টার দিকে গিয়ে দেখি পণ্য শেষ। আমার কার্ডের পণ্য গেল কোথায়? এমন হলে কার্ড করে লাভ কি তাহলে। 

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মোহনগঞ্জ পৌরসভার ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে আজ বৃহস্পতিবার টিসিবি পণ্য বিক্রি করা হয়। দুই ওয়ার্ডে কার্ডধারীর সংখ্যা ৯৯৯ জন। ৪৭০ টাকার বিনিময়ে প্রতি কার্ডধারীকে ২ লিটার সয়াবিন তেল, ৫ কেজি চাল ও দুইকেজি মসুর ডাল দেওয়া হয়েছে। এই দুই ওয়ার্ডে পণ্য বিক্রি করেন ডিলার জাকিরুল আলম রাজিব। 

ডিলার জাকিরুল আলম রাজিব বলেন, ‘শুরুতে সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলরেরা তাদের কাছের লোকদের জন্য কার্ড ছাড়াই পণ্য নিয়ে যায়। তখন তারা বলে-সমস্যা নাই অনেক কার্ডধারী শেষের দিকে আসবে না। শেষের দিকে যখন কার্ডধারীরা পণ্য পান না তখন এর দায় কাউন্সিলররা নেন না। 
এই কারণে কার্ডধারীদের পণ্য সংকট হয়। কিন্তু আমরা মূলত দুই ওয়ার্ডের ৯৯৯টি কার্ডের পণ্য সকালেই ট্যাগ অফিসার ও কাউন্সিলরদের সামনে গুনে রেখেছি। সেই হিসেবে কোনো কার্ডধারী পণ্য ছাড়া ফেরত যাওয়ার কথা নয়।’ 

তিনি আরও বলেন, সমস্যা হলো-নতুন কার্ড করার সময় কাউন্সিলরেরা অনেক সময় পুরোনো কার্ড সবগুলো তুলে না নিয়েই নতুন কার্ড ইস্যু করেন। এতে অনেকে পুরোনো কার্ড নিয়ে আসেন পণ্য নিতে। এতে কার্ডধারী বেশি হয়ে যায়। এতে কার্ড বাকি থাকে কিন্তু পণ্য শেষ হয়ে যায়। এখানে ডিলারের কোনো গাফিলতি নেই। কাউন্সিলরা সচেতন হলে এসব সমস্যা এড়ানো সম্ভব। 

এ বিষয়ে ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মানিক তালুকদার বলেন, ‘অনেক কার্ডধারী পণ্য পায়নি। পণ্য না পেয়ে তারা আমার কাছে গিয়েছে। খুবই বিব্রতকর ব্যাপার। এটি খুবই দুঃখজনক। ডিলার মনে হয় পণ্য অন্য কোথাও বিক্রি করে দিয়েছে। না হলে এমনটা হওয়ার কথা নয়।’

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করবেন বলেও জানান তিনি। তবে পুরান কার্ড তুলে না নেওয়া ও নিজেদের লোকদের কার্ড ছাড়া পণ্য নেওয়ার বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন এই কাউন্সিলর। 

৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নুরুল মোমেন বাবু আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘আমার ওয়ার্ডের বেশ কয়েকজন কার্ডধারীও পণ্য পায়নি। ডিলারের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। কেন এমনটা হয়েছে বুঝতে পারছি না।’ 

বিষয়টি অবহিত করলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোসা. হাফিজা জেসমিন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘কয়েকজন ভুক্তভোগী ঘটনাস্থল থেকে ফোন করে বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। কাউন্সিলরসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব। এদিকে ঘটনাটি তদন্ত করে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

টাঙ্গাইলে দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার

পুলিশ ফাঁড়ি দখল করে অফিস বানিয়েছেন সন্ত্রাসী নুরু

ঢাকার রাস্তায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালকদের বিক্ষোভ, জনদুর্ভোগ চরমে

শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ সুরক্ষায় নতুন উদ্যোগ

জাতিকে ফ্রি, ফেয়ার অ্যান্ড ক্রেডিবল নির্বাচন উপহার দিতে চাই: নতুন সিইসি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত