মহিউদ্দিন রানা, ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ)
‘পত্তি (প্রতি) সিজনে খোরাকির বুঝ রাইখ্যাও ৩০ থেকে ৪০ মণ ধান বেচতাম। ধান বেচার টেহা দিয়া সারা বছর সংসারের খরচ পাতিসহ টুকটাক বাজারসদাই করে খাইতাম। কিন্তু এই বছর পানি অইয়া সব ধান খাইয়ালছে। যাও কিছু পাইছি অর্ধেকের বেশি চোচা আর চোচা (চিটা)। অহন বেচা দূরের কথা, খোরাকির ধানও গোলাত নাই।’ আক্ষেপের স্বরে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মাইজবাগ ইউনিয়নের দত্তগ্রাম গ্রামের কৃষক মো. সুরুজ মিয়া।
দুঃখ প্রকাশ করে সুরুজ মিয়া বলেন, ‘যেইডি (ধান) আছে বেইচ্যা সারের দোহানের ঋণ দিয়াললে সারা বছর বাজারসদাই কিইদ্যা করবাম? আর চাউল শেষ অইলে কিইন্ন্যাই কিইদ্যা খাইয়াম!’
একজন সুরুজ মিয়াই নন, এমন অন্তত অর্ধশত প্রান্তিক কৃষকের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পর ঘরে তোলার আগেই দেনা-পাওনা মেটাতে ধান বিক্রি করে দেন অনেক কৃষক। অনেকে আবার গোলায় জমিয়ে রাখেন মৌসুমের শেষ সময়ে ভালো দামের আশায়। কিন্তু চলতি রোপা আমন মৌসুমে ঝোড়ো বাতাস আর অতিবৃষ্টির ফলে ঈশ্বরগঞ্জে অধিকাংশ জমির ধান খেতেই পচে নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে কৃষকের গোলা এখন শূন্য। এ অবস্থায় বাজারে ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও কৃষকের মুখ মলিন।
বড়হিত ইউনিয়নের কাঁঠাল গ্রামের এক দরিদ্র কৃষক আব্দুল হালিম মারা গেছেন সাত বছর আগে। মৃত্যুকালে একমাত্র সম্বল হিসেবে বাড়ির সামনেই ছোট গুজা বিলে ৪০ শতক জমি রেখে যান তিনি। স্ত্রী-সন্তানের একমাত্র ভরসাই ছিল ওই জমির ফসল। কিন্তু এ বছর অতিবৃষ্টিতে টানা ২০ দিনের মতো পানির নিচে তলিয়ে ছিল ওই জমির ধান। যে কারণে একমুঠো ধানও গোলায় ওঠেনি বলে জানান, আব্দুল হালিমের ছেলে উদয়।
পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামের কৃষক বাহারুম মিয়া বলেন, কাঁচামাটিয়া নদী ঘেঁষে প্রায় ১ একর জমিতে ধান লাগানো হয়। এক ফসলি ওই জমিতে ৭০-৮০ মণ ধান হতো। কিন্তু এ বছর একদিনের বৃষ্টিতে ১৫ দিনের মতো পানির নিচে তলিয়ে ছিল। এতে এক একর জমির ধান-খড় দুইটাই পচে নষ্ট হয়।
শুধু একজন বাহারুমই নন, কাঁচামাটিয়া নদীর পাড়ের এমন অসংখ্য কৃষকের ধান-খড় পচে নষ্ট হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য সূত্রমতে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৯ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা ধান রোপণ করেছিলেন। এর মধ্যে ৭১০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের মো. ফারুক বলেন, ‘মোটা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা দর এবং চিকন ধান ১ হাজার ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দর সরবরাহ করছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম অনেক বেশি। তবে এ বছর তিন ভাগের দুই ভাগ ধানও সংগ্রহ হয়নি।’
ঈশ্বরগঞ্জ ধান-পাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবদুল খালেক সওদার বলেন, ’ অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ধান সরবরাহ হচ্ছে। এতে করে দিন দিনই ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ইতিমধ্যে সার, বীজসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোনো কৃষক যদি ঋণ নিতে চায় ব্যাংকে বলা আছে। আমরা তথ্য যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করে দেব।’
‘পত্তি (প্রতি) সিজনে খোরাকির বুঝ রাইখ্যাও ৩০ থেকে ৪০ মণ ধান বেচতাম। ধান বেচার টেহা দিয়া সারা বছর সংসারের খরচ পাতিসহ টুকটাক বাজারসদাই করে খাইতাম। কিন্তু এই বছর পানি অইয়া সব ধান খাইয়ালছে। যাও কিছু পাইছি অর্ধেকের বেশি চোচা আর চোচা (চিটা)। অহন বেচা দূরের কথা, খোরাকির ধানও গোলাত নাই।’ আক্ষেপের স্বরে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জের মাইজবাগ ইউনিয়নের দত্তগ্রাম গ্রামের কৃষক মো. সুরুজ মিয়া।
দুঃখ প্রকাশ করে সুরুজ মিয়া বলেন, ‘যেইডি (ধান) আছে বেইচ্যা সারের দোহানের ঋণ দিয়াললে সারা বছর বাজারসদাই কিইদ্যা করবাম? আর চাউল শেষ অইলে কিইন্ন্যাই কিইদ্যা খাইয়াম!’
একজন সুরুজ মিয়াই নন, এমন অন্তত অর্ধশত প্রান্তিক কৃষকের সঙ্গে কথা হয় আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদকের। তাঁদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ধান কাটা ও মাড়াইয়ের পর ঘরে তোলার আগেই দেনা-পাওনা মেটাতে ধান বিক্রি করে দেন অনেক কৃষক। অনেকে আবার গোলায় জমিয়ে রাখেন মৌসুমের শেষ সময়ে ভালো দামের আশায়। কিন্তু চলতি রোপা আমন মৌসুমে ঝোড়ো বাতাস আর অতিবৃষ্টির ফলে ঈশ্বরগঞ্জে অধিকাংশ জমির ধান খেতেই পচে নষ্ট হয়ে যায়। যে কারণে কৃষকের গোলা এখন শূন্য। এ অবস্থায় বাজারে ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী থাকলেও কৃষকের মুখ মলিন।
বড়হিত ইউনিয়নের কাঁঠাল গ্রামের এক দরিদ্র কৃষক আব্দুল হালিম মারা গেছেন সাত বছর আগে। মৃত্যুকালে একমাত্র সম্বল হিসেবে বাড়ির সামনেই ছোট গুজা বিলে ৪০ শতক জমি রেখে যান তিনি। স্ত্রী-সন্তানের একমাত্র ভরসাই ছিল ওই জমির ফসল। কিন্তু এ বছর অতিবৃষ্টিতে টানা ২০ দিনের মতো পানির নিচে তলিয়ে ছিল ওই জমির ধান। যে কারণে একমুঠো ধানও গোলায় ওঠেনি বলে জানান, আব্দুল হালিমের ছেলে উদয়।
পৌর এলাকার দত্তপাড়া গ্রামের কৃষক বাহারুম মিয়া বলেন, কাঁচামাটিয়া নদী ঘেঁষে প্রায় ১ একর জমিতে ধান লাগানো হয়। এক ফসলি ওই জমিতে ৭০-৮০ মণ ধান হতো। কিন্তু এ বছর একদিনের বৃষ্টিতে ১৫ দিনের মতো পানির নিচে তলিয়ে ছিল। এতে এক একর জমির ধান-খড় দুইটাই পচে নষ্ট হয়।
শুধু একজন বাহারুমই নন, কাঁচামাটিয়া নদীর পাড়ের এমন অসংখ্য কৃষকের ধান-খড় পচে নষ্ট হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কার্যালয়ের দেওয়া তথ্য সূত্রমতে, চলতি রোপা আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৯ হাজার ৩১৫ হেক্টর জমিতে কৃষকেরা ধান রোপণ করেছিলেন। এর মধ্যে ৭১০ হেক্টর জমির ফসল নষ্ট হয়েছে।
ঈশ্বরগঞ্জ পৌর বাজারের মো. ফারুক বলেন, ‘মোটা ধান ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা দর এবং চিকন ধান ১ হাজার ১০০ থেকে ১৫০ টাকা দর সরবরাহ করছি। গত বছরের তুলনায় এ বছর দাম অনেক বেশি। তবে এ বছর তিন ভাগের দুই ভাগ ধানও সংগ্রহ হয়নি।’
ঈশ্বরগঞ্জ ধান-পাট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মো. আবদুল খালেক সওদার বলেন, ’ অন্যান্য বছরের তুলনায় এ বছর ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ ধান সরবরাহ হচ্ছে। এতে করে দিন দিনই ধানের দাম ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নুসরাত জামান বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের ইতিমধ্যে সার, বীজসহ বিভিন্ন প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া কোনো কৃষক যদি ঋণ নিতে চায় ব্যাংকে বলা আছে। আমরা তথ্য যাচাই-বাছাই করে সুপারিশ করে দেব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলায় নীলফামারী-১ আসনের (ডোমার-ডিমলা) সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আফতাব উদ্দিন সরকারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল বুধবার (৫ মার্চ) মধ্যরাতে রংপুর নগরীর সেনপাড়ার গুড় মজিবরের বাড়ি থেকে তাঁকে...
৩৩ মিনিট আগেরাজধানীর গাবতলীতে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটির সামনে শাহী মসজিদ বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক সালেহ উদ্দিন জানান, আগুনে বস্তির প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি পুড়ে গেছে।
১ ঘণ্টা আগেনেতৃত্বের শূন্যতায় ধুঁকছে গাজীপুর সিটি করপোরেশন (জিসিসি)। তার প্রভাব পড়ছে নগরজীবনে। নগরবাসীর অভিযোগ, অপরিকল্পিত নগরায়ণ, দূষণ, যানজট, জলজট, খানাখন্দে ভরা রাস্তাঘাট, মশার উপদ্রব, সড়কবাতির অভাবে রাতে ভুতুড়ে পরিবেশ—এসব এখন নগরবাসীর নিত্যসঙ্গী। কিন্তু এসব দেখার কেউ নেই।
৫ ঘণ্টা আগেদেশীয় পেঁয়াজ, রসুন, আলু ও লবণের ভরা মৌসুম এখন। চলতি মৌসুমে এসব পণ্য উৎপাদন পর্যাপ্ত হওয়ায় এই সময়ে কৃষকের মুখে হাসি ফোটার কথা। কিন্তু লাভ তো দূরে থাক, পণ্যের উৎপাদন খরচও তুলতে না পেরে হতাশ কৃষকেরা।
৭ ঘণ্টা আগে