নেত্রকোনায় পৃথক ঘটনায় পানিতে ডুবে নারী-শিশুসহ ৫ জন নিহত 

নেত্রকোনা প্রতিনিধি
Thumbnail image

নেত্রকোনায় পৃথক ঘটনায় পুকুর ও নদীতে ডুবে চার শিশু ও এক নারীসহ পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। আজ রোববার জেলার পূর্বধলা ও দুর্গাপুরে এসব ঘটনা ঘটে। পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম ও দুর্গাপুর থানার ওসি উত্তম চন্দ্র দেব এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

নিহতরা হলো— পূর্বধলার আগিয়া ইউনিয়নের টিকুরিয়া গ্রামের নওয়াব আলীর মেয়ে ও একই উপজেলার বিশকাকুনী গ্রামের মফিজুল ইসলামের স্ত্রী সালমা আক্তার (২১)। একই উপজেলার ধলামূলগাঁও ইউনিয়নের পাঁচমারকেন্ডা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মো. নোমান মিয়া (৮), নেত্রকোনা সদর উপজেলার সাতপাই উল্লাবাড়ি এলাকার মো. আল মামুনের ছেলে মো. তাসকিন মিয়া (৭)। নোমান আর তাসকিন একে অপরের খালাতো ভাই। এ ছাড়া ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার কুল্লাতলী গ্রামের জহিরুল ইসলামের ছেলে জাহাঙ্গীর (৭) এবং দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাগড়া ইউনিয়নের শশারপাড় গ্রামের ইমরান মিয়ার মেয়ে আফিয়া (২)। 

স্থানীয়দের বরাতে পূর্বধলা থানার ওসি রাশেদুল ইসলাম জানান, তাসকিন গতকাল শনিবার বিকেলে মা-বাবার সঙ্গে পাঁচমারগেন্ডা গ্রামে নানাবাড়ি বেড়াতে যায়। পরে তাসকিন তার খালাতো ভাই নোমানকে নিয়ে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়। বেশ কিছু সময় পেরিয়ে গেলেও তাঁরা বাড়িতে ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। আজ রোববার সকাল সোয়া ১০টার দিকে বাড়ির পাশে কংস নদের শাখা দেইড়াগাঙয়ে তাঁদের ভাসমান মরদেহ দেখতে পান বাড়ির লোকজন। পরে তাসকিন ও নোমানের মরদেহ উদ্ধার করেন তাঁরা। 

তিনি আরও জানান, গৃহবধূ সালমা আক্তার মৃগী রোগে আক্রান্ত ছিলেন। সকালে বাড়ির সামনে পুকুরে ধোঁয়ার সময় পানিতে পড়ে তলিয়ে যান। বাড়ির লোকজন খোঁজাখুঁজি করে পৌনে ১১টার দিকে পুকুর থেকে উদ্ধার করে পূর্বধলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক সালমাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় আবেদনের প্রেক্ষিতে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষে দুই শিশু ও গৃহবধূ সালমার লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান ওসি রাশেদুল ইসলাম। 

এদিকে দুর্গাপুর পৌরশহরের তেরী বাজার এলাকায় দাদির বাড়িতে বেড়াতে এসে সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে সোমেশ্বরী নদীতে গোসল করতে বের হয় জাহাঙ্গীর। সকাল ১০টার দিকে সোমেশ্বরী নদীতে গোসল করার সময় জাহাঙ্গীর পানির নিচে তলিয়ে যায়। সঙ্গে থাকা অন্য দুই শিশু বাড়ি ফিরে জাহাঙ্গীর নদীতে ডুবে যাওয়ার বিষয়টি জানালে পরিবারের লোকজন নদী থেকে জাহাঙ্গীরকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। 

এ ছাড়া রোববার দুপুরে দুর্গাপুরের কুল্লাগড়া ইউনিয়নের শশারপাড় গ্রামে বাড়ির উঠানে অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলাধুলা করছিল আফিয়া। ঘরে কাজে ব্যস্ত তাঁর ছিল বাবা-মা। হঠাৎ আফিয়াকে উঠানে না পেয়ে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন তাঁরা। একপর্যায়ে বসতবাড়ির পাশের পুকুর থেকে আফিয়াকে নিথর অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। 

দুর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উত্তম চন্দ্র দেব জানান, সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর পরিবারের আবেদনে শিশু আফিয়ার মরদেহ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর জাহাঙ্গীরের বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়েছে। তাঁরা আসার পর তাদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত