Ajker Patrika

পরোয়ানায় বছর পার, সাজাপ্রাপ্তের জামিন

  • চেক ডিজঅনারের মামলায় একজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়
  • এক বছরেও থানায় যায়নি তাঁর গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
এম কে দোলন বিশ্বাস ইসলামপুর (জামালপুর)
খোকন সরকার।
খোকন সরকার।

জামালপুর আদালতে চেক ডিজঅনারের একটি মামলায় খোকন সরকার (৩২) নামের এক ব্যক্তিকে ৬ মাসের কারাদণ্ডের রায় দিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আদেশ দেন সংশ্লিষ্ট বিচারক। রায় ঘোষণার এক বছর অতিবাহিত হলেও দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পৌঁছায়নি সংশ্লিষ্ট থানায়। এদিকে চেক ডিজঅনারের অন্য তিনটি মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় খোকনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলেও পরক্ষণেই জামিনে মুক্ত হন তিনি। দণ্ডপ্রাপ্ত খোকন সরকার জামালপুরের ইসলামপুর পৌর শহরের ভেঙ্গুড়া গ্রামের সোনা মিয়ার ছেলে।

ইসলামপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, খোকন সরকারের বিরুদ্ধে চেক ডিজঅনারের অভিযোগে এনআই অ্যাক্টের ধরায় আদালতে তিনটি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকায় ৭ মার্চ রাতে নারায়ণগঞ্জ থেকে খোকনকে গ্রেপ্তার করে ইসলামপুর থানার পুলিশ। পরদিন শনিবার দুপুরে পুলিশ তাঁকে জামালপুর আদালতে সোপর্দ করলে বিকেলে তিন মামলাতেই খোকনকে জামিন দেন সংশ্লিষ্ট বিচারক।

আদালত সূত্রে জানা গেছে, চেক ডিজঅনারের অভিযোগে ইসলামপুর পৌর শহরের বাসিন্দা সৈয়দ মাসুদুর রহমান রাজা বাদী হয়ে খোকনকে আসামি করে ২০২৩ সালের ৪ জুন জামালপুরের ইসলামপুর সিআর আমলি আদালতে মামলা করেন। মামলার নম্বর ১৯২। শুনানি শেষে আসামি খোকনকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য সমনের আদেশ দেন বিচারক। ওই বছরের ৬ জুলাই আদালত থেকে জামিন নেন খোকন। একই দিন বিচারের জন্য মামলটি জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পাঠান সংশ্লিষ্ট বিচারক। ২১ আগস্ট বিচার নিষ্পত্তির জন্য যুগ্ম দ্বিতীয় জেলা জজ আদালতে বিচারক মামলাটি বদলির আদেশ দেন। ২০২৪ সালের ১৮ জানুয়ারি আদালতে হাজির না হওয়ায় খোকনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন বিচারক। এরপর খোকন আত্মগোপনে চলে যান। ২০২৪ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক খোকনের অনুপস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে দায়রা নম্বর ৭২৯/২০২৩ মোকদ্দমায় ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডসহ ৫ লাখ টাকা জারিমানা করে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আদেশ দেন। ওই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এক বছরেও থানায় পৌঁছায়নি।

মামলার বাদী মাসুদুর রহমান রাজা বলেন, ‘আসামি খোকনকে ইসলামপুর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করার খবর পেয়ে থানায় গিয়ে জানতে পারি তাঁর বিরুদ্ধে ৬ মাসের সাজাপ্রাপ্ত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এক বছরেও থানায় পাঠায়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। পরে সংশ্লিষ্ট পেশকারের মাধ্যমে সাজাপ্রাপ্ত পরোয়ানা কারাগারে পাঠাই। পরে জানতে পারি, কারাগারে না গিয়েই খোকন গত শনিবার জামিনে বের হয়েছেন।’

জানতে চাইলে জামালপুর যুগ্ম জেলা জজ দ্বিতীয় আদালতের পেশকার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এই আদালতে কিছুদিন আগে যোগদান করেছি। যখন মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়েছে, তখন পেশকার ছিলেন অন্য একজন। সে কারণেই সাজাপ্রাপ্ত পরোয়ানা দীর্ঘদিনেও থানায় না পৌঁছার বিষয়টি আমি জানি না।’

ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল্লাহ সাইফ বলেন, ‘খোকনের বিরুদ্ধে তিনটি মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে সাজাপ্রাপ্ত কোনো পরোয়ানা থানায় আসেনি।’

জামালপুর চিফ জুডিশিয়াল আদালতের হাজতখানার দায়িত্বে থাকা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. সানাদুল হাসান বলেন, ‘গত শনিবার দুপুরে এনআই অ্যাক্টের তিনটি মামলায় পরোয়ানাপ্রাপ্ত খোকন সরকার নামের এক আসামিকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। বিকেলে আদালতের জামিনে তিনি বের হয়ে যান।’

Google News Icon

সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিড ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

পাঠকের আগ্রহ

সম্পর্কিত